পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, কোনো রকম বিশৃঙ্খলা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। শিক্ষার্থীদের তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে এবং কোনো ভাবেই কোনো ধরনের উশৃঙ্খলা গ্রহণযোগ্য হবে না। বিশ্ববিদালয়ের নিয়ম মেনেই সকলকে চলতে হবে।
গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হলের ৭মার্চ ভবনের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের স্মরণে ঢাবি’র এই ছাত্রী হলের ভবনটির নামকরণ করা হয়েছে ৭মার্চ ভবন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের বিষয়ে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি উন্নত হতে পারে না। সে লক্ষ্যই আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে। পরিকল্পিতভাবে দেশকে এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। ক্ষমতা ভোগের জন্য নয়, জনগণের প্রতি দায়িত্ব পালন করছে সরকার।
কোটা সংস্কার এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ভাংচুরের প্রেক্ষাপট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উচ্ছৃঙ্খলতা কখনও গ্রহণযোগ্য না। কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে গত এপ্রিল মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাড়ি ভাংচুর হয়েছিল। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, এতে জড়িতদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। গত অগাস্ট মাসে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে যারা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি।
গতকাল শনিবারের অনুষ্ঠানে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষায় অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে কম খরচের কথা শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শিক্ষায় আমরা যা খরচ করি, এটাকে কখনও আমরা খরচ হিসাবে মনে করি না। আমি মনে করি, এটা আমরা বিনিয়োগ করছি, যা আমাদের দেশ গঠনে কাজে লাগবে, আমাদের দেশের মানুষ উপযুক্ত হয়ে গড়ে উঠবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অটোনমি আছে। সাধারণ ক্ষেত্রে বলা যায় যে, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের উপার্জনে চলবে। আমাদের এখানে যারা শিক্ষার্থী, তাদের ভাবা উচিৎ যে পৃথিবীর মধ্যে মনে হয়, সব থেকে কম খরচে উচ্চশিক্ষা বাংলাদেশে দেওয়া হয়ে থাকে। শত ভাগ খরচ কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে, এটা কিন্তু পৃথিবীর কোনো দেশে আছে বলে আমি জানি না। আমরা অনেক আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তো খোঁজ খবর রাখি। কিন্তু, আমরা বাংলাদেশে সেটা করি না। এটার মর্যাদাটাও তাদেরকে দিতে হবে।
তিনি বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বায়ত্বশাসিত। এসব প্রতিষ্ঠান নিজেদের উপার্জনে চলবে তারও বিধান রয়েছে। কিন্তু আমাদের এখানকার যারা শিক্ষার্থী তাদের এটা ভাবা উচিত যে, পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে কম খরচে উচ্চশিক্ষা বাংলাদেশে দেয়া হয়ে থাকে। প্রায় শতভাগ খরচই কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হচ্ছে। এটা পৃথিবীর কোনো দেশে রয়েছে বলে আমার জানা নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালে জাতির জন্মশতবার্ষিকী আমরা উদযাপন করব এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। কাজেই এই সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী খুব অল্প সময়ের ব্যবধানেই কিন্তু আমরা উদযাপন করতে যাচ্ছি। তিনি বলেন, কাজেই এর মর্যাদাও শিক্ষার্থীদের দিতে হবে এবং বিশৃঙ্খলা কখনও গ্রহণযোগ্য নয়। সবাইকে একটা নিয়ম মেনে চলতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে হলে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়ম মেনে সেভাবেই আচরণ করতে হবে। এটাই জাতি আশা করে। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই সব দিক থেকে আমাদের ছেলে- মেয়েদের জীবনমান উন্নত হোক, তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাক। প্রজন্মের পর প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
শিক্ষকদেরও শিক্ষাদানের বিষয়ে আরও যত্মবান হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার ধারণের আহ্বান জানান শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থী যারা, তাদেরকেও উপযুক্তভাবে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। সেই শিক্ষাটা শুধু কেতাবী শিক্ষা না, জীবনমান উন্নয়নের ক্ষেত্রে সর্বক্ষেত্রে শিক্ষা নিতে হবে। রোকেয়া হলের নতুন ভবনে এক হাজার ছাত্রীর আবাসনের ব্যবস্থা হবে। প্রধানমন্ত্রী ভবনটি উদ্বোধন করে এই ভবনে স্থাপিত ‘৭ মার্চ জাদুঘর’ ঘুরে দেখেন।
৭ মার্চ জাদুঘর ঘুরে পরিদর্শন বইয়ে তিনি লিখেছেন, রোকেয়া হলে ৭ই মার্চ ভবনে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের উপর যে জাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে, তা পরিদর্শন করে আমি আনন্দিত। কারণ ইতিহাসকে স্মরণ করলে ভবিষ্যতকে সুন্দর ভাবে গড়ে তোলা যায়। এই ভবন ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছাত্রীদের যত্মবান হওয়ার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ভবনটা যেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে, অবশ্যই তাদের এই নজরটা দিতে হবে। আমাদের বাঙালিদের একটা বদভ্যাস হচ্ছে খেয়ে টেয়ে নিয়ে টাস করে ছুড়ে ফেলে দেওয়া। এই বদভ্যাসগুলো পরিহার করতে হবে। আজকে বিদ্যুৎ আছে বলে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করা, এটা যাতে না হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী থাকাকালে শেখ হাসিনা রোকেয়া হলের ছাত্রী ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় জাতির পিতার বিশ্ববিদ্যালয়। আমার ভাই শেখ কামাল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। এভাবে আমাদের পরিবারের প্রায় সকল সদস্যই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। শেখ ফজলুল হক মনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। শেখ সেলিম ( শেখ ফজলুল করিম সেলিম) সেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আমরা সবাই প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিলাম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য নাসরিন আহমেদ ও মোহাম্মদ সামাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ এবং রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ জিনাত হুদা বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।