Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাড়ছে অপ্রচলিত পণ্য রফতানি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০১৮, ১২:০১ এএম

দেশের রফতানি বাজার মূলত পোশাকনির্ভর হলেও প্রধান রফতানি পণ্যের মধ্যে আরও রয়েছে পাট, চামড়া ও চিংড়ি। তবে প্রতিযোগিতামূলক রফতানি বাজারে টিকে থাকতে পণ্য বহুমুখীকরণ ও বিকল্প বাজারে নজর দিচ্ছেন রফতানিকারকরা। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধান বা পরিচিত পণ্যের পাশাপাশি রপ্তানি পণ্যের তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছে নতুন নতুন পণ্য। বেশ কয়েক বছরে এসব অপ্রচলিত পণ্য ধীরে ধীরে রফতানি বাজারে নিজেদের জায়গা দখল করে নিচ্ছে। চলতি অর্থবছরেও এসব পণ্য রফতানি বেড়েছে, যা আশা জাগাচ্ছে রপ্তানি আয়ের উচ্চ প্রবৃদ্ধিতে। রফতানিকারকরা বলছেন, অপ্রচলিত রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে- মসলা, শুকনা খাবার, আসবাবপত্র, হস্তশিল্প ও কুটির শিল্প, কাঠের তৈরি পণ্য, ফুল, ফল, কসমেটিক, প্লাস্টিক, চুলা বা পরচুলা, টুপি ইত্যাদি। গুণগত মানের কারণে বিভিন্ন দেশে এসব পণ্যের চাহিদাও বাড়ছে। ফলশ্রæতিতে বেশকিছু পণ্যে আগের বছরের চেয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া অর্থবছরে কয়েকটি পণ্যের আয় লক্ষ্যমাত্রাকেও ছাড়িয়ে গেছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ২০১৭-১৮ অর্থবছরের পরিসংখ্যানেও এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ইপিবির সর্বশেষ তথ্যমতে, আসবাবপত্র রপ্তানিতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৬ কোটি ৩১ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং আগের বছরের চেয়ে ২০ দশমিক ২৭ শতাংশ বেশি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আসবাবপত্রে আয় এসেছিল ৫ কোটি ২৫ লাখ ডলার। আর ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আয় ছিল ৪ কোটি ৬২ লাখ ডলার।
মসলা রফতানিতে গেল অর্থবছরে আয় হয়েছে ৪ কোটি ২৯ লাখ ডলার। এ সময় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ কোটি ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং আগের বছরের চেয়ে রপ্তানি বেড়েছে ২২ দশমিক ৮০ শতাংশ। ২০১৬-১৭ বছরের এ আয় ছিল ৩ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। এর আগের বছর ছিল ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার। শুকনো খাবার রফতানিতে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে গেল অর্থবছরে। পুরো বছরে আয় হয়েছে ২০ কোটি ১৩ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬১ দশমিক ১০ শতাংশ এবং আগের বছরের চেয়ে ৮৩ দশমিক ৭১ শতাংশ বেশি। ওই বছরের আয় ছিল ১০ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আয় ছিল ৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
এদিকে ওষুধ রফতানিতে ১০ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ১০ কোটি ৩৪ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং আগের বছরের চেয়ে ১৬ শতাংশ বেশি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ৮ কোটি ৯১ লাখ ডলার। এর আগের বছর যা ছিল ৮ কোটি ২১ লাখ ডলার। হস্তশিল্পে ১ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ১ কোটি ৬৬ লাখ ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৪ দশমিক ৩১ শতাশং এবং আগের বছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি। ওই বছর আয় হয়েছিল ১ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এ আয় ছিল ১ কোটি ২ লাখ ডলার। কাগজ ও কাগজের তৈরি পণ্যে আয় হয়েছে ৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের। রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ কোটি ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২৬ শতাশং এবং আগের বছরের চেয়ে ৩৩ শতাংশ বেশি আয় এসেছে এ খাত থেকে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এতে আয় ছিল ৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। তার আগের বছর যা ছিল ৪ কোটি ২১ লাখ ডলার। সুতা ও সুতাজাত পণ্যে ১২ কোটি ৩০ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ১২ কোটি ৪৮ লাখ ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং আগের বছরের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি। কসমেটিকে ৯০ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৭ লাখ ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ কম হলেও আগের বছরের চেয়ে ৭ শতাংশ বেশি। পাদুকা (চামড়া তৈরি ব্যতীত) রফতানিতে আয় হয়েছে ২৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭ কোটি ডলার। এতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯ শতাশং কম আয় হলেও আগের বছরের চেয়ে ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেশি আয় এসেছে। মানুষের চুল ও পরচুলায় রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ৫৮ শতাশং এবং আগের বছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে। ওই বছর আয় হয়েছিল ১ কোটি ৯৫ লাখ ডলার; যা ২০১৫-১৭ অর্থবছরে ছিল ১ কোটি ৭২ লাখ ডলার।
কিছু অপ্রচলিত পণ্যের আয়ে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিও উঠে আসে ইপিবির তথ্যে। পেট্রোলিয়াম উপজাতে আয় বেশ খানিকটা কমেছে। গেল অর্থবছরে ২৫ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে মাত্র ৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। রপ্তানি কম হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৬ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং আগের বছরের চেয়ে ৮৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। ওই অর্থবছরে এ খাতে আয় হয়েছিল ২৪ কোটি ৩৭ লাখ ডালার। আর ২০১৫-১৬ অর্থবছরের আয় ছিল ২৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এছাড়া রপ্তানি কমেছে রয়েছে টুপি, ফুল, ফল, প্লাস্টিক পণ্য ইত্যাদির।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রফতানি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ