পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানিমুখী খাত চামড়া শিল্প। অথচ তিন বছরের ব্যবধানে চামড়া রফতানি কমেছে অর্ধেকের বেশি। আর গেল জানুয়ারি থেকে কমতে শুরু করেছে চামড়াজাত পণ্যের রফতানি। এর কারণ হিসেবে পরিবেশবান্ধব উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে না পারাকেই দায়ী করছেন শিল্প মালিকরা। সেই সঙ্গে এই জটিলতা দূর করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের হস্তক্ষেপ চান তারা। অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, দ্রæত সমস্যার সমাধান না হলে বড় ধরনের সংকটের মুখে পড়বে চামড়া শিল্প।
বড় বড় ড্রামে তীব্র এসিড-ক্ষারসহ বিপজ্জনক নানা রাসায়নিক মিশিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে কাঁচা চামড়া। যার অল্প পরিমাণ মেটাবে অভ্যন্তরীণ চাহিদা, বেশিরভাগই হবে রফতানি।
যদিও পরিসংখ্যান বলছে, ভালো নেই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই রফতানিখাত। গেল অর্থবছরে এই শিল্পের মোট রফতানি কমেছে আগের বছরের চেয়ে ১২ শতাংশ; তিন বছরের ব্যবধানে প্রায় ১১৭ শতাংশ কমেছে প্রক্রিয়াজাত চামড়ার রফতানি। আর, গেল জানুয়ারি থেকে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির ফাঁদে আটকে গেছে চামড়াজাত পণ্যের রফতানিও।
ট্যানারি মালিকরা বলছেন, দিন দিন পিছিয়ে পড়ার কারণ, উদ্যোগ নেয়ার পর দেড় দশকেও চামড়া শিল্পে পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারেনি শিল্প মন্ত্রণালয়। এর সঙ্গে ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সাম্প্রতিক চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ।
অ্যাপেক্স ট্যানারি লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক এম এ মাজেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও ফ্রান্সসহ অনেক দেশ আমাদের থেকে চামড়া আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো আমাদের সিটিপি এখনও চালু হয়নি।
এমবি ট্যানারি লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মদ রিন্টু বলেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধের কারণেও আমরা পিছিয়ে পড়ছি। অনেক সময় অর্ডার দিয়েও ট্যাক্সের দোহাই দিয়ে অর্ডার বাতিল করছে। এ অবস্থায় সাভারে নতুন শিল্পনগরী, দ্রুত শতভাগ কার্যকর করার দাবি ট্যানারি মালিকদের সংগঠন-বিটিএ’র।
বিটিএ’র সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, রাস্তা-ঘাট ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা গেছে খুব দ্রুতই এ অবস্থার উত্তরণ সম্ভব। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একমত অর্থনীতিবিদরা। চামড়া শিল্পের সুরক্ষায়, পোশাক শিল্পের মতো শ্রমিক-মালিক ও সরকার, এই তিন পক্ষকে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান তাদের।
অর্থনীতিবিদ তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, এভাবে চলতে থাকলে আমাদের এই খাত মুখ থুবড়ে পড়বে। এই খাতকে গুরুত্ব দিতে হবে। এজন্য দরকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সদিচ্ছা। সেই সঙ্গে এই শিল্পে বিনিয়োগ বাড়াতে সাভারে বরাদ্দ পাওয়া প্লটের মালিকানা, ট্যানারি মালিকদের দ্রুত বুঝিয়ে দেয়ার পরামর্শ তাদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।