পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বর্তমানে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী। ২০২০ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ হাজার মেগাওয়াট। আগে আমরা ঠিক করেছিলাম ২০২৪ সালে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুৎ খাতের ২২ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখেন যা গত অর্থবছরের তুলনায় ৪ হাজার ৪২ কোটি টাকা বেশি। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ খাতে এই বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব করেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী। সরকারের ৯ বছরের চেষ্টায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা ২৭টি থেকে ১১৮টি উন্নীত করা হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা তিন গুণ বেড়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৫৩ মেগাওয়াট। সর্বোচ্চ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে ১০ হাজার ৯৫৮ মেগাওয়াট। তিনি বলেন, ২০২০ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ হাজার মেগাওয়াট। আগে আমরা ঠিক করেছিলাম ২০২৪ সালে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করব। কিন্তু এখন ২০২০ সালেই ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে যাচ্ছে। গত ৯ বছরে ২ হাজার ৬২২ সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন এবং এক লাখ ৭৪ হাজার কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, সিস্টেম লস ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ১১ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হবে। উৎপাদনক্ষমতা যথাক্রমে ২০৩১ সালে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২৯৪১ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হবে। উৎপাদনক্ষমতা বাড়াতে বর্তমানে ১৫ হাজার ২০৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৫৯টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।এছাড়া ৪ হাজার ৪৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। ভবিষ্যতে আরও ২২ হাজার ৫২ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও ২০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা আছে সরকারের। তিনি বলেন, রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট, মাতারবাড়িতে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট, পটুয়াখালীর পায়রায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ করছে। এছাড়া মহেশখালীতে ১০ হাজার মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ব্যক্তি মালিকানাধীন খাত দেশি ও বিদেশি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার সহায়তায় পাবনার রূপপুরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রথম পর্যায়ের কাজ চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ শেষ হবে। প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ভেড়ামারা-বহরমপুর লাইন এবং উপকেন্দ্রের ক্ষমতা বাড়ানোর হচ্ছে। ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে ত্রিদেশীয় সমঝোতা চুক্তি সই চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এছাড়া নেপাল, মিয়ানমার ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যে আলোচনা চলছে।
আজ সফল হয়েছি
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে আমার গর্বের বিষয় হলো যে, বিগত শতাব্দীর ৭০ ও ৮০’র দশকে আমি ‘বিশ্ব ভিক্ষুক’ বলে অবহেলিত হয়ে আজকে সফল একজন অর্থমন্ত্রীর স্থান পাচ্ছি। তিনি বলেন, দ্রæততম সময়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের রূপরেখা বাস্তবায়নে আমাদের সরকারের ঈর্ষণীয় সক্ষমতা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এটি শুধু আমাদের দাবি নয়, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সত্য।
মুহিত বলেন, ‘তলাবিহীন ঝুঁড়ি’ বলে একদিন যে দেশকে অবজ্ঞা করা হয়েছে, সে দেশ বিশ্ববাসীর কাছে এখন এক ‘উন্নয়ন-বিস্ময়’; বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রা এখন বিশ্বের রোল মডেল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেট পেশ করতে গিয়ে দেশবাসীর কাছে বিগত দশ বছরে আমাদের অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, কিছু ভাবনা আর কিছু স্বপ্ন তুলে ধরলাম। বলা বাহুল্য, আমাদের বিশাল কর্মযজ্ঞের বিস্তৃত উপাখ্যান তুলে ধরার সুযোগ এখানে তেমন থাকেনা; কিছুটা আভাস দেয়া যায় মাত্র। আমার বিরূদ্ধে অভিযোগ হলো যে, আমি লম্বা ও বিস্তৃত বাজেট বক্তৃতা দেই। সেটা ঠিক বটে, তবে এ বক্তব্য দেয়ার উদ্দেশ্য হলো জনগণের দৃষ্টি বাজেটের প্রতি নিবদ্ধ করা। সেক্ষেত্রে যথেষ্ট সাফল্য এসেছে বলে আমার মনে হয়। বাজেট বক্তৃতা জনগণ শুনেন অথবা সময়ে সময়ে পাঠ করেন। জটিল বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। বাজেট প্রস্তাব বুঝতে সক্ষম হন। বাজেটে আগ্রহ এখন সারা দেশব্যপী বিস্তৃত। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা আমাকে বিস্মিত ও স্বপ্নচারী করে। আমি অবাক বিস্ময়ে দেখি কতটা আঘাত সহ্য করে ঘুরে দাঁড়াতে পারে এদেশের জনগণ, স্বল্প সম্পদ ও সীমাহীন সীমাবদ্ধতার মাঝে ‘বাসকেট কেস’ এর অপবাদ কাটিয়ে একটি দেশ কিভাবে ‘উন্নয়ন বিস্ময়’ হয়ে উঠে। যে দেশের শ্রম বাজারে আছে দুই কোটিরও অধিক সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী, যে দেশের ডিজিটাল অবকাঠামো প্রত্যন্ত গ্রাম-পাড়া-মহল্লা এমনি দুর্গম পার্বত্য এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত, যেখানে এখনও অনাবিষ্কৃত রয়েছে অমিত সমুদ্র সম্পদ, প্রতিনিয়ত যেখানে উন্মোচিত হচ্ছে নতুন সম্ভাবনার দ্বার এবং যে দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি ১৬ কোটি স্বতঃস্ফূর্ত জনগণ সে দেশের অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত বা প্রতিরোধ করার সাধ্য কারো নেই। এখন প্রয়োজন কেবল সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার মাধ্যমে এসব কিছুর সুসমন্বয় এবং সঠিক ও সুযোগ্য নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা। সমৃদ্ধ আগামীর পথে বাংলাদেশের অভিযাত্রার ‘রূপকল্প-২০৪১’ প্রণয়নে আমি বয়সের কারণেই হয়ত তেমন ভূমিকা রাখতে পারবো না; তবে, কাজ যে শুরু হয়েছে তাতে আমি খুবই তৃপ্ত ও নিশ্চিত। অবশ্যই সে উদ্যোগের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার চেষ্টা করবো। মুহিত বলেন, আমরা এখন মজবুত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-৪১ প্রণয়নের কাজ শুরু করেছি। একটি সমন্বিত দীর্ঘমেয়াদী বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’র খসড়াও প্রণয়ন করেছি। সারা পৃথিবী আমাদের সফল উন্নয়ন কৌশল ও কার্যক্রমের স্বীকৃতি এরইমধ্যে দিয়েছে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাসহ দেশের শাসন কাঠামোর ঢালাও সংস্কার দাবি জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, জনসংখ্যায় ও এলাকায় আমাদের এক একটি জেলা পৃথিবীর প্রায় ৬০টি দেশের চেয়ে বড়। আমরা এখন উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে প্রস্তুত। এটি করতে হলে শাসন কাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। মুহিত বলেন, সংবিধানের ধারা অনুযায়ী, শাসনতান্ত্রিক সংস্কার করতে হলে আমাদের ৬৪টি জেলা ও ৯টি মহানগরে স্বশাসিত ও স্বয়ম্ভর সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ সরকারগুলোর জন্য তাদের নিজস্ব আমলাতন্ত্র বহাল করতে হবে। তাদের দায়িত্ব ও কাজের তালিকা করতে হবে। কিছু বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও জেলা সরকারের যৌথ দায়িত্ব ও এর সমন্বয়ের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করতে হবে। এ কাজটি করতে পারলে সহজেই জেলা সরকারের গঠন প্রক্রিয়া স্থির করা যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।