পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘আমি এখানে যেটা বলি, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের হয়েই বলি, নিজস্ব কোনো বক্তব্য নয়। আমার কোনও মন্তব্যে কারও দ্বিমত থাকলে তিনি এটা নিয়ে কথা বলতেই পারেন। মত প্রকাশ এবং সমালোচনা বিতর্ক গণতন্ত্রে সৌন্দয্য। এটা বাক স্বাধীনতার অংশ। আমি যেটা বলেছি, তার জবাব দেওয়ার অধিকার আপনার রয়েছে’। কথাগুলো বললেন ঢাকায় কর্মরত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লম বার্নিকাট। গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের সামনে এভাবেই নিজের অভিমত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সমালোচনা বাক স্বাধীনতার অংশ। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের স্থানীয় ও জাতীয় সকল নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক দেখতে চায়।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট গতকাল বিকেলে আগারগাঁওস্থ নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে যান। সেখানে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিগত দুটি, আসন্ন তিন সিটি এবং আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সিইসি-বার্নিকাটের যৌথ বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে বার্নিকাট বলেন, আমরা আশা করছি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হবে। আমরা আশা করি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সবার প্রত্যাশা। যুক্তরাষ্ট্র সব সময় গণতন্ত্র চায়। এজন্য আমরা সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করি।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সকল নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক দেখতে চায় জানিয়ে মার্শা বার্নিকা বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সব দলকে প্রচারণায় সমান সুযোগ দেয়ার উচিত। নিজের বিরুদ্ধে চলা সমালোচনাকে পাত্তা না দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচন নিয়ে তিনি যা আগে বলেছেন বা এখন বলছেন তা তার ব্যক্তিগত মতামত নয়। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানই জানিয়েছেন। মার্কিন সরকারের বক্তব্যই তার কথায় উঠে এসেছে।
বার্নিকাটকে প্রশ্ন করা হয় ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিষয়ে আপনার বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন একজন নির্বাচন কমিশনার, বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন’। জবাবে বার্নিকাট বলেন, ‘আমি যেটা বলেছি, পছন্দ না হলে তার জবাব দেওয়ার অধিকার আপনার রয়েছে’। এ কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই কমিশনের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হবে বলে আশা করি। জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সব বিষয়ে কথা হয়েছে। নির্বাচনে সব দলকে সমান সুযোগ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
সিইসির সঙ্গে যৌথ বৈঠকে ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। জবাবে সিইসি কে এম নুরুল হুদা বলেন, খুলনা সিটি নির্বাচনে অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে পুলিশসহ জড়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে ইসি সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ বলেন, কিছুদিন পরে বার্নিকাট নিজ দেশে চলে যাবেন। সেই হিসেবে বলতে পারেন আজ তিনি বিদায়ী সাক্ষাতে এসেছেন। তবে স্বাভাবিকভাবে বৈঠকে তিন সিটি ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বার্নিকাট এসব নির্বাচনে ইসির প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। জবাবে সিইসি বলেছেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। বার্নিকাটও নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছেন। তিন সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন প্রসঙ্গে বার্নিকাটকে সিইসি জানান এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। বার্নিকাট নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছেন।
এদিকে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিন সিটি করপোরেশনের ভোটকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক মহল। এরই অংশ হিসেবে তিন সিটির নির্বাচন সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করবে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। এ জন্য এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে ১৮ জনের নামে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কার্ড ইস্যুর জন্য অনুমোদন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস থেকে আবেদনসংবলিত পাঁচজনের নামের তালিকা স¤প্রতি ইসিতে পাঠানো হয়। রাজশাহীতে তিন, বরিশাল ও সিলেট সিটিতে একজন করে প্রতিনিধি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানানো হয়। দূতাবাসের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন থেকে পাঁচজনকে পর্যবেক্ষণের অনুমোদন দেয়া হয়। একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের (ডিআই) ৯ জন প্রতিনিধি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। এর মধ্যে রাজশাহীতে চার, সিলেটে তিন ও বরিশালে দুজন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যাবেন। ইউএসএইড নামের আরেকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার চারজন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। বিশেষ করে গত ২৬ জুন গাজীপুর ও ১৫ মে অনুষ্ঠিত খুলনা সিটির নির্বাচনের চেয়ে এই তিন সিটির নির্বাচনের ওপর বেশি দৃষ্টি রাখছে এসব সংস্থা। এর মধ্যে রাজশাহীর নির্বাচন পর্যবেক্ষণে তাদের আগ্রহ বেশি।
যুক্তরাজ্যের পক্ষে দেশটির ঢাকাস্থ হাইকমিশনের রাজনৈতিক বিভাগের একজন সিনিয়র কর্মকর্তার নেতৃত্বে ইলেকশন অবজারভার টিম গঠন করা হয়েছে। ওই টিম মাঠে যাচ্ছে। বাকিরা ঢাকায় বসে প্রযুক্তি, মিডিয়া ও নিজস্ব প্রতিনিধির মাধ্যমে ভোটের মাঠের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। নির্বাচনপূর্ব পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে যুক্তরাজ্যের একটি দল এখন বরিশালে। এরপর ওই দলটির সিলেট সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যাওয়ার কথা রয়েছে।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও (ইইউ) শুরু থেকেই স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই সিটি করপোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে রেখেছে। জাপান, কানাডা ও জার্মানির কূটনীতিকরাও নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানা গেছে। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ মোট ১৮ জন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন বলে আবেদন করেছেন। কমিশনও সংশ্লিষ্টদের আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।