পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৮৩০০ টাকা করা ১৬টি গ্রেডে ভাগ করে বেতনকাঠামো অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার রাজধানীর তেজগাঁয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫ এর সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানে কমর্রত শ্রমিকদের মজুরি-স্কেল ও ভাতা অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, সময়ে সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণে কমিশন করা হয়, তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে স্কেল নির্ধারণ করা হয়। সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন বেতন কাঠামো প্রস্তাব করা হয়েছিল। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি হবে ৮ হাজার ৩০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ মজুরি ১১ হাজার ২০০ টাকা। আগে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৪ হাজার ১৫০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৬০০ টাকা ছিল।
২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে নতুন মজুরি এবং ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে ভাতা কার্যকর হবে। নতুন কাঠামো অনুযায়ী, দ্বিতীয় গ্রেডের মূল স্কেল হবে ৮ হাজার ৪০০ টাকা, এত দিন ছিল ৪ হাজার ২০০ টাকা। তৃতীয় গ্রেডের মূল স্কেল হবে ৮ হাজার ৫৫০ টাকা, এত দিন এটা ৪ হাজার ২৭৫ টাকা ছিল। চতুর্থ গ্রেডে মূল স্কেল ৮ হাজার ৭০০ টাকা, যা বর্তমানে ৪ হাজার ৩৫০ টাকা। পঞ্চম গ্রেডে মূল স্কেল ৮ হাজার ৮৫০ টাকা, বর্তমানে আছে ৪ হাজার ৪২৫ টাকা। ষষ্ঠ গ্রেডে মূল স্কেল ৯ হাজার টাকা, বর্তমানে আছে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। সপ্তম গ্রেডে মূল স্কেল হবে ৯ হাজার ১৫০ টাকা, বর্তমানে আছে ৪ হাজার ৫৭৫ টাকা। অষ্টম গ্রেডে হবে ৯ হাজার ৩০০ টাকা, বর্তমানে আছে ৪ হাজার ৬৫০ টাকা। নবম গ্রেডে হবে ৯ হাজার ৪৫০ টাকা, বর্তমানে আছে ৪ হাজার ৭২৫ টাকা। দশম গ্রেডে হবে ৯ হাজার ৬০০ টাকা, আছে ৪ হাজার ৮০০ টাকা। ১১তম গ্রেডে হবে ৯ হাজার ৭৫০ টাকা, আছে ৪ হাজার ৮৭৫ টাকা। ১২তম গ্রেডে হবে ৯ হাজার ৯০০ টাকা, আছে ৪ হাজার ৯৫০ টাকা। ১৩তম গ্রেডে হবে ১০ হাজার ৫০ টাকা, আছে ৫ হাজার ২৫ টাকা। ১৪তম গ্রেডে হবে ১০ হাজার ২০০ টাকা, আছে ৫ হাজার ১০০ টাকা। ১৫তম গ্রেডে হবে ১০ হাজার ৩৫০ টাকা, আছে ৫ হাজার ১৭৫ টাকা। ২০১৫ সালে সরকারি চাকুরেদের বেতন বাড়ানোর পর রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খানকে চেয়ারম্যান করে জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫ গঠন করা হয়। এই কমিশন গত বছরের ৪ জুলাই প্রানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেয়। রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম ৮ হাজার ৩০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৬০০ টাকা মজুরি নির্ধারণের সুপারিশ করেছিল। সর্বশেষ জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন ২০১০ এ রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়িয়ে সর্বোচ্চ মজুরি ৫ হাজার ৬০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৪ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর পর তৈরি পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনঃনির্ধারণ করা হয় ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর। তিন হাজার টাকা মূল বেতন ধরে ৫ হাজার ৩০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি ঠিক করা হয়েছিল তখন। নতুন কাঠামোয় ওই বেতন তারা পাচ্ছেন ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে। কয়েক বছরের মূল্যস্ফীতিতে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ায় শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়ে ১৬ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়ে আসছে শ্রমিক সংগঠনগুলো।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানার শ্রমিকরা আগের মতই মূল মজুরির ৫০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া, দেড় হাজার টাকা চিকিৎসা ভাতা, মূল বেতনের সমান দুটি করে উৎসব ভাতা, ছুটি নগদায়ন অথবা অবসরকালীন ১৮ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ ল্যাম্প-গ্রান্ট এবং মূল বেতনের ১০ শতাংশ কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড সুবিধা পাবেন। এছাড়া প্রতি বছর চাকরির জন্য দুই মাসের মূল মজুরির গ্র্যাচুইটি, মূল মজুরির ৩০ শতাংশ তবে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা পাহাড়ি ভাতা, প্রতি রাতে ঘণ্টাপ্রতি ১৫ টাকা হারে সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টা নাইট শিফট ডিউটি ভাতা, ২০ শতাংশ হারে নববর্ষ ভাতা এবং বার্ষিক ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পাবেন।
শফিউল আলম বলেন, এর বাইরে প্রতি মাসে ২০০ টাকা যাতায়াত ভাতা, ১০০ টাকা ধোলাই ভাতা, ২০০ টাকা টিফিন ভাতা, মূল মজুরির ১০ শতাংশ তবে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা রোটেটিং শিফট ডিউটি ভাতা এবং ৪০০ টাকা করে ঝুঁকি ভাতা পাবেন রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানার শ্রমিকরা। নতুন মজুরি কাঠামোয় শ্রমিকদের জন্য আগের মতই গ্রæপ ইন্সুরেন্স সুবিধা রাখা হয়েছে। এক সন্তারের জন্য ৫০০ টাকা এবং দুই সন্তানের জন্য মাসে এক হাজার টাকা শিক্ষা সহায়তা ভাতা পাবেন তারা। আর নারী শ্রমিকরা পাবেন ছয় মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি।
দরপত্রহীন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ক্রয়ের প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদন মন্ত্রিসভায়
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রæত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) আইন, ২০১৮ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এছাড়া মাছ আমদানির ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক জীবাণু বহন প্রতিরোধে শাস্তির বিধান রেখে নতুন আইনের অনুমোদন দিয়েছে।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রæত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) আইন, ২০১৮’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ সংক্রান্ত মূল আইনটি ২০১০ সালের। সময়ে সময়ে এটার টাইম বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ এই আইনটির টাইম ৪ বছর বাড়ানো হয়েছে ২০১৪ সালে। সেই সময় ১১ অক্টোবর শেষ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, এজন্য আরও তিন বছর যুক্ত করে আইনটি ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। অর্থাৎ এই আইনের মেয়াদ আরও ৩ বছর বাড়ানো হচ্ছে। দ্রæত পদক্ষেপ নিতে ২০১০ সালে এ আইনটি করা হয়েছিল। এই আইনে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিশেষ কমিটির মাধ্যমে নেগোশিয়েশনের মাধ্যমে চুক্তি সম্পাদনের বিধান রয়েছে। ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চাহিদা মেটাতে প্রচলিত দরপত্র পদ্ধতির প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে দ্রæত সময়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রকল্পগুলো অনুমোদনে ২০১০ সালে আইনটি করা হয়েছিল। পরে দু’দফা দুই বছর করে আইনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। এই আইনের আওতায় সরকার স্বল্পসময়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে, ওয়েবসাইটে প্রচার চালিয়ে বা ই- মেইলে যোগাযোগ করে বিশেষ কমিটির মাধ্যমে আলোচনা ও দর-কষাকষির মাধ্যমে বিদ্যুৎ বা জ্বালানি প্রকল্পের জন্য চুক্তি করতে পারে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মাছ আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ক্ষতিকারক জীবাণু বহন করে বা নিয়ে আসে সেটার জন্য কোনো আইন নেই। সবজির জন্য আইন আছে, এ আইনটি নতুন তৈরি করা হয়েছে। আমদানি বলতে পানি স্থল, আকাশপথে অন্য কোনো দেশ থেকে বাংলাদেশে কোনো পণ্য আনা। মৎস্য বলতে সব ধরনের কোমল ও কঠিন অস্থিবিশিষ্ট মাছ, স্বাদু ও লবণাক্ত পানির চিংড়ি, উভচর জলজ প্রাণী, কচ্ছপ, কুমির, কাঁকড়া জাতীয় প্রাণী, শামুক বা ঝিনুক জাতীয় জলজ প্রাণী, ব্যাঙ বা সরকারি প্রজ্ঞাপনে ঘোষিত জলজ প্রাণী। আইনে একটি সঙ্গনিরোধী কর্তৃপক্ষ গঠিত করার কথা বলা হয়েছে। তিনি বলেন, এই দায়িত্ব পালন করবে মৎস্য অধিদফতর। কর্তৃপক্ষকে অনেকগুলো দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশে মাছের রোগ-জীবাণু অনুপ্রবশ ও বিস্তার রোধে মৎস্য, মৎস্যপণ্য, উপকারী জীবাণু বা প্যাকিং দ্রব্যাদির আমদানি নিয়ন্ত্রণসহ ১০টি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এমন আইন পৃথিবীর মোটামুটি প্রায় সব দেশেই আছে, আমোদের দেশে ছিল না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই আইনে নতুন বিধান রয়েছে। পুলিশ, র্যাব, কাস্টমস, বিজিবি, কোস্টগার্ড, ডাক বিভাগ, বন্দর কর্তৃপক্ষ, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, রেলওয়ে, শিপিং এজেন্সিসহ সমজাতীয় এজেন্সিগুলোর কর্মকর্তা এ আইনের পরিপন্থি কার্যক্রম রোধ করতে পারবেন। এছাড়া মৎস্য সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তাকে ক্ষমতা প্রয়োগ ও সহায়তা করতে পারবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।