Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মা ও তিন বন্ধু মিলে বাবাকে খুন

গ্রেফতার ৫, মিরপুরে যুবকের লাশ উদ্ধার, মেরাদিয়ায় অন্তসত্ত¡া গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যা

| প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম


বিশেষ সংবাদদাতা : মা ও তিন বন্ধু মিলে বাবাকে হত্যা করেছে ছেলে। এমন নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে রাজধানীর মুগদা এলাকায়। পুলিশ নিহত শরবত বিক্রেতা রফিকুল ইসলামের (৪৮) লাশ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় রফিকুলের স্ত্রী নাছিম আক্তার বিথি (৪০), ছেলে রাব্বী (১৯) ও তার তিন বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে রাজধানীর সেনপাড়ায় হাত বাঁধা অবস্থায় অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বুধবার রাতে মিরপুরের সেনপাড়া পর্বতার সাত তারা মসজিদের পাশ থেকে হাত বাঁধা অবস্থায় ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের বয়স আনুমানিক ২২ বছর। এছাড়া মেরাদিয়া এলাকায় নাছিমা আক্তার (২২) নামের এক অন্তসত্বা গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মুগদা থানার ওসি এনামুল হক জানান, সাংসারিক অভাব-অনটন নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মাদকাসক্ত রফিকুলের প্রায় ঝগড়া হতো। ঝগড়ার এক পর্যায়ে গতরাতে (বুধবার দিবাগত) স্ত্রী বিথি, ছেলে রাব্বী ও তার তিনবন্ধু রফিকুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। নিহত রফিকুল বাগেরহাট সদর উপজেলার বেসরগাতি গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্ত্রী সন্তানসহ মুগদার উত্তর মানিকনগরের জয়নাল মিয়ার টিনসেড বাসায় ভাড়া থাকতেন।
এসআই রহিদুল ইসলাম জানান, রফিকুল শরবত বিক্রি করতেন। গত বুধবার দিবাগত রাতে বড় ছেলে রাব্বী তার তিন বন্ধুকে বাসায় ডেকে আনে। এরপর স্ত্রী বিথি, রাব্বী আর তার বন্ধুরা মিলে রফিকুলকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে ঘরে তালা দিয়ে তারা বাইরে বেরিয়ে যায়। ঘটনাটি প্রতিবেশীরা টের পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে মধ্যরাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রফিকুলের লাশ উদ্ধার করে। বিথি, রাব্বী ও তার তিন বন্ধুকে আটক করা হয়। তার বড় ছেলে রাব্বী দুই তিন বছর আগে মুগদায় ঘটে যাওয়া একটি হত্যা মামলার আসামি। তাদের আর এক সন্তান জিদনী (১৩) কে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।
মিরপুর থানার ওসি (তদন্ত) ওহেদুজ্জামান জানান, নিহত যুবকের বয়স আনুমানিক ২২ বছর। ধারণা করা হচ্ছে ওই যুবককে হাত বেঁধে ওই এলাকার কোনো ভবনের ওপর থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। একই সাথে নিহত ওই যুবকের পরিচয় নিশ্চিতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করছে পুলিশ। আঙ্গুলের ছাপের বা ছবির সঙ্গে মিলিয়ে দেখার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খিলগাও মেরাদিয়া এলাকায় নাছিমা আক্তার (২২) নামের এক অন্তসত্বা গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মাদকাশক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করে। নিহত নাছিমা ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার কালুয়া পাড়া গ্রামের মাবুদ আলীর মেয়ে। বর্তমানে খিলগাও মেরাদিয়া মধ্যপাড়া স্বামী ওহিদুল ইসলাম উজ্জ্বল এবং চার বছরের মেয়ে ফারজানাকে নিয়ে ভাড়া থাকতো। নাছিমার মা রোকেয়া বেগম জানায়, উজ্জ্বল স্থানীয় একটি মোটর গ্যারেজে কাজ করে এবং নেশা করে। নেশার টাকার জন্য মাঝে মাঝে নাছিমার সাথে ঝগড়া করতো।
তিনি আরও জানান, নাছিমা তিন মাসের অন্তসত্ত¡া ছিল। গত দুই সপ্তাহ আগে নেশার টাকা না পেয়ে নাছিমা কে পিটিয়ে আহত করে। পরে আহত অবস্থায় নাছিমাকে আদ্ব দীন হাসপাতালে ভর্তি করে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে অসুস্থ হয়ে পরলে দ্রæত তাকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করে। নাছিমার মায়ের অভিযোগ করে বলেন, স্বামীর মারের কারনে তার মৃত্যু হয়েছে। আমি আমার মেয়ের হত্যার বিচার চাই। একমাত্র মেয়েকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। খিলগাও থানার ওসি মশিউর রহমান জানায়, ঘটনাটি শুনেছি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ