পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, সিলেট ইলেক্ট্রনিক্স সিটি হবে বাংলাদেশের সিলিকন ভ্যালী। এটা এখন শুধু স্বপ্ন নয়- এটা বাস্তবতা। প্রাকৃতিক পরিবেশ, নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য এবং বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠতম আইটি পার্ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে সিলেট ইলেক্ট্রনিক্স সিটিকে। তিনি অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে সিলেট-ঢাকা রুটে বিমানের সকাল-সন্ধ্যা ডমেস্টিক ফ্লাইট চালু এবং নগরীতে একটি তথ্যকেন্দ্র স্থাপনের আশ্বাস দেন।
গতকাল (০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮) রবিবার সকালে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র যৌথ উদ্যোগে “হাই-টেক পার্ক, সিলেট (সিলেট ইলেক্ট্রনিক্স সিটি)তে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী একথা বলেন।
সিলেট চেম্বারের কনফারেন্স হলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ এর সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান, বাংলাশে হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম, এনডিসি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
প্রধান অতিথি বলেন, আমরা অনেক পিছিয়ে থাকলেও ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভোলিউশনের ডাক আমরা দিতে পেরেছি, আমরা এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছাবো বিশ্বের অন্য কোন দেশ আমাদের ছুঁতে পারবেনা। তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী অসাধারণভাবে প্রকৃতিপ্রেমিক। বিশেষ করে পানির প্রতি তার দূর্বলতা বেশী। সে বিষয়টি মাথায় রেখেই দেশের উত্তর সীমান্তের অত্যন্ত মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে তোলা হচ্ছে সিলেট ইলেক্ট্রনিক্স সিটি। যেখানে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ হবে নিরাপদ এবং বাজার সম্প্রসারণ হবে দ্রুতগতিতে। বিশেষ করে পাশ্ববর্তী দেশের সেভেন সিস্টার খ্যাত রাজ্যগুলোতে বাজার সম্প্রসারণের অপার সম্ভবনা রয়েছে। এছাড়া সরকারও সবধরণের সহযোগিতা দিয়ে বিনিয়োগকারীদের বাজার সৃষ্টিতে সহায়তা করবে। তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল সিটি হবে সিলেট। ডিজিটাল সিলেট প্রকল্প নামের একটি প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। সিলেটের মেয়র নগরীতে কিছুটা ডিজিটাল ছোঁয়া দিয়েছেন। আমরা পুরোপুরি ডিজিটাল করে সিলেটকে নিরাপদ নগরী হিসেবে রূপান্তর করবো। ডিজিটাল স্বাদ সবার আগে পাবেন সিলেট নগরবাসী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান বলেন, হাই-টেক পার্ক ও সিলেট ইলেক্ট্রনিক্স সিটি কোন বিচ্ছিন্ন উদ্যোগ নয়, বরং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সুখী সমৃদ্ধ মধ্য আয়ের দেশ গঠন এবং রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতারই প্রতিফলন। তিনি ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভোলিউশনে সিলেট সম্পৃক্ত হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিভিন্ন প্রকল্প নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। নির্দিষ্ট সময়ে যাতে প্রকল্প শেষ হয় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সচেতন থাকতে হবে। তিনি বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে সিলেট-ঢাকা রুটে বিমানের সকাল-সন্ধ্যা ডমেস্টিক ফ্লাইট চালু এবং ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ২১০০ সাল ডেল্টা প্ল্যান গৃহীত হচ্ছে। যার মাধ্যমে ভাটি এলাকাগুলো অনেক উপকৃত হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাশে হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম বলেন, সিলেট ইলেক্ট্রনিক্স সিটির প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন এবং বিনিয়োগকারীদের সবধরণের সুযোগ সুবিধা দিতে সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। বিনিয়োগকারীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন সেজন্য এক পয়েন্ট থেকেই তাদের সবধরণের সেবা প্রদান করা হবে। এছাড়া সিলেট ইলেক্ট্রনিক্স সিটির তথ্য জানার জন্য বিভাগীয় সদরে একটি তথ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ইমরান আহমদ এমপি বলেন, সিলেট ইলেক্ট্রনিক্স সিটি হবে বিনিয়োগকারীদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশের সমৃদ্ধি অর্জনে এটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে আগামীতে লন্ডনে একটি মতবিনিময় করা হবে বলে জানান। ইমরান আহমদ বলেন, বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে যে অগ্রগতি অর্জন করছে এসব কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়কের ৪৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারীর মধ্যে এই সড়ক এবং সিলেট-জাফলং সড়কের কাজ সম্পন্ন হলে যোগাযোগের আর কোন দূর্ভোগ থাকবেনা।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, সিলেট ইলেক্ট্রনিক্স সিটি দেশের জন্য এক বিশাল সম্ভাবনাময় স্থান। এজন্য তিনি আইটি সেক্টরের বিনিয়োগকারীদের জন্য আলাদা সেল, বিমান, রেল ও সড়ক যোগাযোগ উন্নতকরণ এবং বিনিয়োগকারীদের অন এরাইভ্যাল ভিসার মেয়াদ ৩০ দিন থেকে বাড়িয়ে ৯০ দিন করার প্রস্তাব দেন। বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে তিনি সিলেট চেম্বারে একটি আইটি উইং স্থাপন, সিলেট-ঢাকা রুটে বিমানের সকাল-সন্ধ্যা ডমেস্টিক ফ্লাইট চালু, চেম্বারের জন্য প্লট বরাদ্দ, হলিডে ট্যাক্স এবং বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে একটি রোড-শো আয়োজনের আহবান জানান।
সেমিনারে প্রকল্পের অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন হাই-টেক পার্ক, সিলেট প্রকল্পের প্রধান পরামর্শক স্থপতি ইকবাল হাবিব এবং প্রকল্প সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্যাদি উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক ব্যারিস্টার মোঃ গোলাম সরওয়ার ভূঁইয়া। সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশ সিলেট রেঞ্জ এর ডিআইজি মোঃ কামরুল আহসান, বিপিএম ও সিলেটের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার মৃণাল কান্তি দেব।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক দেবজিৎ সিংহ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও উন্নয়ন) আবু সাফায়াৎ মুহাম্মদ শাহেদুল ইসলাম, বাংলাদেশের ব্যাংক, সিলেটের মহাব্যবস্থাপক জীবন কৃষ্ণ রায়, কাস্টম্স, এক্সাইজ এন্ড ভ্যাট কমিশনারেট সিলেট এর যুগ্ম কমিশনার মিনহাজ উদ্দিন, মদন মোহন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ্, এফবিসিসিআই এর পরিচালক সালাহ্ উদ্দিন আলী আহমদ, শাবিপ্রবির প্রফেসর মোঃ সাহিদুর রহমান, ড. মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হায়দার, সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি মাসুদ আহমদ চৌধুরী, সহ সভাপতি মোঃ এমদাদ হোসেন, পরিচালক মোঃ হিজকিল গুলজার, পিন্টু চক্রবর্তী, মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান (ভূট্টো), মুকির হোসেন চৌধুরী, আব্দুর রহমান, চন্দন সাহা, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, মোঃ আব্দুর রহমান (জামিল), হুমায়ুন আহমেদ, আলহাজ্ব মোঃ আতিক হোসেন, মুজিবুর রহমান মিন্টু প্রমুখ। সেমিনারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, আইটি উদ্যোক্তা সহ বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত ছিলেন। সিলেট ইলেক্ট্রনিক্স সিটিতে প্লট বরাদ্দ চেয়ে ৫০ জন ব্যবসায়ী আবেদন করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।