পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, কারাগারে থাকা ৩৯ শতাংশ বন্দি মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। গতকাল শনিবার রাজধানীর বিআইআইএসএস মিলনায়তনে ‘মাদকবিরোধী অভিযান ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের কারাগারের ধারণক্ষমতা ৩৫ হাজার। বর্তমানে সেখানে ৮৬ হাজার ৩৩৯ বন্দি রয়েছেন, যার ৩৯ শতাংশই মাদকের সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে অনেককে আটক করা হয়েছে। পরে অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এমনকি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অনেককে সাজা দেওয়া হয়েছে।
মাদকবিরোধী অভিযানে বন্দুকযুদ্ধের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, যেখানে মাদক আছে সেখানে অবৈধ টাকা ও অস্ত্র আছে। সুতরাং সেখানে অভিযান চালাতে গেলে ফায়ারিং হবেই। কক্সবাজার জেলার টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর একরামুল হক নিহতের বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। কেউ ভুল করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, অভিযানে যে শুধু বন্দুকযুদ্ধ হচ্ছে তা না। এই অভিযান সর্বমহলে প্রশংসিত হচ্ছে। অনেকে আমাকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ইয়াবার চোরাচালানের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশে ইয়াবা পাঠাচ্ছে। আমি মিস সুচিকে এ বিষয়ে জানিয়েছিলাম। তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ইয়াবার সবচেয়ে বড় রুট হলো নাফ নদী। ইয়াবার চোরাচালান বন্ধ করতে আমরা ওই নদীতে জেলেদের মাছ ধরতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন,আমাদের দেশ, তরুণ ও যুব সমাজকে বাঁচাতে আমরা মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। যে কোনো মূল্যে এ যুদ্ধে আমাদের জয়ী হতে হবে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনে বিআইআইএসএস মিলনায়তনে মাদকবিরোধী এক আলোচনা সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে। কারণ দেশের মানুষ অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে তা অব্যাহত রাখার জন্য অনুরোধ করছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,মাদক বিরোধী অভিযানের সময় দুই একটি বিচ্ছিন ঘটনা ঘটতে পারে,তবে কাউকে হত্যা করা হচ্ছে না। মাদক আমাদের যুব-সমাজকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছিল। আমার তাদের সেই ধ্বংসের পথ থেকে ফিরাতে চেষ্ট করছি। দেশ এবং জাতির স্বার্থেই জঙ্গি বিরোধী অভিযানের মতো মাদক বিরোধী সাঁড়াশি অভিযান চলছে।
মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিসা বারের ভেতরে নতুনভাবে মাদকে উদ্ভব হচ্ছে। যা যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এই কারণে আমরা মাদক আইনের সংশোধন করছি। ওই আইনে সিসাকেও মাদক হিসেবে রাখা হবে। আমরা আইন সংস্কার করে সিসা বারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবো।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে ইয়াবা ট্যাবলেটের বিষয়ে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক চুক্তিও হয়েছে। সেই সবগুলোয় মিয়ানমার স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু তারা ইয়াবা বন্ধের বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। এ বিষয়ে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সাং সু চির সঙ্গেও কথা বলেছি, কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাইনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে টেকনাফ যাই। সেখানে মাদকের পরিস্থিতি দেখে দুই থানার ওসি থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত সবাইকে বদলি করে দিয়েছি। আমাদের সীমান্তে একটি বিওপি থেকে অন্য বিওপিতে যেতে অনেক সময় লাগে। এরমধ্যে রাস্তা ভালো না। আমরা সেখানে রাস্তা তৈরির জন্য চেষ্টা করছি। যেন বিজিবি ওইসব এলাকায় সহজে টহল দিতে পারে। নাফ নদী দিয়ে রোহিঙ্গা আসা বন্ধের পর সেখান দিয়ে ইয়াবা আসে না। ওইসব অঞ্চলে বিজিবি ও কোস্টগার্ড বোটে করে তাদের টহল অব্যাহত রেখেছে। সেখানে মাছ ধরাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, যেখানে অবৈধ মাদক, সেখানেই অবৈধ টাকা ও অবৈধ অস্ত্র থাকে। ফলে সেসব স্থানে অভিযানে গেলে ফায়ারিং তো হবেই।
একরামুল হকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। কেউ যদি এ অভিযানে ভুল করে থাকে, তবে আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।
মাদকবিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অভিযানে শুধু বন্দুক যুদ্ধে নিহত হচ্ছে, তা নয়। বর্তমানে সারা দেশের কারাগারে ৮৬ হাজার বন্দি রয়েছে। এর মধ্যে ৩৯ শতাংশই মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী। এতেই বোঝা যায়, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা শুধু বন্দুকযুদ্ধ করছি না, সাজা দিয়ে আসামীদের কারাগারেও পাঠানো হচ্ছে। তিনি বলেন, চলমান অভিযানের পর অনেকেই আমাকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের জনবল কম ছিল। প্রতি তিন জেলার জন্য একজন ছিল। তবে এবার দেশের প্রতিটি জেলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের আলাদা ইউনিট তৈরি করেছি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালন (ডিজি) মো. জামাল উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে গোলটেবিল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান, প্রমিসেস মেডিক্যাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাহেদুল ইসলাম হেলাল, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক ড. এম এনামুল হক, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম ইমদাদুল হক প্রমুখ। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।