Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সম্মাননা ভাতা পাবেন মুক্তিযোদ্ধারা

| প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দেশের সূর্যসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ সম্মাননা ভাতা দেওয়ার কথা চিন্তা করছে সরকার। আসছে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা থাকবে। এছাড়াও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার বাজেট বক্তৃতায় গত ৯ বছরে সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করেছে তার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে একটি তালিকাও উপস্থাপন করবেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের সূর্যসন্তানদের জন্য বিশেষ সম্মাননা ভাতা বাবদ ‘বিজয় দিবস ভাতা’ নামে প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধা বছরে এককালীন পাঁচ হাজার টাকা পাবেন। ইলেকট্রনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধাদের এই সম্মানী ভাতা দ্রæত তাদের হাতে পৌঁছানো হবে। উল্লেখ্য, সরকার সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নতুন করে তিনটি ভাতা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর একটি ‘নববর্ষ ভাতা’ ইতোমধ্যেই চালু করা হয়েছে। এই বাজেটে চালু হচ্ছে ‘বিজয় দিবস’ ভাতা। এখন বাকি রইলো স্বাধীনতা দিবসের ভাতা।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজজাম্মেল হক জানিয়েছেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেনার সরকার। যুক্তিযোদ্ধারা দেশের সূর্যসন্তান। তাদের সম্মানের জন্য সরকার কিছু করতে পারলে আমরা বেশি খুশি হবো। তারা ভালো থাকলে দেশ ভালো থাকবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অন্যান্য ভাতা যথারীতি চলবে।’
আসন্ন বাজেটে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সব সরকারি হাসপাতাল ও ১৬টি বিশেষায়িত হাসপাতালে বিনা খরচে চিকিৎসা নেওয়া, সম্মানী ভাতা দ্রæত পৌঁছানোর জন্য ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতি ব্যবহার ও অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন সুবিধা প্রদানে বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগের প্রতিশ্রæতিও থাকবে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায়।
চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া রয়েছে তিন হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা। আসছে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে চার হাজার ২৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এক বছরের ব্যবধানে এ খাতে সরকারের বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ছে দুই কোটি ৭৫ লাখ টাকা। বর্তমানে দেশে বিদ্যমান দুই লাখ মুক্তিযোদ্ধা প্রতিবছর বিজয় দিবস ভাতা বাবদ এককালীন পাঁচ হাজার টাকা পাবেন।
জানা গেছে, নতুন বাজেটে বিজয় দিবস ভাতা দিতে সরকারের বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হবে ১০০ কোটি টাকা। প্রতি মুক্তিযোদ্ধা দুই হাজার টাকা করে নববর্ষ ভাতা হিসেবে এ বছরই প্রথম পাচ্ছেন। এর জন্য সরকারকে বরাদ্দ রাখতে হচ্ছে ৪০ কোটি টাকা। আর দুই ঈদে দুটি বোনাস খাতে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ৪০০ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, সব ধরনের ভাতাসহ উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয় মেটাতে আগামী বাজেটে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে ৪ হাজার ২৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চলতি বাজেটে এ মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বরাদ্দের পরিমাণ হচ্ছে ৩ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা। আর্থিক দিক বিশ্লেষণ করলে নতুন বাজেটে এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ছে পৌনে ৩শ’ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, সামাজিক নিরাপত্তা বলয় কর্মসূচির আওতায় ২০০৯ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা বাবদ মাসিক ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। সুবিধাভোগী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৪২ হাজার থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ করা হয়েছে। বীরশ্রেষ্ঠদের সম্মানী ভাতা ১২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার, বীর উত্তমদের ১০ হাজার থেকে ২৫ হাজার, বীরবিক্রমদের আট হাজার থেকে ২০ হাজার এবং বীরপ্রতীকদের ছয় হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণীর সাত হাজার ৮৩৮ জন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, শহীদ পরিবার ও বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ পরিবারের মাসিক রাষ্ট্রীয় ভাতার পরিমাণ প্রায় ৫২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
বর্তমানে প্রায় দুই লাখ মুক্তিযোদ্ধার মাসিক ভাতা হিসেবে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা পাবেন। এর বাইরে দুই ঈদে দুটি বোনাস পাচ্ছেন। প্রতিটি বোনাসের পরিমাণ এক মাসের ভাতার সমান।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ