পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে নতুন যুক্ত হওয়া বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’ গতকাল বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা পৌনে একটায় হযরত শাহজালাল (রহঃ) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘আকাশবীণা’র উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি। এর কয়েকঘন্টা পরেই বিমানটি প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট নিয়ে ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে আকাশে উড়েছে।
স্বপ্নের আকাশবীণা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চাই। আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে যে উন্নয়ন করা যায়, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। তিনি ড্রিমলাইনারের ফ্লাইট পরিচালনার সময় নিরাপত্তার বিষয়টিতে জোর দেওয়ার আহ্বান জানান।
ড্রিমলাইনার আকাশবীণা যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিমান বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫টিতে। প্রধানমন্ত্রীর পছন্দে এর নামকরণ করা হয় আকাশবীণা। এই ড্রিমলাইনার দিয়ে প্রাথমিকভাবে ঢাকা-সিঙ্গাপুর ও ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। আকাশবীণায় আসন সংখ্যা ২৭১টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাস ২৪টি এবং ২৪৭টি ইকোনমিক ক্লাস। বিজনেস ক্লাসে ২৪টি আসন ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড হওয়ায় যাত্রীরা আরামদায়কভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন। দু’পাশের প্রত্যেক আসনের পাশে রয়েছে বড় আকারের জানালা। একইসঙ্গে জানালার বোতাম টিপে আলো নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। জানালা ছাড়াও কেবিনেও রয়েছে মুড লাইট সিস্টেম। প্রতিটি আসনের সামনে প্যানাসনিকের এলইডি এস-মনিটর রয়েছে। যাত্রা পথে সরাসরি ৯টি টিভি চ্যানেল দেখা যাবে। টানা ১৬ ঘণ্টা উড়তে সক্ষম এই ড্রিমলাইনার চালাতে অন্যান্য বিমানের তুলনায় ২০ শতাংশ কম জ্বালানি লাগে। কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল দিয়ে তৈরি হওয়ায় এই বিমান ওজনে হালকা। এটি ঘণ্টায় ৬৫০ মাইল বেগে উড়তে সক্ষম। বিমানটির ইঞ্জিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জেনারেল ইলেকট্রিক (জিই)। বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হবে ইলেকট্রিক ফ্লাইট সিস্টেমে। ভূমি থেকে বিমানটির উচ্চতা ৫৬ ফুট। দু’টি পাখার আয়তন ১৯৭ ফুট। এর ককপিট থেকে টেল (লেজ) পর্যন্ত ২৩ লাখ যন্ত্রাংশ রয়েছে। একই সঙ্গে ড্রিমলাইনারের ইন-ফ্লাইট এন্টারটেইনমেন্ট সিস্টেমে (আইএফই) থাকবে ১শ’টির বেশি ক্লাসিক থেকে ব্লক ব্লাষ্টার চলচ্চিত্র। অত্যাধুনিক বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারে যাত্রীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য রয়েছে ওয়াইফাই সুবিধা। এছাড়া আকাশে উড্ডয়নের সময় ফোন কল করতে পারবেন যাত্রীরা।
গতকাল দুপুরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল ইনামুল বারী (অব.) জানান, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর ড্রিমলাইনারের প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের হ্যাঙ্গারের সামনে পার্কিং করা হয়েছে আকাশ বীণা। বিমানের প্রকৌশল বিভাগের কর্মীরা ইঞ্জিন থেকে শুরু করে এর প্রতিটি যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করছেন।
এদিকে বিমান সূত্র জানায়, রাতেই মালয়েশিয়ার পথে উড়াল দেয় প্রথম ফ্লাইট। আকাশবীণা নিয়ে সংশ্লিষ্টসহ সকলের মধ্যে বিরাজ করে নুতুন স্বপ্ন।
গত ১৯ আগস্ট বিকেলে ঢাকায় এসে পৌঁছায় আমেরিকার বোয়িং কোম্পানির তৈরি বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল পেনফিল্ড থেকে যাত্রাবিরতি ছাড়াই টানা সাড়ে ১৪ ঘণ্টা উড়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বোয়িংয়ের কাছ থেকে আরও তিনটি ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানবহরে যোগ হতে যাচ্ছে। দ্বিতীয়টি আসবে আগামী নভেম্বরে। অন্য দুটি ড্রিমলাইনার আসবে ২০১৯ সালের শেষ দিকে।
গত বুধবার দুপুরে ড্রিমলাইনারের প্রথম পরীক্ষামূলক ফ্লাইট ঢাকা থেকে কলকাতায় যায়। বিমানের সিনিয়র পাইলট ক্যাপ্টেন ফজল আহমেদ ও বোয়িংয়ের ক্যাপ্টেন রিচার্ড এম ডেনটন ফ্লাইটটি পরিচালনা করেন। এ ফ্লাইটে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কর্মকর্তাসহ ২৯ জন আরোহী ছিলেন। ওই দিন বিকেল পৌনে পাঁচটায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে আসে ড্রিমলাইনার।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, আপাতত ড্রিমলাইনার দিয়ে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। কর ও চার্জ ছাড়া ঢাকা-সিঙ্গাপুর-ঢাকা রুটে ইকোনমি ক্লাসের ভাড়া ২শ’ মার্কিন ডলার। এ ছাড়া ঢাকা-কুয়ালালামপুর-ঢাকা রুটে ইকোনমি ক্লাসের ভাড়া ২৯০ মার্কিন ডলার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।