Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

যথেষ্ট হয়েছে ঘরের ছেলেমেয়ে ঘরে ফিরে যাক : প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের বলবো যথেষ্ট হয়েছে আর নয়, ঘরের ছেলে মেয়ে ঘরে ফিরে যাবে। লেখাপড়া করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা পক্ষ বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে। কেউ গুজবে কান দেবেন না, অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। গতকাল গণভবন থেকে ১০ জেলার ৩০০ ইউনিয়ন পরিষদে অপটিক্যাল ফাইবার কানেক্টিভিটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা কয়েকটি আন্দোলন করেছে। তাদের ইচ্ছামত যা যা করার করছে- আমরা তা মেনে নিয়েছি। কোন বাধা দেইনি। তারা ট্রাফিক পুলিশের আইন-কানুন না বুঝলেও রাস্তায় গাড়ির কাগজ পরীক্ষা করেছে। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, মন্ত্রীরা মিলে সব শুনেছে, ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। আমাদের এমপি মন্ত্রীদের গাড়ি আটকে দিয়েছে। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আমি এখন শঙ্কিত।
শিশুদের আন্দোলনের মাঠে তৃতীয় শক্তি নেমেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, এই তৃতীয় শক্তি এরা মানুষ না। এরা পারে না এমন কিছু নেই। যেহেতু আমি আমার আপনজন হারিয়েছি, সেই ব্যথা কষ্ট আমি বুঝি। সেজন্যই আমার এই আহ্বান। তাই আমি বাবা-মায়ের কাছে অনুরোধ করব, শিক্ষকদের কাছে অনুরোধ করব যে আমাদের কোমলমতি ছেলেমেয়েদের আর যেন ব্যবহার করা না হয়। এখন তৃতীয় পক্ষ তাদের আন্দোলনের ভেতরে ঢুকে পড়েছে। এখন যদি কোনও ধরনের নাশকতা ঘটে তাহলে তার দায় কে নেবে? শিক্ষার্থীদের বলবো- পড়াশুনায় মনোযোগী হও। যার যার স্কুলে চলে চাও।
আর কোনো মায়ের কোল খালি হোক তা চান না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কোনো পিতামাতা যেন সন্তানহারা না হয়, সেটাই আমি চাই। কারণ হারানোর বেদনা আমার থেকে বেশি কেউ জানে না। তিনি বলেন, সন্তানের নিরাপত্তার দায়িত্ব অভিভাবক ও শিক্ষকদের। তাদেরকে রাস্তা থেকে তুলে স্কুলে পাঠান, কলেজে পাঠান, লেখাপড়া করুক। বাকি যেটা আমরা করে দিচ্ছি। এদের দাবি দাওয়া যা ছিল, সবই আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
এ সময় আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা নিজ নিঝ এলাকার কোমলমতি শিশুদের রাস্তা থেকে সরিয়ে নিন। নইলে অগ্নিসন্ত্রাসকারীরা যেকোনো অঘটন ঘটাতে পারে।
ইন্টারনেটে ছড়ানো কোনও গুজবে কান না দিতে শিক্ষার্থীসহ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। সকলকে আহ্বান জানাবো মিথ্যা অপপ্রচারে কেউ বিভ্রান্ত হবে না। ফেসবুক ইন্টারনেট ভালো কাজে ব্যবহার করুন। নোংরা কাজে নয়।
শনিবার নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, গাউসিয়া মার্কেটে স্কুল ইউনিফরম বিক্রি বেড়ে গেছে। পলাশি থেকে আইডি কার্ড তৈরি করা হয়েছে। তারা আমাদের দলীয় কার্যালয়ে আক্রমণ করেছে। আমাদের ১৭জন কর্মী হাসপাতালে। আমাকে ফোন দিয়েছে। আমি ধৈর্য ধরতে বলেছি। সেখানে নাকি ৪ জনকে মেরে লাশ করে দেওয়া হয়েছে। মেয়েদের ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। ছাত্রলীগের সেক্রেটারি ২০/২৫ জন শিক্ষার্থীকে অফিসে নিয়ে গেছে। সেখানে তারা তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখেছে। কোথাও কিছু পায়নি। দলীয় কার্যালয়ে পাথর নিক্ষেপের প্রসঙ্গ টেনে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ছাত্র হলে তো তাদের ব্যাগে বই থাকবে। পাথর থাকবে কেন?
তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি একে একে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। স্কুলে ট্রাফিক থাকবে। ছুটির সময় শিক্ষার্থীদের পার করে দেবো। দুর্ঘটনা ইতোমধ্যে কমে এসেছে। দুর্ঘটনা যাতে না হয় সেই চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু বিষয় আছে যেগুলো একদিনে হয় না। যেমন ট্রেনিং তো একদিনে হয় না, আন্ডারপাস হতে সময় লাগে। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। নতুন ট্রাফিক আইনে আমরা দূরপাল্লার বাসচালকরা যাতে চার-পাঁচ ঘণ্টা পরপর বিশ্রামে যেতে পারে সে আইন করে দিয়েছি। এগুলো বাস্তবায়ন হতে তো একটু সময় লাগবে।
নতুন ট্রাফিক আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ট্রাফিক আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। এটা ক্যাবেনেটে আসবে তারপর সংসদে গিয়ে সেটা পাস করে দেয়া হবে। আমরা চাই সবাইকে আইন মেনে চলতে হবে।
বিমসটেকে প্রধানমন্ত্রীকে নেপালের আমন্ত্রণ
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি চলতি মাসের শেষের দিকে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠেয় চতুর্থ বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গতকাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশনের (বিআইএমএসটিইসি) দুই দিনব্যাপী সম্মেলন আগামী ৩০ আগস্ট শুরু হবে।
প্রেস সচিব বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করে শর্মা অলি এই আমন্ত্রণ জানান। নেপালের প্রধানমন্ত্রী শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেন এবং প্রায় ১০ মিনিট কথা বলেন। শর্মা অলি বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানান। টেলিফোনে আলাপকালে দুই নেতা শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।



 

Show all comments
  • রমিজ উদ্দিন ৬ আগস্ট, ২০১৮, ১১:৩৮ এএম says : 0
    আপনার কাছে অনুরোধ, সড়ককে নিরাপদ রাখুন
    Total Reply(0) Reply
  • মানিক ৬ আগস্ট, ২০১৮, ১১:৪০ এএম says : 0
    সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের নিজেদের কাজের বেলায় কঠোর ও নিষ্ঠাবান হয়, তাহলে আর আমাদের বাস্তায় আন্দোলন করতে আসা লাগে না
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ