পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ‘ডান-বাম’ ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহবান জানান তিনি।
শনিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক যোগদান অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া এ কথা বলেন। ছাত্রমৈত্রীর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান ঢালী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি জহুরুল ইসলাম বাবু এবং ভাসানী স্মৃতি সংসদের সহ-সভানেত্রী ন্যান্সি রহমানের বিএনপিতে যোগদান উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। তারা খালেদা জিয়ার হাতে ফুল দিয়ে বিএনপিতে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর, কুমিল্লার মতলব ও পাবনা সদরের কয়েক‘শ নেতা-কর্মী-সমর্থক অংশ নেন।
খালেদা জিয়া বলেন, আমরা ঐক্যের ডাক দিয়েছি। আমরা ভুলে গেছি কে বাম কে ডান, কে কি। আমরা চাই দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসুক। জিয়াউর রহমান যে গণতন্ত্র এনেছিলেন, সেই পথ ধরে আমরা এগিয়ে চলেছি। নতুন প্রজন্মকে ‘অন্যায়-অত্যাচার’ এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবানও জানান খালেদা জিয়া।
নবাগতদের অভিনন্দন জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, যে প্রগতিশীল নেতারা আজকে যোগদান করলেন, তারা এ দলে কিসের জন্য যোগ দিয়েছেন? আমাদের দেশটাকে বাঁচাতে হবে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে, দেশে আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে হবে, দেশের কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের কল্যাণ করতে হবে। যারা আজকে বিএনপিতে যোগদান করলেন আমি তাদের অভিনন্দন জানাই। আপনাদের যোগদানে আমরা উপকৃত হয়েছি।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নামক দলটির দৈত্যদের হাত থেকে দেশটাকে বাঁচাতে হবে। এরা মানুষ খেকো। এরা (আওয়ামী লীগ) মানুষকে শুধু হত্যা করতে জানে, গুম করতে জানে, মানুষের সম্পদ কেড়ে নিতে জানে। আর মানুষের ওপর জুলুম অত্যাচার করতে জানে। দেশ ও জনগণ এদের কাছে বড় কথা নয়। এদের কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমি ক্ষমতায় থাকবো, সারা জীবন ক্ষমতায় থাকবো।
প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার ও পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, তার লেখনী হয়ত তাদের গায়ে জ্বালা হতো। সেজন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে আজ তাকে আটক করা হয়েছে, বন্দি করা হয়েছে। এখন রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। আমরা কোন দেশে আছি।
সাংবাদিক শফিক রেহমান, আমার দেশ এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদ, ইটিভি‘র চেয়ারম্যান আবদুস সালাম ও নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার অবিলম্বে মুক্তি দাবি জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।
তিনি বলেন, শুধু রাজনীতিবিদরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন না। আজ জনপ্রিয় সাংবাদিকরাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষসহ যারা একটু প্রগতিশীল, যারা একটু সচেতন তাদেরকেই ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আজকে মেধা শূন্য করে দেশটাকে একটা পঙ্গু রাষ্ট্রে বানানোর ষড়যন্ত্র করছে শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য।
ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বর্তমান সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ অবৈধ সরকার। এদের বিদায় নিতে হবে। আমাদের দাবি ছোট ও সহজ। আমরা কী চাই, এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। ইউনিয়ন পরিষদেও তা দেখা গেছে। সেজন্য আমরা চাই, হাসিনাকে ক্ষমতা ছেড়ে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নির্বাচন করতে হবে। আসুন লেভেল প্ল্যান ফিল্ডে আমরা সবাই নির্বাচন করি। তারপর আমরা দেখি জনমত কী চায়। আজকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে গণতন্ত্র ফিরে আসুক-এটাই আমাদের দাবি।
দেশের বর্তমান অবস্থাকে সংকটজনক অভিহিত করে খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের কাছে বড় হলো দেশ ও জনতা। ক্ষমতা যাওয়া বড় নয়। তাদের দুঃখ-দুর্দশায় আমরা বসে থাকতে পারি না। যারা আজকে দেশের মানুষের এই দুঃখ-দুর্দশা, গণতন্ত্রহীন অবস্থায় দেশকে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে।যার জন্য আমরা যুদ্ধ করেছি, অনেক রক্ত দিয়েছি, সেই গণতন্ত্র আজকে আমাদের নসা হতে চলেছে, শেষ হতে চলেছে। শুধু এক ব্যক্তির বা এক লোকের ক্ষমতায় থাকার বা ইচ্ছার জন্য।
ছাত্রমৈত্রীর যোগ দেয়া সাবেক ছাত্র নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা যারা কিছু ব্যক্তি যোগদান করেছেন, তারা অতীতে প্রগতিশীল, সাহসী গণতন্ত্রমনা মনে করেন, আজকে তারা অনেকে বেঈমানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। আপনারা হয়ত তাদেরকে সকলে চিনেন। একসময় তারা সহকর্মী ছিলেন। আজকে তারা যে কাজগুলো করছে বা যাদের সঙ্গে তারা রয়েছেন। তারা আজ দেশের স্বার্থ বিরোধী, জনগণ বিরোধী, গণতন্ত্র বিরোধী অন্যায়-অপরাধ করে চলেছে।
বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ লোপাট হওয়ার ঘটনায় তুলে ধরে তিনি বলেন, আজ ব্যাংকগুলো লুট করে দেশকে দেউলিয়া দেশ করে দেয়ার অবস্থায় নিয়ে গেছে। নতুন প্রজন্মকে জেগে উঠতে হবে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। বিএনপিকে মামলা দিয়ে ধ্বংস করা যাবে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, আজ বিএনপি ঐক্যবদ্ধ। প্রগতিশীল নেতারাও আজ বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যোগদানকারী নেতা আতাউর রহমান ঢালী, জহুরুল ইসলাম বাবু ও ন্যান্সি রহমান বক্তব্য রাখেন।
অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নুরুল হুদা, নিতাই রায় চৌধুরী, আবদুস সালাম, সানাউল্লাহ মিয়া, ফজলুর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আলী নেওয়াজ খৈয়াম, শামা ওবায়েদ, পাবনা জেলা সভাপতি কে এস মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।