পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, সমুদ্রের তলদেশ থেকে মহাকাশ পর্যন্ত জয় করে বাংলাদেশ এখন উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত। মহাকাশে আজ উড়ছে লাল-সবুজের বাংলাদেশের পতাকা। এ গৌরব আমাদের সরকারের, দেশের ১৬ কোটি মানুষের।
বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন গতকাল বুধবার সকালে জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরু হলে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। সংসদ নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মালিকানা বাংলাদেশের। একটি স্যাটেলাইটের আয়ুষ্কাল ১৫ বছর হওয়ায় ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট তৈরির প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। স্যাটেলাইট তৈরিতে ৫ থেকে ৬ বছর লেগে যায়। সেজন্য এখন থেকেই বঙ্গবন্ধু-২ তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। একটা থাকা অবস্থায় আরেকটি যেন চালু করা যায়, সে বিষয় মাথায় রেখেই কাজ শুরু করা হয়েছে।
সরকার দলীয় সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে দেশ-বিদেশের সব বাঙালি খুশিতে উদ্বেলিত। সবার চোখে আনন্দ অশ্রæ। সব মানুষ যখন এত খুশি, তখন বিএনপির কেন দুঃখ। পৃথিবীর অনেক দেশ আমাদের অনেক আগেই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। আমরা কেন পারলাম না?
স্বতন্ত্র সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের টাইম শেষ হয়ে এলে আমরা বঙ্গবন্ধু-৩ তৈরি করবো। এভাবে পর্যায়ক্রমে আমাদের ধারাবাহিকতা চালিয়ে যাবো। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা চলতে চাই। যখন যে প্রযুক্তি আসবে সেটা যেন আমরা গবেষণা, ধারণ ও ব্যবহার করতে পারি সেই ব্যবস্থা নেবো।
তিনি আরো বলেন, এই স্যাটেলাইটের মালিকানা বাংলাদেশের, বাংলাদেশ সরকারের। যাদের দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি ন্যূনতম ভালবাসা নেই, দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, তারাই (বিএনপি) অর্বাচীনের মতো স্যাটেলাইটের মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন তুলে। ভারত সফরকালে তিস্তা ইস্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের ব্যাপারে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, ’না বলা কথাটি রবে না গোপনে’।
সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, সমুদ্রের তলদেশ থেকে মহাকাশ পর্যন্ত জয় করে বাংলাদেশ এখন উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত। কিন্তু ৭৫ পরবর্তী দীর্ঘদিন যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা স্যাটেলাইট নির্মাণের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি কেন? এদের (খালেদা জিয়া) চিন্তা এতো সংকীর্ণ ছিল যে, সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ বিনা পয়সায় দেওয়া হচ্ছিল, তা নেয়নি বিএনপি সরকার।
তিনি বলেন, সে সময় বিএনপি সরকারের কথা ছিল, সাবমেরিন সংযোগ নিলে নাকি সব তথ্য পাচার হয়ে যাবে! আমার প্রশ্ন, বিএনপির কাছে কী এমন গোপন তথ্য থাকে যা ফাঁসের ভয়ে তারা দেশকে সারাবিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিলো? একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারই ক্ষমতায় এসে নতুন প্রজন্মের জন্য তথ্য-প্রযুক্তির দ্বার উম্মোচন করে দিয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই বাংলাদেশকে আত্মমর্যাদাশীল ও স্বনির্ভর দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালে বেতবুনিয়া ভ‚-উপগ্রহ কেন্দ্র উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট যোগাযোগের সূচনা করেন। আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্যোগে মহাশূন্যে বাংলাদেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের পদক্ষেপ গ্রহণ করি। স্বপ্নের স্যাটেলাইট নির্মাণ ও এর সফল উৎক্ষেপণে আমরা গর্বিত ও আনন্দিত। মহাকাশে লাল-সবুজের বাংলাদেশের পতাকা উড়ছে। এ গৌরব আমাদের সরকারের, দেশের ১৬ কোটি মানুষের।
জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ : সংসদ নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ আওয়ামী লীগ সরকারের গতিশীল উন্নয়নের ধারাবাহিকতার একটি অংশ। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সফল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হলো। স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রবেশ করলো এক এলিট ক্লাবে। নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক দেশগুলোর এই ক্লাবে বাংলাদেশ ৫৭তম সদস্য। স্থল ও জলসীমা জয়ের পর মহাকাশ জয় ছিল বাংলাদেশের জন্য একটি দীর্ঘ যাত্রা। দীর্ঘ ৬ বছরের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশ জয় সম্ভব হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সংসদকে আরও জানান, স্যাটেলাইট টেকনোলজি ও সেবার প্রসারের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ব্যাপক কর্মস্থান সৃষ্টি করবে। এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার সেবার পাশাপাশি টেলিমেডিসিন, ই-লার্নিং, ই-এডুকেশন, ডিটিএইচ, ভি-স্যাট প্রভৃতি সেবা প্রদান করবে। দুর্গম অঞ্চলসহ সমগ্র বাংলাদেশের স্থল ও জলসীমায় নিরবিচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার নিশ্চিত হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে টেরিস্ট্রিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলে সারাদেশে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা বহাল রাখা হবে।
তিনি আরো জানান, স্যাটেলাইট-১ এ ৪০টি ট্রান্সপন্ডার আছে। এরমধ্যে ২০টি বাংলাদেশের জন্য এবং ২০টি ট্রান্সপন্ডার লীজ দেওয়া যাবে। ট্রান্সপন্ডার লীজ দিয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে। বিদেশী স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ বর্তমানে প্রদেয় বার্ষিক প্রায় ১৪ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে। স্যাটেলাইট-১ এর কাভারেজভ‚ক্ত এলাকা হলো বাংলাদেশসহ সকল সার্কভ‚ক্ত দেশ, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, তুর্কমেনিস্তান, কাজাখিস্তান এবং উজবেকিস্তান। স্পেস টেকনোলজির জ্ঞান সমৃদ্ধ মর্যাদাশীল জাতি গঠনে অনবদ্য ভ‚মিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১।
নির্বাচনে জয় পেতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ
থাকার আহ্বান শেখ হাসিনার
আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে আইনজীবিদের সম্মানে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে রাখা সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে যে কোন নির্বাচনে জয় লাভ করা সম্ভব। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় বসে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে। একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই দেশের উন্নয়ন হয়।’
মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম সাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ এর কথা উল্লেখ করে টানা দুই মেয়াদের সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ পিছিয়ে নেই।’ অনুষ্ঠানে, দেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।