Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

রফতানি আয়েও সুখবর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

প্রবাসী আয়ের মত রফতানি আয়েও সুখবর নিয়ে শুরু হল ২০১৮-১৯ অর্থবছর। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পণ্য রফতানি থেকে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি অর্থ দেশে এসেছে। পোশাক রফতানি বেড়েছে ২২ শতাংশের মত।
‘শুরুটা খুব ভালো হল’ মন্তব্য করে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি ফারুক হাসান বলেন, কারখানাগুলোর উন্নয়নে পোশাক শিল্প মালিকরা গত কয়েক বছরে অনেক টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কষ্টও করেছেন। ৮০ শতাংশের বেশি কারখানা উন্নত কর্মপরিবেশের (কমপ্লায়েন্স) আওতায় চলে এসেছে। এতে বায়াররাও খুশি।
মূলত এ কারণেই বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা বেড়েছে এবং ক্রয় আদেশ ও রপ্তানি বেড়েছে বলে মনে করেন বিজিএমইএ সহসভাপতি।
শুরুটা যেমন ‘ভালো’ হলো, শেষটাও ‘তেমন’ হওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “গত অর্থবছরের মত চলতি অর্থবছরেও পোশাক রফতানি ভালো প্রবৃদ্ধি হবে বলে আমার বিশ্বাস। লক্ষ্যমাত্রাও অতিক্রম করবে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক জায়েদ বখত বলেন, এক মাসের তথ্য দিয়ে বলা যাবে না পুরো অর্থবছর কেমন যাবে। তবে শুরুটা বেশ ভালোই হয়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রফতানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ ৩৫৮ কোটি ১৫ লাখ ডলার আয় করেছে।
এই অংক গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে ১৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম মাসে ২৯৮ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি করেছিল বাংলাদেশ।
জুলাই মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে প্রায় সাত শতাংশ। এই মাসে লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৩৩৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, জুলাইয়ে মোট রফতানি আয়ের ৮৪ দশমিক ২৫ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে।
অর্থাৎ ৩৫৮ কোটি ১৫ লাখ ডলারের মধ্যে ৩০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলারই এ খাত থেকে এসেছে। এর মধ্যে নিট পোশাক রফতানি থেকে এসেছে ১৫২ কোটি ৭১ লাখ ডলার; প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
উভেন পোশাক রফতানি করে আয় হয়েছে ১৪৯ কোটি ডলার; প্রবৃদ্ধি ২২ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
অন্যান্য পণ্যের মধ্যে জুলাইয়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি বেড়েছে ১৫ শতাংশ। স্পেশালাইজড টেক্সটাইল রফতানি বেড়েছে ৫৩ শতাংশ। হোম টেক্সটাইল বেড়েছে তিন দশমিক ৬২ শতাংশ। ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে ২২ শতাংশ। হস্তশিল্প থেকে আয় বেড়েছে ১১ শতাংশ।
এছাড়া প্লাস্টিক পণ্য রফতানি ১৩ শতাংশ, তামাক ৯৭ শতাংশ, শাকসবজি ৪৭ শতাংশ এবং শুকনো খাবার রফতানি ১৩৪ শতাংশ বেড়েছে। তবে হিমায়িত মাছ রফতানি ৩১ শতাংশ কমেছে। চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য রফতানি কমেছে ২২ শতাংশ। চা রফতানি কমেছে ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ।
৩০ জুন শেষ হওয়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ ৩ হাজার ৬৬৬ কোটি ৮২ লাখ (৩৬.৬৬ বিলিয়ন) ডলার আয় করে। এর মধ্যে ৩০ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারই এসেছে তৈরি পোশাক রফতানি থেকে। সার্বিক রফতানি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের চেয়ে ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ বাড়লেও তা ছিল লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ২২ শতাংশ কম।
মূলত তৈরি পোশাক রফতানির উপর ভর করেই গত অর্থবছর ওই প্রবৃদ্ধি হয়। মোট রপ্তানির ৮৩ দশমিক ৫ শতাংশ আসে এই খাত থেকেই। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য রফতানি করে ৩৯ বিলিয়ন (৩ হাজার ৯০০ কোটি) ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৪ শতাংশ বেশি।
এবার দেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক খাত থেকে ৩২ হাজার ৬৮৯ কোটি ডলার আসবে বলে ধরা হয়েছে, যা মোট রফতানি লক্ষ্যমাত্রার ৮৩ দশমিক ৮২ শতাংশ।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৩১ কোটি ৭০ লাখ (১.৩১ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত বছরের একই মাসের চেয়ে ১৮ শতাংশ বেশি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রফতানি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ