Inqilab Logo

শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মৃত ব্যক্তির মাগফেরাতের আশায় লোক খাওয়ানো বা দরিদ্রকে খাওয়ানোর দ্বারা মৃত ব্যক্তির কোনো উপকার হবে কি?

মো. সালাম
ঢাকা

প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৮, ১২:২৯ এএম

আপনার প্রশ্নের মধ্যেই দু’টি বিষয় ভাগ করা আছে। একটি লোক খাওয়ানো, আরেকটি দরিদ্রকে খাওয়ানো। দরিদ্রকে খাওয়ানোর মধ্যে সওয়াব হওয়া ও মৃত ব্যক্তির উপকার হওয়ার মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই। ইসলামে ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান অন্যতম বিশেষ ইবাদত। মৃতের রূহে সওয়াব রেসানীর জন্য এটি একটি ভালো আমল। তবে ‘লোক খাওয়ানো’ নিয়ে একটু ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে। অন্য একটি ধর্মের বিশ্বাস যে, মৃত ব্যক্তির শ্রাদ্ধ না করলে তার আত্মা শান্তি পায় না। সেটি বাড়ির আশপাশে ঘুরে বেড়ায়, অনেক সময় জীবিতদের জ্বালাতন করে ইত্যাদি। ইসলামে এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল ও অমূলক। আমাদের সমাজে শ্রাদ্ধের অনুসরণে এক ধরনের লোক খাওয়ানো চালু ছিল। একে দোয়া দুরুদের মিশ্রণসহ একটি মেলা বা লোক খাওয়ানোর চাপিয়ে দেয়া অনুষ্ঠান বললেও ভুল হবে না। ঢাকা বিভাগে এ মেলার নাম, খরচা বা খরচ। বলা হয় তার বাবার মৃত্যুর খরচের খানা খেয়ে এলাম। অনেক অঞ্চলে বলে মেলা বা যিয়াফত, কোথাও বলে মেজবানী খানা। এসবে বাড়িওয়ালা ও ধনী-গরীব সবাই খানা খায়। সুতরাং একে সরাসরি সাদাকাহ বলা যায় না। এতে সওয়াব হওয়ার কথা নয়। এক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি ভাগ না করে, অনেক নাবালক ওয়ারিশ থাকা সত্তে¡ও এমন কি তারা খুব গরীব হওয়া সত্তে¡ও সমাজের মানুষ মৃতের জন্য একটি বড় খরচে তাদের বাধ্য করে। ইচ্ছা বা সংগতি না থাকলেও তাদের বড় একটি যিয়াফত করতে হয়। এমনকি সমাজের চাপে এ পরিবারটি ঋণ করে হলেও এ রসম পূরণ করে। এরকম দাওয়াত ক্ষেত্র বিশেষে অবৈধ ও গোনাহের কাজ। কারণ এখানে জুলুম ও কুসংস্কার পাওয়া যায়। তবে যদি শ্রাদ্ধের বিকল্প বা সমাজের চাপ মনে না করে কেউ মন থেকেই সবার জন্য একটি উন্মুক্ত খানার আয়োজন করে এটি জায়েজ হতে পারে। সৌজন্যমূলক দাওয়াত হিসাবে আল্লাহ সওয়াবও দিতে পারেন। তবে মাগফেরাতের জন্য যে খানা তা শুধু দরিদ্রদের জন্যই হতে হবে। এতে ধনীরা শরীক হতে পারবে না।
সূত্র: জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফতওয়া বিশ্বকোষ।
উত্তর দিয়েছেন: আল্লামা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী

ইসলামিক প্রশ্নোত্তর বিভাগে প্রশ্ন পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]



 

Show all comments
  • Md. Rashidul IslamKhan ৩০ অক্টোবর, ২০২২, ৬:৩২ পিএম says : 0
    সঠিক উত্তর চাই
    Total Reply(0) Reply
  • নবী হোসেন ২৩ অক্টোবর, ২০২২, ৮:৪৫ এএম says : 0
    মাশাল্লাহ খুব সুন্দর একটা উত্তর দিয়েছেন হযরত কোরআন ও হাদিসের আলোকে।
    Total Reply(0) Reply
  • আর সুধারাম চক্রবর্তী ৪ জুলাই, ২০১৮, ৩:০৯ এএম says : 0
    Dhonnobad apnake, Dhormo asholei manob jatir kollayaner jonne. It's not about showing your wealth.
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ মুন্নাফ হোসেন ৪ জুলাই, ২০১৮, ৬:০৭ এএম says : 0
    এই ব্যাপারে কথা বলার জন্য অভিনন্দন
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ৪ জুলাই, ২০১৮, ৪:০৪ পিএম says : 0
    Thanks,eakta jukti shonggoto uttor pailam,alhamdulillah.ashole islame kono kisoi ojaoktiq noy...
    Total Reply(0) Reply
  • Rumi parvin ২৬ মার্চ, ২০২১, ৯:০০ এএম says : 0
    আসসালামু আলাইকুম, আমি ছোটবেলা থেকে দেখছি মৃত ব্যক্তি জন্য ৪ দিন বা চল্লিশা করে, আর হালুয়া আর রুটি ৩ টা মসজিদে দেয়,এইগুলো হাূিসের আলোকে আছে কি না জানবেন
    Total Reply(0) Reply
  • মো নাইম শিকদার ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৮:২১ পিএম says : 0
    আমাদের সমাজে কোন ব্যাক্তি মারা গেলে জোমাত খাওয়ানো হয় এবং গ্রামের প্রায় সকলকে দাওয়াত দেওয়া হয়
    Total Reply(0) Reply
  • সানজিদা সুলতানা ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১১:৪২ এএম says : 0
    আমার বাবা মারা গেছে এখন আমি কি চল্লিশা করতে পারব? এতিমখানার কিছু বাচ্চাদের ও কয়েকজন হুজুর দিয়ে মিল্লাদ পরিয়ে? জানাবেন প্লিজ
    Total Reply(0) Reply
  • সানজিদা সুলতানা ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১১:৪৩ এএম says : 0
    আমার বাবা মারা গেছে এখন আমি কি চল্লিশা করতে পারব? এতিমখানার কিছু বাচ্চাদের ও কয়েকজন হুজুর দিয়ে মিল্লাদ পরিয়ে? জানাবেন প্লিজ?
    Total Reply(0) Reply
  • Md Jashim Uddin ৬ মার্চ, ২০২৩, ১০:৪৩ পিএম says : 0
    মৃত ব্যক্তির সওয়াবের উদ্দেশ্যে চার দিন, চল্লিশ দিন কিংবা মেজবানি করা জায়েজ নেই। এইগুলো বেদআত। এগুলো এখন আমাদের সমাজে খুব প্রচলিত হয়ে পড়েছে। এগুলো পুরোটাই বেদআত। কুলখানি, মেজবানি—এসব বিধান একদমই বেদআত। এটাকে বিধান করার ফলে এটা বেদআত। কিন্তু বিধান না করে, যেকোনো সময় মৃত ব্যক্তির জন্য খাওয়ানো জায়েজ। একদম চার দিনেই করতে হবে, ৪০ দিনে করতে হবে—এসব বিধান জায়েজ নেই। অনেক আলেম এটাকে বেদআত বলেছেন। বেদআতি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করাও জায়েজ নেই। তবে, বিধান না করে যেকোনো কেউ মৃত ব্যাক্তির জন্য খাবার খাওয়ালে সেখানে যাওয়া জায়েজ। শুধু বিধান না করলেই হলো। এটা যেকোনো সময়েই করা যায়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রশ্ন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ