Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রামে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ

বাস-ট্রেনে টিকিট নেই, সিডিউল বিপর্যয় যানজট

| প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রফিকুল ইসলাম সেলিম : বাস ও ট্রেনে টিকিট নেই। সিডিউলও এলোমেলো। সড়ক- মহাসড়কে যানজট, বিশৃঙ্খলা। দূরপাল্লার বাসের তীব্র সঙ্কট। এই সঙ্কটকে পুঁজি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও লক্কর-ঝক্কর বাসে ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমন। পথে পথে এমন দুর্ভোগ আর ভোগান্তি সঙ্গী করে চট্টগ্রাম থেকে শুরু হয়েছে ঘরে ফেরা। মহানগরীতে যানজট এখন স্থায়ী রূপ নিয়েছে। গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ আর জোয়ারে নগরীতে দুর্যোগ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পানিবদ্ধতা আর যানজটের কারণে দূরপাল্লার বাসগুলো নগরী থেকে বের হতে এবং প্রবেশ করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম-হাটহাজারী, চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ এই অঞ্চলের সবকটি সড়ক, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কের অবস্থা এখন বেহাল। ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে তাতেও যানজট আর বিশৃঙ্খলা কমানো যাচ্ছে না। নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে যেতে পারছে না যাত্রীবাহী কোন বাস।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র দুই থেকে তিনদিন। প্রিয়জনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে নগরীর বাসিন্দাদের বিরাট একটি অংশ গ্রামে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে ঘরে ফেরা। আজ সরকারি ছুটিতে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামবে। দূরপাল্লার বাসের আগাম টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন রুটে ট্রেনের টিকিটও শেষ। অগ্রিম টিকিটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। প্রতিটি ট্রেনের সাথে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হচ্ছে। সিট ছাড়া টিকিট বিক্রি হচ্ছে। তারপরও যাত্রীর চাপ সামাল দেয়া যাচ্ছে না। টিকিট ছাড়াই ট্রেনে উঠে পড়ছে ঘরমুখো মানুষ। ট্রেনের সিডিউলও এলোমেলো হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল রুটে সরাসরি কোন লঞ্চ নেই। বরিশালের যাত্রীদের ল²ীপুর হয়ে বাড়ি যেতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে বেশি মানুষ যাতায়াত করে বাসে। বৃহত্তর নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চাঁদপুরের পাশাপাশি চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৫ জেলায় যাত্রীদের বেশির ভাগই বাসে যাতায়েত করেন। এছাড়া বৃহত্তর বরিশাল, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, দিনাজপুর ও ফরিদপুর অঞ্চলের যাত্রীদেরও বাসের উপর নির্ভর করতে হয়। তবে দূর পাল্লার বাসের তীব্র সংকট রয়েছে। কাউন্টারগুলোতে যোগাযোগ করে জানা যায়, দূরপাল্লার বাসের আগাম টিকিট বিক্রি শেষ। এখন অতিরিক্ত বাস পাওয়ার পরই কেবল টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। আর যারা অগ্রিম টিকিট কিনেছেন তারাও সময় মতো গন্তব্যে যেতে পারছেন না। কারণ সড়ক, মহাসড়কে যানজটে বাসের সিডিউল রক্ষা করা যাচ্ছে না।
সরেজমিন ঘুরে পরিবহন চালক ও যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মহানগরীতে বের হতেই কয়েক ঘন্টা পার হয়ে যাচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ প্রতিটি সড়কেই আছে যানজট ও বিশৃঙ্খলা। গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে সড়ক-মহাসড়ক প্লাবিত হয়ে ব্যাপক খানাখন্দক সৃষ্টি হয়েছে। নগরীর কদমতলী বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায় বৃহত্তর নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চাঁদপুরের ৬০ রুটের বাস, মিনি-বাস। এছাড়া নগরীর অলংকার ও একেখান গেইট থেকেও এসব রুটের বাস ছাড়ে। ইপিজেড মোড়, বন্দরটিলা, স্টেশন রোড, দাম পাড়া, বায়েজিদ, বড়পুল, বিআরটিসি বাস টার্মিনাল, সাগরিকা, সরাইপাড়া ও একেখান থেকে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের দূরপাল্লার রুটের বাস ছেড়ে যায়। মহানগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে যাত্রীবাহী এসব বাস যাত্রার শুরুতেই যানজটের মুখোমুখি হচ্ছে। নগরী থেকে বের হতেই কয়েক ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। নগরীর প্রতিটি প্রবেশ পথেই এখন তীব্র যানজট।
বাসা থেকে রেব হয়ে টার্মিনাল বা বাস কাউন্টার পর্যন্ত পৌঁছতেও ঘরমুখো মানুষকে পরিবহন সঙ্কটের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এরপর এরসাথে আছে তীব্র যানজট। বাস চালকরা জানান, এই অঞ্চলের প্রায় সবকটি মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে যানজট হচ্ছে। সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে। তার উপর বেশির এলাকায় সড়ক ভাঙাচোরা। কোন কারণে একটি বাস বা ট্রাক রাস্তায় বিকল হলে যানজট লেগে যাচ্ছে। ফলে সড়কে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। আর তাতে গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হচ্ছে। মহাসড়কে যানজট কমাতে পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঈদের তিনদিন আগে মহাসড়কে ভারী যানবাহন চলাচল এবারও বন্ধ রাখা হচ্ছে। হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি সড়ক, মহাসড়কে থানা পুলিশও দায়িত্ব পালন করছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ