পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সিলেট বিভাগের বিএনপির নেতারা সিটি নির্বাচনে জামানত হারানো জামায়াতকে পাশে না রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন। স্থানীয় নির্বাচনসহ সিটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে এমন প্রস্তাব কেন্দ্রের কানে দিয়েছেন সিলেটের নেতারা। ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে গত ৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সিলেট বিভাগ বিএনপির নেতাকর্মীদের মনোভাব কেন্দ্রকে অবহিত করা হয়।
ওই বৈঠকে উপস্থিত সিলেটের একাধিক নেতা জানান, জামায়াতের কারনে সিলেটে উদার ও ইসলামপন্থি ইসলামিক একাধিক দলের সমর্থন হারাতে হয়েছে। কিন্তু সিটি নির্বাচনে জামায়াত সাথে না থাকায় বিএনপি মাঠে বিব্রত হয়নি। উল্টো অন্যান্য ইসলামি দলগুলো বিএনপির পক্ষে কাজ করেছে। কিন্তু বিএনপিকে টার্গেট করেই জামায়াত সিটি নির্বাচন করেছে। তাদের নেতাকর্মীরাও বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে ছিল সরব। নির্বাচনে জামানত হারানোর মধ্য দিয়ে সিলেটে জামায়াতের ভোট রাজনীতির অহঙ্কারের পতন ঘটেছে।
ঢাকার গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গত ৪ আগস্ট মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে বৈঠক করেন সিলেট বিভাগের চার জেলা ও এক মহানগর শাখা বিএনপির ২৫ নেতা। সিলেট বিভাগের নেতারা জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করতে বিএনপির নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান। সিলেটের নেতাদের কথায়, জামায়াতের সঙ্গ ছাড়লে সাধারণ মানুষের কাছে বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে।
সিলেট থেকেই জামায়াতের সাথে বিএনপির নেতৃত্বে ৪ দলীয় জোটের সূচনা হয়। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরস্পর কাছাকাছি আসায় গঠিত হয় ৪ দলীয় ঐক্যজোট। তারপরও সিলেটে বিএনপির নেতৃত্বকে বিভাজনে জামায়াত প্রথম থেকেই কৌশলী ছিল। সে কারনেই দলের নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দল সক্রিয় ছিল বিএনপির তৃণমূলে। দলের মধ্যে বিভাজন, গ্রুপিং কোন্দলে দেখা যেত বিএনপর একটি পক্ষের সাথে জামায়াতের সমর্থন ও সম্পৃক্ততা। দীর্ঘদিন ধরেই জামায়াত নিয়ে বিএনপির তৃণমূলে অসন্তোষ বিরাজ করছিল।
সিলেটে জামায়াতের নেতারা আড়ালে আবডালে বলতেন, তারাই বিএনপিকে পরিচালনা করেন। তাদের এমন কথাবার্তা সিলেটে বিএনপির রাজনীতিকে অনেকটা কোনঠাসা করে রাখে। দূরত্ব সৃষ্টি হয় উদার ও ইসলামপন্থি অন্যান্য দলগুলোর সাথে। আর সিটি নির্বাচনে প্রকাশ্যে বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় জামায়াত।
সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বিএনপির স্থানীয় ও সর্বোচ্চ পর্যায়ের অনুরোধেও প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেননি। বিএনপি প্রার্থীকে বাঁশ দিতেই সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল জামায়াত। সবাইকে অবাক করে সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিএনপি প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীকে জামায়াতের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ার দাবি জানানো হয়। জামায়াতের এমন ঔদ্ধত্যকে ভালো চোখে নেয়নি বিএনপির নেতাকর্মীরা।
মুক্তিযুদ্ধসহ নানা কারণেই জামায়াত বিতর্কিত। হারিয়েছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনও। তারপরও তাদের বেপরোয়া গতিবিধি ছিল সিটি নির্বাচন ঘিরে। বিএনপির নেতাকর্মীরা মামলা ও হয়রানি মোকাবেলা করে নির্বাচনে অটল থাকলেও জামায়াত ছিল জামাই আদরে। তাদের তৎপরতায় সবাই সরকার দলের সাথে আতাঁতের গন্ধ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। জামায়াত সিলেট মেয়রের গদিতে বসার স্বপ্ন্ও দেখা শুরু করেছিল। তবে গদি দূরে থাক, জামায়াত প্রার্থী হতে যে টাকা জমা দিয়েছিলেন সেটিও ফসকে গেছে। বর্তমানে জামায়াতকে সিলেটের রাজনীতিতে কাগজে বাঘ হিসেবে তুলনা করা হচ্ছে।
একাধিক সূত্র জানায়, জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি ঐক্য গড়তে চাইছে। ঐক্য গড়ার আগেই জামায়াতকে ছাড়তে বিএনপির ওপর নানামুখী চাপ বাড়ছে। এমন অবস্থায় জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন সিলেট বিভাগের বিএনপির নেতারা।
জামায়াত ছাড়ার ব্যাপারে সিলেটের নেতাদের যুক্তি হচ্ছে, জোটে জামায়াত থাকায় প্রতিবেশি দেশ ভারত বিএনপিকে ‘ভালো চোখে দেখে না’। জামায়াতকে ছাড়লে বিএনপির প্রতি ভারতের মনোভাব বদলে যাবে। জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার পাশাপাশি বৈঠকে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে আরও বেগবান করা, সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে কাজ শুরু, জাতীয় নির্বাচনের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়েও সিলেটের নেতারা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে উত্থাপন করেন।
বৈঠকে উপস্থিত সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, তারা দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে সাফ জানিয়েছেন জামায়াত ছাড়া বিএনপি অনেক শক্তিশালী। স্থানীয় ও সিটি নির্বাচন ঘিরে জামায়াতের সাথে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তাতে বিএনপির তৃণমূল জামায়াতের ব্যাপারে আগ্রহী নয়। জনগণ তাদের অতি চালাকি তৎপরতাকে পছন্দ করে না বলেই ভোটের রাজনীতিতে প্রত্যাখান করেছে। বিএনপির উচিত জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করে দল ও জোটকে গুছিয়ে নেয়া। একই কথা বলেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক (সিলেট বিভাগ) সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন জীবন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।