Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৭ বছর বয়সে সরকারি কর্মচারী!

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০১৮, ১২:০১ এএম

ঢাকার তেজগাও সাব-রেজিস্ট্রার কুদ্দুস হাওলাদারের বিরুদ্ধে জাল জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। অবৈধভাবে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দায়ের করেছেন বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার জল্লা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আলী হায়দার। এছাড়া গত মাসে ঘুষ লেনদেনকালে হাতেনাতে দুদকের গণশুনানি দলের কাছে ধরা পরেন তিনি। অবৈধ সম্পদের বিষয়ে এক ভোক্তভোগীর সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তখনই কুদ্দুস হাওলাদের বিরুদ্ধে দুদক কমিশনার ড. নাসির উদ্দিন অনুসন্ধানের ঘোষণা দেন। এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, কুদ্দুস হাওলাদারের নিজ এলাকার ভোটার তালিকার তথ্য অনুযায়ী তার জন্ম ১৯৬৪ সালের ৩১ জানুয়ারি। অথচ চাকরি নেয়ার ক্ষেত্রে নিজেকে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার বা মুজিবনগর সরকারের একজন কর্মচারী উল্লেখ করেন। ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল গঠিত ওই সরকারের সময়ে তার বয়স ছিল মাত্র ৭ বছর। এলাকাবাসীর জানান, মাত্র ৭ বছর বয়সে তিনি কিভাবে মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হন। পাশাপাশি এ নিয়ে সঠিক তদন্ত করলে কুদ্দুস হাওলাদারের জাল-জালিয়াতির বিষয়টি উঠে আসবে বলেও জানিয়েছে এলাকাবাসি।
দুদকে পাঠানো অভিযোগে বলা হয়েছে, বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার জল্লা ইউনিয়নের মৃত্যু আবুল হাসেমের হাওলাদারের ছেলে আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদারের চার দলীয় জোট সরকারের সময় ক্ষমতার অপব্যাহার করে নিজ আত্মীয় স্বজনকে বড় অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে চাকরি দিয়েছেন। সে মিয়ার হাটে তৈরি করেছেন একটি বিল্ডিং একটি টিনসেট দোকান। তার পুরান বাড়িতে তৈরি করেছেন দুটি বিল্ডিং। এছাড়াও বরিশাল রয়েছে আলিসান বাড়ি এবং ঢাকায় রয়েছে ফ্লাট। তিনি বর্তমানে ঢাকার তেজগাও সাব-রেজিস্ট্র্রার কমপ্লেক্সে চাকুরীরত আছেন।
এদিকে ১৯৮৭ সালের ১৮ জুলাই সংস্থাপন মন্ত্রনালয়ের এমই/এস/ পি-৯/৮৬-৯৫৯ নং একটি ভূয়া স্মারক সৃষ্টি করে নিজেকে এবং মোঃ লোকমান হোসেন হাওলাদারকে নি¤œমান সহকারী পদে ৩০০-৫৪০/- পুরাতন বেতন স্কেলে চাকুরীতে আত্মীকরনের জন্য ভোলা জেলা প্রশাসক অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে জেলা বিষয়টি যাচাই বাছাই করে জানতে পারেন বিষযটি ভূয়া। পরে জেলা প্রশাসক দুর্নীতি দমন কমিশনকে অবহিত করেন। এরপর দুদক রমনা থানায় একটি এজহার দায়ের করেন। বিষযটি বিচারাধীন রয়েছে। এসব বিষয় উল্লেখ করে দুদককের মহা-পরিচালক বরাবর একটি আবেদন করা হয় এলাকাবাসির পক্ষে।
সূত্র মতে, কুদ্দুস হাওয়লাদারের বিরুদ্ধে গত মাসে দুদকের গণশুনানিতে লালবাগের বাসিন্দা গাজী শহিদুল্লাহ বলেন, তেজগাঁও সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দালাল চক্রের আস্তানা। ওই অফিসের রাসেল ছাড়া মামুন নামের আরো একজন রয়েছে যারা মূলত সাব-রেজিস্ট্রারের ঘুষের টাকা সংগ্রহ করে থাকেন। এ বিষয়ে কুদ্দুসের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, রাসেল তার অফিস স্টাফ নয়। তবে কেন একজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার রুমে থাকে, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি। এ সময় উপস্থিত সবাই সাব-রেজিস্ট্রার কুদ্দুস হাওলাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করার দাবি করলে দুদকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে অনুসন্ধানের ঘোষণা দেয়া হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সরকারি কর্মচারী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ