Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রশ্নপত্র ফাঁস না হওয়ায় শিক্ষামন্ত্রীর স্বস্তি প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চলতি বছর এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষায় পাসে হার ও জিপিএ-৫ কমলেও প্রশ্নফাঁস না হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, এবারের পরীক্ষা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। বলা যায় এবারের পরীক্ষা প্রশ্নমুক্তভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এমনকি কোনও গুজবও কেউ রটাতে পারেনি। পরীক্ষার্থী বাড়ছে। ঝরে পড়া কমেছে। সংখ্যাগত এবং গুণগত দিক থেকে বিজ্ঞান পরীক্ষায় উন্নতি অভ্যাহত আছে। কারিগরি শিক্ষাতেও পরিবর্তন এসেছে, এই পরীক্ষার ফলাফলে তা প্রমাণিত হয়। আমাদের ছাত্রীদের সমতা অর্জনে সমাজে সার্বিকভাবে বড় ধরনের পরিবর্তন অব্যাহত আছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সচিবালয়ে ফল প্রকাশ উপলেক্ষ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সবার সহযোগিতায় ভালোমত পরীক্ষা নিতে পারছি, সবাইকে ধন্যবাদ। কোনো রকমের প্রশ্ন কেউ উত্থাপন করেন নাই, এমনকি গুজবও কেউ রটাতে পারেননি। গত কয়েক বছরে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা মহামরির চেহারা পাওয়ায় ঘরে বাইরে সমালোচনা সইতে হচ্ছিল শিক্ষামন্ত্রীকে। প্রশ্নফাঁসের জন্য কিছু শিক্ষককে দায়ী করে বেশ কয়েকবার অসহায়ত্বও প্রকাশ করেন তিনি। সবশেষ গত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার বেশিরভাগ প্রশ্ন পরীক্ষা শুরুর আগেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নড়েচড়ে বসে সরকার। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে পরীক্ষার্থীদের বাধ্যতাম‚লকভাবে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে সিটে বসা, আধঘণ্টা আগে প্রশ্নের প্যাকেট খোলাসহ বেশ কিছু কড়াকড়ি আরোপ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর ধারাবাহিকতায় গত ২ এপ্রিল থেকে অনুষ্ঠিত এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শেষ হয় প্রশ্ন ফাঁসের কোনো ধরনের অভিযোগ ছাড়াই।
পাসের হার কমে যাওয়া নিয়ে এক প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যা বাস্তব, যা সত্য আমরা তাই করেছি। কেউ কেউ বলতেন, আমরা নম্বর বাড়িয়ে দিতে বলি। আমরা বাড়িয়ে দিতে বলি না, কমিয়েও দিতে বলি না। আমরা সব পরীক্ষকদের বাধ্য করছি উত্তরপত্র সঠিকভাবে ম‚ল্যায়ন করতে। কানো বোর্ডে ভালো অবার কোনো বোর্ডে খারাপ ফলের বিষয়ে নাহিদ বলেন, বোর্ডগুলো নিজেরা বিশ্লেষণ করে দেখবে, প্রয়োজনে হলে মন্ত্রণালয়ও দেখবে। ক্রটিগুলো খুঁজে বের করে সমাধান করা হবে। আমাদের তো সবাইকে পাস করাতে হবে। একটা সময় আসুক যেন সবাই পাস করে যায়। কিন্তু সেই অবস্থাটা আমাদের দেশে এখনও হয় নাই। আগে একটা সময় ছিল যখন ৪৯-৫০ পারসেন্টও পাস করেছে। যখন বেশি পাস করেছে সবাই বিস্মিত হয়েছেন, আমরা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছি, বেশি পাস নাকি করিয়ে দিচ্ছি। বেশি পাস করলেও আমাদের অপরাধ, কম পাস করলেও আমাদের অপরাধ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদ নির্দেশনা দিলেও কবে থেকে তা কার্যকর হবে সে বিষয়ে ধারণা দিতে পারেননি শিক্ষামন্ত্রী। এবার গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের (বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি) নিয়ে বৈঠক করে আমরা প্রায় কাছাকাছি আসছিলাম, তারপরে একটা সময়ে এসে আমরা আর খুব একটা এগোতে পারব সেই আশা রাখি নাই।
পরে মাহামান্য প্রেসিডেন্ট নিজেও বলেছেন, উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে, অনেকগুলো বৈঠক হয়েছে। ইউজিসি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, একটি কমিটি করা হয়েছে, কমিটি কাজ করছে। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে- এমন আশা প্রকাশ করে নাহিদ বলেন, এ বছর হয়ত পারবেন না।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর মাহবুবুর রহমান, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি প্রফেসর মু. জিয়াউল হক ছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যানরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ