পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যদি বাংলাদেশ জনগণ ভোট দেয়, আল্লাহর ইচ্ছা থাকে, হয়ত আবার সরকার গঠন করব। আর যদি না হয়, সরকার গঠন করব না। প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট-পিজিআরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অন্যদিকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) নতুন রাষ্ট্রদূতকে তিনি বলেছেন যে চলতি বছরের শেষের দিকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইইউয়ের নতুন রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তিরিঙ্ক গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁও কার্যালয়ে তার সাথে সাক্ষাৎকালে শেখ হাসিনা এ সব কথা বলেন।
সশস্ত্র বাহিনীকে সুশৃঙ্খল বাহিনী উল্লেখ করে চেইন অব কমান্ড মেনে চলার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সুশৃঙ্খলভাবে চললে যে কোনো লক্ষ্য অর্জন করা যাবে। ঊর্ধ্বতন যারা কর্মকর্তা তাদের অধীনস্তদের সুযোগ-সুবিধাও দেখতে হবে। আবার অধীনস্ত যারা, তারাও তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ মেনে শৃঙ্খলা বজায় রেখে কাজ করবে, সেটাই আমি আশা করি। কারণ, এটা যেহেতু সুশৃঙ্খল বাহিনী। কাজেই এর কমান্ড ঠিক থাকতে হবে এবং সবকিছু সুশৃঙ্খলভাবে চলতে হবে। তাহলেই যে কোনো লক্ষ্য আমরা অর্জন করতে পারব। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পিজিআর সদস্যদের কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ করে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদও জানান প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা আরো বলেন, চিরদিন আপনাদের কথা মনে থাকবে। রোদ, ঝড়-বৃষ্টি মাথায় করে যে দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করেছেন, সেটা আমার সবসময় মনে থাকবে। আগামী ডিসেম্বরের নির্বাচনে সরকার গঠন করতে না পারলেও পিজিআর সদস্যদের জন্য দোয়া সবসময়ই থাকবে বলে জানান শেখ হাসিনা।
২০০৮ সালে ও ২০১৪ সালে নির্বাচনে জিতে সরকার গঠনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বলতে গেলে এটা সাড়ে নয় বছর। অত্যন্ত কাছে থেকে আপনাদের সঙ্গে একইসাথে কাজ করেছি। ২০১৪ সালে নির্বাচন করে সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবারে এটা হচ্ছে আমাদের শেষ বছর। ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। যদি বাংলাদেশ জনগণ ভোট দেয়, আল্লাহর ইচ্ছা থাকে, হয়ত আবার সরকার গঠন করব। আর যদি না হয়, সরকার গঠন করব না। এসময় পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করতে ষড়যন্ত্রের কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ একটা সম্মানজনক অবস্থানে এসেছে। একটা চ্যালেঞ্জ এসেছিল আমার ওপর। দোষারোপ করতে চেয়েছিল পদ্মা সেতুর দুর্নীতির কথা বলে। দুর্ভাগ্য আমাদের দেশেরই বেশ স্বনামধন্য মানুষ, সামান্য একটা ব্যাংকের এমডির পদ বয়সের কারণে হারিয়ে সে প্রতিশোধ নিয়েছিল পদ্মা সেতুর অর্থ বন্ধ করে দিতে। এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কারণ দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য গড়তে আসিনি। এসেছি দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে। সেটা প্রমাণ হয়েছে, কোনো দুর্নীতি এখানে হয়নি। নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেটা করতে পেরেছি। এখন পদ্মা সেতু দৃশ্যমান। শেখ হাসিনা তার সরকারের সময় পিজিআর সদস্যদের আবাসনসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির কথা উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধুর সময় ১৯৭৫ সালের ৫ জুলাই এ রেজিমেন্ট গঠন করা হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে পিজিআর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর হারুন স্বাগত বক্তৃতা দেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী পিজিআর সদর দপ্তরে পৌঁছলে রেজিমেন্টের কোয়ার্টার গার্ড এ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং পিজিআর কমান্ডার তাকে অভ্যর্থনা জানান। প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত অফিসার, জুনিয়র কমিশনন্ড অফিসারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কুশল বিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে একটি সুসজ্জিত গার্ড রেজিমেন্ট প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। প্রধানমন্ত্রী রেজিমেন্টে কর্মরত অবস্থায় নিহত, শহীদদের স্বজনদের উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন এবং অনুদান হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান, প্রতিরক্ষা সচিব আখতার হোসেন ভূইয়া, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁও কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে ইইউয়ের নতুন রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তিরিস্ককে তিনি বলেন, রাষ্ট্রক্ষমতা ক্যান্টনমেন্টে অবরুদ্ধ থাকার সময় আওয়ামী লীগকে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের সুরক্ষায় আন্দোলন করতে হয়েছে।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইইউ প্রতিনিধির আশাবাদের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী এ আশ্বাস দেন। বৈঠকে বিদ্যমান পারস্পরিক হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশন এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ব্যবস্থা ও ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরি করতে সহায়তার জন্য ইইউকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন, সরকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে এবং পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্যে সব উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়িত হচ্ছে। তার প্রথম মেয়াদে ইইউ সদর দপ্তর পরিদর্শনের কথা স্মরণ করে বাংলাদেশকে ইইউয়ের অব্যাহত সমর্থনের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাট বোঝার সৃষ্টি করছে। তাদের নিরাপদ আশ্রয়, খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ অন্য সংস্থাগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে। তিনি বলেন, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা স্থানীয় জনসাধারণের চাষের জমি দখল করেছে। এতে স্থানীয় লোকজনের অর্থনৈতিক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।