Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নৌপথে বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ

| প্রকাশের সময় : ৬ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : আষাঢ়ী বর্ষার অমাবশ্যার ভরা কোটালে এবারের ঈদ উল ফিতরে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে সড়ক ও নৌপথে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে অন্তত দশ লাখ মানুষ যাতায়াত করবে। সে লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি পরিবহন ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলোর প্রস্তুতি চুড়ান্ত করলেও আবহাওয়া নিয়ে দুঃশ্চিন্তা রয়েছে সাধারণ যাত্রী সহ পরিবহন ব্যবসায়ীদের মধ্যেও। তবে এবার বরিশাল-ঢাকা-বরিশাল নৌপথে অন্তত ১৮টি বিলাসবহুল বহুল বেসরকারি নৌযান ছাড়াও ৩টি দিবাকালীন ক্যটিামেরন চলাচল করবে। সাথে থাকছে রাষ্ট্রীয় জাহাজ চলাচল প্রতিষ্ঠান-বিআইডবিøউটিসি’র ৬টি অভ্যন্তরীণ নৌযান। ফলে অতিমাত্রার ওভারলোড নাও হতে পারে। তবুও আবহাওয়ার বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় রেখে সবধরনের সতর্কতা অবলম্বনের কথা জানিয়েছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল মহল।
প্রতিদিনই বরিশাল সহ দক্ষিনাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরগুলোতে ১নম্বর সতর্ক সংকেত জারী থাকেছ। বর্ষা মাথায় করে দক্ষিন-পশ্চিম মওমুমী বায়ু দেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত পৌছে গেছে। আজকের পরবর্তি ৪৮ঘন্টায় তা সারা দেশেই বিস্তার লাভের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
তবে এবারো চট্টগ্রাম-বরিশাল নৌপথে রাষ্ট্রীয় নৌ বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানটি কোন যাত্রীবাহী নৌযান চালাচ্ছে না। প্রায় ২০কোটি টাকা ব্যায়ে ২০০৯সালে দুটি উপকূলীয় নৌযান পূণর্বাশনের পরে ২০১১থেকে চট্টগ্রাম-বরিশাল নৌপথে যাত্রী পরিবহন বন্ধ রয়েছে। এরুটের ৩টি উপক‚লীয় নৌযানের ১টি বন্ধ গত প্রায় বছরখানেক যাবত। অপর দুটির মধ্যে ‘এমভি আবদুল মতিন’ ও ‘এমভি বার আউলিয়া’ চলছে সম্পূর্ণ জোড়াতালি দিয়ে। তাও চট্টগ্রাম থেকে হাতিয়া পর্যন্ত। উপরন্তু সংস্থাটির ৬টি অভ্যন্তরীন নৌযানের ৪টি প্যাডেল জাহাজের অবস্থাই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ‘পিএস অস্ট্রিচ’, ‘পিএস মাহসুদ’, ‘পিএস লেপচা’ ও ‘পিএস টার্ণ’ জাহাজগুলোর পরিপূর্ণ মেরামতের মেয়াদ অনেক আগে পার হলেও সংস্থাটির কারিগরি শাখার সে ব্যাপারে কোন হোলদোল নেই। ঈদকে সামনে রেখে কোনমতে জোড়াতালি দিয়ে এসব নৌযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তবে এসব নৌযানের সাহায্যেই বিআইডবিøউটিসি ঈদের আগের তিনদিন সহ মোট ৬দিন বিশেষ সার্ভিস পরিচালনা করবে বলে জানিয়েছে। ঈদের আগে ১৩, ১৪ ও ১৫ জুন নিয়মিত রকেট স্টিমারের সাথে একটি করে অতিরিক্ত নৌযান ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে পিরোজপুরের হুলারহাট ও বড় মাছুয়া পর্যন্ত চলাচল করবে। তবে সরকারি এ সংস্থাটির নৌযানগুলো ঢাকা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা ও সন্ধ্যা ৭টায় ছাড়ার কারণে এর ডেক শ্রেণীতে কখনোই তেমন কোন যাত্রী ভ্রমণ করে না। অথচ বেসরকারি নৌযানগুলোর ছাদেও কোন তিল ধরার ঠাই থাকে না। কিন্তু এসব নৌযানের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর কক্ষের টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। ঈদের এ ভীড়ের সময় জনপ্রতিনিধি আর সরকারি আমলাদের কারনে বিআইডবিøউটিসি’র কোন নৌযানের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর কেবিন টিকেট সাধারন যাত্রীদের কাছে সোনার হরিণ সমতুল্য।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে ঢাকা-বরিশাল নৌপথে বেসরকারি অন্তত ১৮টি নৌযান চলাচল করলেও তার টিকেটও ইতোমধ্যে বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। এমনকি সরকারি-বেসরকারি কোন নৌযানেই ঈদ পরবর্তি এক সপ্তাহেরও কোন কেবিন টিকেট মিলছে না। ঈদকে সামনে রেখে এবারো বেসরকারি নৌযানের ডেক থেকে প্রথম শ্রেণী পর্যন্ত যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে ঢাকা-বরিশাল নৌপথে। তবে নৌযান মালিকগন যথারীতি সারা বছর কম ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করে ঈদের সময় মন্ত্রণালয় নির্ধারিত ভাড়া অদায়ের কথা বলছেন।
এবারের ঈদকে সামনে রেখে বেসরকারি সেক্টরে ‘এমভি এ্যাডভেঞ্চার-৯’ নামের একটি নতুন নৌযান যাত্রী পরিবহনে যূক্ত হচ্ছে। এছাড়া ঐ একই কোম্পানীর একটি ক্যাটামেরনও দিবাকালীন সার্ভিসে যূক্ত হচ্ছে ঈদের আগেই। উপরন্তু গ্রীন লাইন পরিবহনের দিবাকালীন দুটি ক্যাটারেমনও ঈদের আগে থেকে যাত্রী পরিবহনে যূক্ত হবার কথা রয়েছে। বর্তমানে কোম্পানীটির একটি নৌযান ঢাকা থেকে সকালে এবং বরিশাল থেকে দুপুরে চলাচল করলেও অপর একটি মেরামত শেষে ফিরলে উভয় প্রান্ত থেকেই সকালে ও দুপুরে দুটি করে ক্যাটামেরন চলাচলের কথা রয়েছে।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে ঢাকা-বরিশাল ছাড়াও বরিশাল থেকে খুলনা সহ উত্তর বঙ্গের বিভিন্ন রুটেও নিয়মিত সার্ভিসের বাইরে বিশেষ কিছু বাস সার্ভিস চালু হবার কথা রয়েছে। গ্রীন লাইন পরিবহন ইতোমধ্যে বরিশাল-ঢাকা এবং বরিশাল-বেনাপোল-কোলকাতা রুটে বাতানুকুল বাস সার্ভিস চালু করেছে। রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থা-বিআরটিসি’র বরিশাল বাস ডিপো থেকেও তার পুরনো লক্করমার্কা গাড়ীগুলো দিয়ে সাগরপাড়ের কুয়াকাটা থেকে বরিশাল হয়ে পঞ্চগড় সহ রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী এবং খুলনা ছাড়াও বরিশাল-মাওয়া রুটে বাতানুকল বাস পরিচালনা করবে বলে জানা গেছে।
এদিকে বেসরকারি আকাশ পরিবহন ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স ৭ হাজার টাকায় ঈদের আগে ঢাকা-বরিশাল এবং ঈদের পরে বরিশাল-ঢাকা আকাশ পথে যাত্রী পরিবহন করবে। জাতীয় পতাকাবাহী বিমানও তার সাপ্তাহিক ৩টি ফ্লাইটের অতিরিক্ত ১৩ জুন ঢাকা-বরিশাল আকাশ পথে একটি বিশেষ ফ্লাইটে যাত্রী পরিবহন করবে। তবে মাত্র ৬৭ এ্যারোনটিক্যাল মাইলের দুরত্বে ভাড়া নির্ধারন করা হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা। ঈদের পরে আর সংস্থাটি কোন অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করছে না।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ