পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি দেশের গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত এবং সুসংহত করতে একটি সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে। যারা সুশিক্ষিত, কর্মক্ষম, সচেতন, বুদ্ধিমান এবং সর্বোপরি গণতন্ত্রকে সুসংহত করার জন্য দৃঢ় প্রত্যয়ের অধিকারী এরূপ যোগ্য অফিসারদের কাছে নেতৃত্ব ন্যস্ত করতে হবে। সব কিছুর ঊর্ধ্বে থেকে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বিচার বিশ্লেষণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দেশপ্রেমিক যোগ্য নেতৃত্ব খুঁজে বের করতে হবে। গতকাল রোববার ঢাকা সেনানিবাসে সেনাসদরের কনফারেন্স রুমে সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০১৮-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এ সব কথা বলেন। সেনাবাহিনী কর্মকর্তাদের পদোন্নতি উপলক্ষে ৫দিনের সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদের উদ্বোধন করেন সরকার প্রধান।
বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চারনেতাসহ মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী ৩০ লাখ শহীদ ও সম্ভ্রমহারা দু’লাখ মা- বোনকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন দেশকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সমগ্র জাতিকে নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। বাংলাদেশের জন্য একটি উন্নত, পেশাদার এবং প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে একটি প্রতিরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করেন। তার নির্দেশেই ১৯৭২ সালে কুমিল্লায় গড়ে তোলা হয় বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি। বঙ্গবন্ধুর প্রণীত নীতিমালার আলোকে সরকার ‘আর্মড ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করে সেনাবাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে জানিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং অর্জনের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের সরকারই সর্বপ্রথম সেনাবাহিনীতে নারী অফিসার এবং আর্মি মেডিকেল কোরে প্রথমবারের মতো নারী সৈনিক অন্তর্ভুক্ত করে। বর্তমানে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কোরে নারী সৈনিক সফলতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সেনাবাহিনীর নারী অফিসাররা স্টাফ কলেজ সম্পন্ন করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ পাচ্ছেন এবং ইতোমধ্যে দুইজন নারী অফিসার পাইলট হিসেবে প্রশিক্ষিত হয়েছেন। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী একাগ্রতা, কর্মদক্ষতা এবং নানাবিধ জনসেবামূলক কর্মকান্ডের জন্য সার্বজনীন আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর দুর্ঘটনায় দুর্গতদের সাহায্য ও সহযোগিতা করে সশস্ত্র বাহিনী অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের সহায়তায় সেনাবাহিনী অত্যন্ত প্রশংসার সঙ্গে কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। সারাদেশে এমনকি দুর্গম পার্বত্য এলাকায় সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ, মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ এবং ভোটার তালিকা ও মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রেও সেনাবাহিনী দক্ষতা দেখিয়েছে। তিনি পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের নিরাপত্তা ও তদারকি, ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প’ এর সুপারভিশন পরামর্শক হিসেবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণে সেনাবাহিনীর উল্লেখযোগ্য ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন। একই সাথে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে সেনাসদস্যদের গৌরবজ্জ্বল ভূমিকা দেশের ভাবমূর্তি বিশ্বে উজ্জ্বল করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। এবার আমরা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি অর্জন করেছি। দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আধুনিক, উন্নত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সেনাবাহিনীকে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে হবে। এজন্য যোগ্য, দক্ষ, কর্মক্ষম এবং দেশপ্রেমিক অফিসারদের হাতে এর নেতৃত্ব ন্যস্ত করতে হবে।
আইএসপিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী পদোন্নতির জন্য অফিসারদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস, পেশাগত দক্ষতা, নেতৃত্বের গুণাবলী, শৃঙ্খলার মান, সততা, বিশ্বস্ততা ও আনুগত্য এবং সর্বোপরি নিযুক্তিগত উপযোগিতার উপর গুরুত্ব আরোপ করতে উপদেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী সেনাসদরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান সেনা বাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত এ পর্ষদের মাধ্যমে লেফটেন্যান্ট কর্নেল থেকে কর্নেল এবং কর্নেল থেকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেলে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এসময় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মুখ্যসচিব নজিবুর রহমানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।