পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
স্টাফ রিপোর্টার: রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে এমপিকরণের দাবিতে টানা ১৩ দিনের মতো জাতীয় প্রেস ক্লাবের উল্টো দিকে অবস্থান করছেন নন-এমপিও শিক্ষক কর্মচারীরা। গতকাল সকাল থেকেই এখানে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন ¯েøাগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ি শক্রবার সকাল ১০টায় ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভুষণ রায় এর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি শিক্ষক প্রতিনিধি দল প্রেসিডেন্টের নিকট স্মারকলিপি প্রদানের জন্য যান। এদিকে আন্দোলনে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা (স্কুল-কলেজ-মাদরাসা) যোগ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। আন্দোলন থেকে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ‘এমপিও না দিলে বাড়ি ফিরে যাবো না’; ‘একদফা দফা এক দাবি এমপিওভুক্তিকরণ চাই’; ইত্যাদি বিভিন্ন লেখা সংবলিত পাøকার্ড হাতে ¯েøাগানে প্রেস ক্লাব এলাকা উত্তাল হয়ে উঠে।
শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারী হিসাব মতে সারা দেশে পাঁচ হাজার ২৪২টি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি) কর্মরত প্রায় আশি হাজার শিক্ষক-কর্মচারিগণকে এমপিওভুক্তির দাবিতে বিগত দিনগুলোতে ২৭ বার ঢাকায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করার পরও এমপিওভুক্তির দাবী আদায় না হওয়ায় ২৭তম কর্মসূচি ২০১৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ৫ জানুয়ারী ২০১৮ অনশন চলাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে একান্ত সচিব মোঃ সাজ্জাদুল হাসান, শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আমাদের দাবি, সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করার প্রতিশ্রæতি দেন।
শিক্ষকরা বলেন, আমরা ৭ জুন ২০১৮-২০১৯ প্রস্তাবিত বাজেট প্রত্যক্ষ করে হতবাক যে, প্রধানমন্ত্রী এমপিওভুক্তির প্রতিশ্রæতি দেয়ার পরও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। খবরটি সারা দেশের নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষকরা আহাজারি আর্তনাদে ও বিক্ষোভে ফেটে পড়ে, তাই পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ি ১০ জুন পবিত্র রমজান মাসে সারা দেশ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তারা অবস্থান গ্রহণ করেন। শিক্ষকরা পুলিশি বাধা, গ্রেফতার, বৃষ্টি বাদলা, রৌদ্র ও ভ্যাপসা গরম, রাতে মশার কামড় খেয়ে কুকুর বেড়ালের মত রাজপথে আজকে ১৩তম দিন পর্যন্ত অবস্থান করছে। শুধু তাই নয় শিক্ষকরা পিতা-মাতা, স্ত্রী-পুত্র, কন্যা, ভাই-বোন, আতœীয়-স্বজন এবং প্রতিবেশিদের ছেড়ে পবিত্র ঈদ-উল ফিতরের নামায আদায় করেছেন রাজপথে। নামায শেষে বুকভরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে সান্তনা নিয়েছেন, শান্তনা দিয়েছেন অবশেষে রাজপথে ভুখা মিছিল করেছেন। এর পরও শিক্ষামন্ত্রীর বোধোদয় হয়নি। শিক্ষকরা মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী ইচ্ছা করেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতি ‘সকল স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি’ বাস্তবায়ন না করে শিক্ষকদের রাজপথে ঠেলে দিয়ে নানা ধরনের খেলা খেলছেন।
উল্লেখ্য, এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন। টানা ওই অবস্থান ও অনশনের একপর্যায়ে ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার তৎকালীন একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান সেখানে গিয়ে আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, নতুন অর্থবছরে নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেন, সেখানে তিনি নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলেননি। তারপর থেকেই এমপিওভুক্তির দাবিতে টানা ১৩ দিন ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন নন এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।