Inqilab Logo

বুধবার, ০৫ জুন ২০২৪, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ঈদের পর জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক

সিভিল এভিয়েশনের প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সিভিল এভিয়েশনের প্রকৌশল বিভাগের অনিয়ম দুর্নীতি ও অর্থ লুটপাটের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার প্রধান প্রকেশৈলীকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা থাকলেও মন্ত্রণালয়ের কাজে অধিকতর ব্যস্ত থাকার কারণ দেখিয়ে ঈদের পর হাজির হওয়ার জন্য সময় চেয়ে চিঠি দেন প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামী। এ জন্য ঈদের পরে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য জানিয়েছেন। উন্নয়নমূলক কাজে দুর্নীতি করার অভিযোগে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীকে আজ জিজ্ঞাসাবাদের কথা ছিল। প্রধান প্রকৌশলীর চিঠির প্রেক্ষিতে তাকে পরবর্তীতে ফের তলব করা হবে বলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে জানা গেছে। গত রাতে দুদক ও সিভিল এভিয়েশন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আজ সোমবার সেগুনবাগিচায় দুদকের কার্যালয়ে প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়। এলটিএম পদ্ধতিতে অনিয়ম ও দুর্নীতি মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারদের মাঝে বিভিন্ন উন্নয়ন ও রক্ষনাবেক্ষণের কাজ ভাগাভাগি করে গত ৭ বছরে প্রায় ৫ শতাধিক কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীর বিরুদ্ধে। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক খায়রুল হক ও আ. সালাম আলী মোল্লা পৃথকভাবে দুর্নীতির তদন্ত করছেন। কমিশনের খায়রুল হক সিভিল এভিয়েশনের প্রধান প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ তলব করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য এবং সিভিলএভিয়েশন জনসংযোগ বিভাগ।
জানতে চাইলে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান বলেন, আমি চেয়ারম্যান হিসাবে যোগদানের আগের বিভিন্ন কাজের অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে দুদক তদন্ত করছে। আমি চাই সিভিল এভিয়েশন একটি দুর্নীতি মুক্ত প্রতিষ্টান হিসাবে সুনামের সাথে কাজ করুক। বর্তমানে সকল কাজ ই-টেন্ডারের মাধ্যমে করার হচ্ছে। এলটিএম পদ্ধতিতে বা কোন ধরণের অনিয়মের মাধ্যমে কাজ করার সুযোগ এখন নেই।
দুদকের সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, সিভিল এভিয়েশনের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার মেসার্স ন্যাশনাল ট্রেডার্সের মালিক মো. আবদুল হামিদ,মেসার্স সগীর আহাম্মেদ এন্টারপ্রাইজের ছগির আহাম্মদ, মেসার্স নোমান এন্টারপ্রাইজের মো. দেলোয়ার হোসেনসহ ৯ প্রতিষ্ঠানের মালিককে বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চলতি বছরে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, ন্যাশনাল ট্রেডার্সসহ নয়টি প্রতিষ্ঠানের মালিক ব্যবসায়ী মো. আব্দুল হামিদ সিভিল এভিয়েশনের প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামী ও তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী এম. মাকসুদুল ইসলামকে নির্দিষ্ট হারে ঘুষ দিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েক শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করছে।
সিভিল এভিয়েশন জানায়,দুদক বিভিন্ন সময় সিভিল এভিয়েশনের প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলীদের নোটিশ দিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে দুদকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আজ প্রধান প্রকৌশলীকে আবার দুদকে যাওয়ার জন্য কয়েকদিন আগে নোটিশ পাঠিয়েছে।
সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুদকের নোটিশে বলা হয়, সিভিল এভিয়েশনের রক্ষণাবেক্ষণ, অবকাঠামো নির্মাণ, কেনাকাটা ও তহবিল ব্যবস্থাপনায় সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। অনেকে বাড়ি-গাড়িসহ অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। এসব বিষয়ে আজ সোমবার সকাল ১০টায় এসে প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীকে দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
সিভিল এভিয়েশন জানায়,সিভিল এভিয়েশনের বিভিন্ন উন্নয়নকাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পৃথক চিঠিতে আজ সোমবার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এসে শত শত কোটি টাকার অনিয়মের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিভিল এভিয়েশনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, সিভিল এভিয়েশনের প্রকৌশল বিভাগে দুর্নীতিবাজরা লুটপাট করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এদের কারণে পুরো সংস্থাটি বিতর্কিত হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্তের প্রয়োজন। সিভিল এভিয়েশনের প্রকৌশল বিভাগ বিভিন্ন কাজের নামে দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি আত্মসাতের বিষয়টি ওপেন সিক্রেট।
সূত্র জানায়, সিভিল এভিয়েশনের প্রধান প্রকৌশলীকে ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বেবিচকে কোন কোন প্রকল্পের কি কি ও কত টাকার কাজ হয়েছে এর তালিকা এবং দুই অর্থবছরে কেনাকাটা খাতে কত টাকা ব্যয় হয়েছে এর বিস্তারিত বিবরণ দুদক কার্যালয়ে জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া নির্মাণ ও সংস্কার খাতে কত ব্যয় হয়েছে এর বিবরণ, আইটি খাতে কত বরাদ্দ ছিল এবং কী কী কাজ করা হয়েছে তার বিবরণ এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সব ধরনের অডিট প্রতিবেদন নিয়ে দুদকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।
এ ব্যপারে প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামী কোন ধরণের বক্তব্য দিতে রাজি হননি। #



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ