পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : ব্যাংক ঋণের সুদ হার এক অঙ্কে নেমে আসলে দেশে বিনিয়োগ আরো গতি পাবে। ব্যবসা বাণিজ্যে প্রাণের সঞ্চার হবে। এতে শিল্পের বিকাশ হবে। বিনিয়োগ বাড়বে। যার ফলে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বাড়বে। তবে এর মাধ্যমে আগ্রসী ব্যাংকিং করে ব্যাংক খাতে বিদ্যমান সঙ্কট যাতে আরো গভীর হতে না পারে সেটি তদারকি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর উদ্যেক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স (বিএবি) এ কথা জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর বিএবি বলছে, এটি সরকারের চাপিয়ে দেওয়া কোন সিদ্ধান্ত নয়।
গত বুধবার ব্যাংক ঋণের সুদ হার সর্বোচ্চ নয় শতাংশ এবং আমানতের সুদ হার ৬ শতাংশ বেধে দিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা জানায় বিএবি। বিএবি’র এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে আগামী ১ জুলাই থেকে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিএবি সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বিএবি প্রতিনিধি দলে স্যোসাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. সায়েদুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বিএবি’র সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়। এরপর বেরিয়ে যাওয়ার সময় বিএবি সভাপতি ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, মোট দেশজ উৎপাদন-জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বাড়ানোর সরকারের যে মহা পরিকল্পনা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে লক্ষ্য সেটির সঙ্গে তাল মেলাতে বেসরকারি খাতের ব্যাংকের উদ্যোক্তারা আমানত ও ঋণের সুদ হার পুনঃনির্ধারণ করেছে। এ সময় নজরুল ইসলাম মজুমদারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, আমানত ও ঋণের সুদ হার পুনঃনির্ধারণ করার ঘোষণার পর কেন বাংলাদেশ ব্যাংকে এসেছেন। জবাবে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও বিএবি সভাপতি বলেন, গত বুধবার আমরা সর্ব সম্মতিক্রমে ব্যাংক ঋণের সুদ হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছি। একই সঙ্গে আমানতের সুদ হার ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের অভিভাবক। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণকারি সংগঠন কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাই গভর্নর কে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিষয়টি জানাতে এসেছিলাম। বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের নীতি সহায়তা যাতে অব্যাহত রাখে।
নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, আমাদের (তফশিলি ব্যাংকগুলোর) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে উদ্যোক্তাদের সিদ্ধান্ত কার্যকর করবে। কিভাবে বিনিয়োগ বাড়াবে, কোথায় বিনিয়োগ বাড়াবে সেগুলো ঠিক করবে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা ও বাংলাদেশ ব্যাংক। সময় অল্প কয়েক দিন। তাই বাস্তবায়নে যেতে হবে।
তিনি বলেন, পুরনো ঋণের সুদ হার পুনর্বিবেচনা করা হবে। তবে পুরনো আমানতের সুদ হার অব্যাহত থাকবে। কিছুটা লোকসান হলেও তা ব্যাংকের মালিকরা মেনে নেবে। আমানতকারির স্বার্থ নষ্ট হবে না। তবে বিনিয়োগকারি ব্যবসায়িরা সন্তুষ্ট হবে। কারণ তারা কম সুদে অর্থ নিয়ে বিনিয়োগ করবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা দরকার। তাদের নীতি সহায়তা ও দিক নির্দেশনা জরুরি।
অনেক অর্থনীতিবিদ বলছেন এটি চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, এটি ঠিক না। তারা উদ্দেশ্যমূলক ভাবে বলছেন। আমরা এই সুদের হারে ৬ মাস আগেও ছিলাম। তাই যেতে পারব না কেন। আমি তাদের সঙ্গে একমত নই।
এদিকে বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিএবি’র সিদ্ধান্তে খুব সর্তক। তাই তাদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিনিয়োগ চাঙা করার নামে পুনঃনির্ধারিত সুদ হারে যাতে ব্যাংকের অর্থ বেরিয়ে না যায়। ঋণ দেওয়ার আগে ঋণের মান অর্থাৎ ফেরত পাওয়ার বিষয়টি যাচাই- বাছাই করতে হবে। মানহীন ভাবে ঋণ দেওয়া যাবে না। আগ্রাসী ব্যাংকিং করে যাতে বিদ্যমান সঙ্কট আরো গভীর না হয় সেটি তদারকি করা হবে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, আগামী সপ্তাহেই তফশিলি ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠক হতে পারে। সেখানে তাদের দিক নির্দেশনা দেওয়া হবে। এরপর জুলাই মাসের ২ তারিখে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের নিয়ে ব্যাংকার্স সভায় এ ব্যাপারে বিশদ আলোচনা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।