পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শত গরমেও খাদ্য রসিক বাঙালী রসনা বিলাসের ভাদ্র মাস কি ধনী কি দরিদ্র, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে শরতের স্নিগ্ধ সন্ধ্যায় কিম্বা শিউলি ঝরা। আলোয় ঝলমল এলাকা, জলতরঙ্গে বাহারি আলোর বিচ্ছুরণ। কোলাহল ভুলে ক্ষণিক নির্জনতা, কিছুটা আনন্দমুখর আড্ডা। রাজধানীর মানুষ গুলোর অফুরন্ত প্রাণশক্তি। নাগরিক জীবনে কত রকমের দুর্ভোগ। নগরবাসীর কাছে সবই যেন তুচ্ছ। সেই ঢাকার চিরচেনা কিছু দুর্ভোগের চিত্র পরির্বতন আনতে যাচ্ছে সরকার। এ রকম পরিবেশের জন্য নগরবাসীর অনেকের কাছে পরিচিত হাতিরঝিল লেক। যানজট আর ধূলিদূষণের এই শহরে অনেকেই হাতিরঝিল লেকে এসে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। সেই পথ ধরেই গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকার লেকদূষণ, দখল রোধে ও লেকের সৌন্দর্য রক্ষায় এগিয়ে চলছে গুলশান- বনানী- বারিধারা লের্ক আরেক হাতিরঝিল প্রকল্পের কাজ। এ প্রকল্পে বিদেশীরা লেকে এসে পরিবেশ উপভোগ করতে পারে জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। দেড় যুগের আগে রাজধানীর গুলশান লেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জমি অধিগ্রহনের জটিলতার কারণে এখনো প্রকল্পের কাজ শেষ হচ্ছে না বলে রাজউক সূত্রে জানা গেছে। রাজধানীর গুলশান- বনানী- বারিধারা লের্ক উন্নয়ন প্রকল্পের নতুন কাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে উদ্ধোধন করবেন বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আমলে ১০০ কোটি টাকার প্রকল্পের পরিকল্পনা নেয়া হয়। ওই বছরের ১৯ জুন তাঁর কার্যালয়ে এক সভায় লেক বিষয়ক বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ ও সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য রাজউককে নির্দেশ দেন। এর পরে লেক ও আশপাশের এলাকা থেকে সব অবৈধ স্থাপনা অপসারণ, জলাধার সংরক্ষণ আইনের অধীনে লেক দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।
রাজউক কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন গুলশান- বনানী- বারিধারা শীর্ষক প্রকল্পে সরকারি করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে মোট ৪১ হাজার ২৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হযেছে। এর মধ্যে সরকারি ৩১ হাজার ৪শত ৬৩ কোটি টাকা এবং রাজউকের ৯ হাজার ৫শত ৬২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা এই প্রকল্পে টাকা কাজে ব্যয় করা হবে। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালে প্রকল্প বাস্তবায়নে নতুন করে উদ্যোগ শুরু করেন। ওই ২০১১ সালে প্রকল্প বাস্তবায়নে ৫০০ কোটি টাকার হিসাব করে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। গুলশান-বনানী-মহাখালী লেক অংশের ৬৯ দশমিক ১৪৪ একর জমি উপর এ প্রকল্প।পরে গুলশান-বনানী- বারিধারা-মহাখালী লেক জমি অধিগ্রহণেরন করার জন্য ভুমি মন্ত্রণালয় থেকে নিদের্শনা দেয়া হয় ঢাকা জেলা প্রশাসককে।
ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এল এ কেস নং-০১/১৬-১৭ এর মাধ্যমে কড়াইল, মহাখালী, তেজগাঁও শিল্প এলাকা ও বনানী আবাসীক এলাকার মৌজায় নতুন করে ভুমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম শুরু করেছে। এদিকে প্রতিবছর প্রকল্পে বরাদ্দ বৃদ্ধি হলেও এখনো ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রকল্পের চিঠি চালাচালির প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। অন্যদিকে প্রকল্পের কাজ আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্ধোধন করার কথা রয়েছে। গুলশান-বনানী-মহাখালী লেক অংশের ৬৯ দশমিক ১৪৪ একর জমি নিয়ে এ প্রকল্পের যাত্রা শুরু করেছে।
২০১০ সালের জনু হতে শুরু হয়ে ২০১৩ সালে জুলাই শেষ করার জন্য ২০১০ সালে ৬ জুলাই একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে জনু মাস পযন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধী করা হয়। আগামী বছর প্রকল্পের কাজ শেষ হবে না মর্মে আবারো ২০১৬ সালে প্রকল্পে মেয়াদ বৃদ্ধি এবং প্রকল্পে ২ হাজার ৮শত ৮৯ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় যা মেয়াদ প্রকল্পের ২০২০ সাল মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এর পরে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে প্রকল্পের সংশোধনের প্রস্তাবের উপর পিইসির সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভার সিদ্ধান্ত মতে প্রকল্পের ব্যয় আবারো বৃদ্ধি প্রস্তাব করা হয় সেখানে ৪৮৮৬১১.৩১ লাখ টাকা প্রাক্রলিত ব্যয়ে ২০১০ জুলাই থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তবায়নের মেয়াদ কাল ধরে মন্ত্রণালয় থেকে ভোত অবকাঠামো বিভাগ পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
প্রকল্পে যা থাকছে, পরিবেশ উন্নয়ন ও বিনোদনকেন্দ্রে রূপান্তরের জন্য লেক পাড়ে গাছ ও ঘাস লাগানো হবে। পায়ে চলার পথ ও যান চলাচলের জন্য পথের পাশে বৈদ্যুতিক বাতিও থাকবে। গুলশান-শাহজাদপুর সংযোগ সড়ক ভেঙে একটি সেতু হবে। মহাখালী গাওসুল আজম মসজিদের পাশে ছোট সেতুটি ভেঙে বড় করা হবে। বনানী থেকে গুলশান-২ যাওয়ার কালভার্টটিও ভেঙেও সেতু তৈরি হবে। গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকার বিভিন্ন সংযোগ সড়ক, ডাইভারসন রোড, কালভার্ট ভেঙে সেতু করার পরিকল্পনা রয়েছে। লেকের তলদেশের কাদা মাটি, আবর্জনা অপসারণ করে গভীরতা বাড়ানো হবে। লেকের পানির গুণমান বাড়ানোর লক্ষ্যে গ্রিন অ্যাপ্রোচ সোলার অ্যাকুয়াটিক টিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন এবং লেকে ময়লা পানি ফেলতে দেওয়া হবে না। তবে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করতে পারবে। বৃষ্টির পানি পরিশোধনের মাধ্যমে আমরা লেকে ফেলব। বনানী চেয়ারম্যানবাড়ি, বনানী গোরস্তান ও ইউনাইটেড হাসপাতালএই তিনটি স্থান দিয়ে বৃষ্টির পানি শোধন করে লেকে ফেলা হবে। এ ছাড়া লেক দিয়ে জলযান চলাচল করতে পারবে। ফলে যানজট এড়িয়ে অনেকেই এসব জলযান ব্যবহার করে তাদের গন্তব্যে যেতে পারবে। জলযান চালু করতে তিনটি লেকে প্রায় ৯টি ব্রিজ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও বেশ কয়েকটি ছোট ছোট ব্রিজও থাকবে।
প্রকল্পের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত দায়িত্বশীল সূত্রমতে, হাতিরঝিল প্রান্তে খননকাজসহ প্রকল্পের কিছু কাজ হয়েছে। তবে বাস্তব ক্ষেত্রে কাজের অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক নয়। ওই সূত্রমতে, শুরু থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে উদাসীনতা ও পরে একাধিক মামলা থাকায় কাজের গতি কমে যায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লেক সংরক্ষণ, পরিবেশ সুরক্ষা ও জলযান চলাচলের জন্য এ প্রকল্প। হাতিরঝিল যেভাবে তৈরি করা হয়েছে, অনেকটা এর চেয়ে উন্নতভাবেই এ প্রকল্প করা হবে। আর এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রাজধানী ঢাকাবাসাীর জন্য দ্বিতীয় উপহার।
গাউসুল আজম মসজিদ রোর্ডের বাসিন্দা আল আমিন ইনকিলাবকে বলেন,এই উন্নয়ন প্রকল্পকে স্বাগত জানাই। গুলশান-বনানীর এ লেক প্রকল্পটি করা ভাল উদ্যোগ। কিন্তু পরিকল্পনা মতো বাস্তবায়ন আরো আগে হলে দৃষ্টিনন্দন লেক নগরবাসীর বিনোদনের চাহিদা পূরণ হতো। এটি হাতিরঝিলের মতো আরেকটি হাতিরঝিল হয়ে উঠবে। তিনি আরো বলেন, প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরী কারণ এখন যে ভাবে রাজধানীতে যানজট দেখা দিয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে যানজট অনেক কমে যাবে।
লেক উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক আমিনুর রহমান সুমন ইনকিলাবকে বলেন, প্রকল্পের আওতায় তিনটি লেক খনন করা হবে। লেকের পার দিয়ে একমুখী সড়ক ও ফুটপাত নির্মাণ করা হবে। সেই সঙ্গে থাকবে আলাদা দুটি সড়ক ও ৯টি ব্রিজ। তিনটি লেকের প্রথমটি নিকেতনের পুলিশ কনভেনশন সেন্টারের পেছন থেকে শুরু হয়ে বাড্ডা-শাহজাদপুর দিয়ে বারিধারায় অবস্থিত ইউনাইটেড হাসপাতাল পর্যন্ত। তিনি বলেন. দ্বিতীয় শাখাটি নিকেতন থেকে শুরু করে গুলশান, গাউসুল আজম মসজিদের পাশ ঘেঁষে বনানী কবরস্থান পর্যন্ত। তৃতীয় শাখা নিকেতন থেকে শুরু করে গুলশান, কড়াইল বস্তির ভেতর দিয়ে বনানী চেয়ারম্যানবাড়ি পর্যন্ত। নিকেতন থেকে বনানী কবরস্থান পর্যন্ত দ্বিতীয় লেকটির কাজ চলছে এখন। কাকলী থেকে গুলশনা-২ নম্বর যাওয়ার পথের ব্রিজ এলাকার একটি অংশ।
##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।