পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
টঙ্গী থেকে মোঃ হেদায়েত উল্লাহ : বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) ও চার লেন প্রকল্পের কাজে অব্যবস্থাপনার ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রতিদিনই ঘন্টার পর ঘন্টা তীব্র যানজট লেগেই আছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রায় ৩০টি জেলায় যাতায়াতকারী যাত্রী সাধারণের দীর্ঘ যানজটে সীমাহীন দুর্ভোগ যেন নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবারের ঈদযাত্রায়ও এই মহাসড়কে তীব্র যানজটের আশঙ্কা করছেন যাত্রীসাধারণ এবং চালকেরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার বছর আগে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের জয়দেবপুর পর্যন্ত বিআরটি প্রকল্পের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কিন্তু ঠিকাদার কাজ শুরু করেন গত বছর আগস্ট মাসে। কাজ শুরুর পরও দেশের অন্যতম ব্যয়বহুল এই প্রকল্পের কাজ যে গতিতে বা যে ধরণের আধুনিক ব্যবস্থাপনায় হওয়া উচিৎ তা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। মহাসড়কের পাশে ড্রেন নির্মান করতে গিয়ে যত্রতত্র খোঁড়াকুড়ি করে মাসের পর মাস রেখে দিয়েছে। নতুন ড্রেন নির্মান করতে গিয়ে অনেক স্থানে পুরাতন ড্রেনও বন্ধ কওে দেওয়ায় ঐ স্থানে সামান্য বৃষ্টি হলেই মহাসড়কে হাটুর উপরে পানি জমে যায়। ফলে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এই অবস্থা টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত অন্তত ৩০-৪০ জায়গায় দেখা গেছে। এভাবে অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ির কারণে এধরণের বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে ব্যস্ততম মহাসড়কটিতে। এর পরও কাজের গতি খুবই মন্থর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিআরটি প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে জনদুর্ভোগ কমানো এবং করণীয় বিষয়ে বিভিন্ন সমীক্ষা ও কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। যাত্রীরা বলছে, বিশেষজ্ঞও সুধীজনের কর্মশালায় উঠে আসা সুপারিশ মেনে চললে সাধারণ মানুষকে এত ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।
এদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেনের কাজ চার বছর আগে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কাজ শুরু হয় তারও দুই বছর পর। এ সড়কটির বিভিন্ন পয়েন্টে ওভারব্রীজ, কালভার্টের কারণে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। গাড়ি চলাচলের সুবিধা নিশ্চিত না করে কাজ চলছে অপরিকল্পিতভাবে। কাজের গতিও খুবই ধীর। এ দুই মহাসড়ক দিয়ে রাজধানী থেকে গাজীপুর শিল্পাঞ্চল ও ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, দিনাজপুরসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরা যাতায়াত করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চারলেনের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। এছাড়া করটিয়া, টাঙ্গাইল বাইপাস, ঘারিন্দা বাইপাস, রসুলপুর, এলেঙ্গা ও মির্জাপুরসহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অনেক খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই গর্তগুলো পানিতে ভরে যায়। অন্যদিকে, গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে কালিহাতীর এলেঙ্গা পর্যন্ত চলছে চার লেনের কাজ। এ জন্য সড়কের এক পাশ দিয়ে যান চলাচল করতে হচ্ছে। ফলে প্রায় ৭০ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়ছে শত শত গাড়ি। যে গতিতে কাজ হচ্ছে তাতে ঈদের আগে পুরো কাজ শেষ হবে না বলে মনে করছেন চালকেরা। ফলে ঈদের সময় দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। একই আশঙ্কা স্থানীয়দেরও।
জানা যায়, প্রতিদিন এই মহাসড়কে গড়ে প্রায় ৯ থেকে ১০ হাজার যানবাহন চলাচল করে। আর ঈদের সময় ঘরমুখো যাত্রীদের চাপে যানবাহনের সেই সংখ্যা ৫ থেকে ৬ গুণ বেড়ে যায়। এ ছাড়া ধেরুয়া রেলক্রসিং-এ ঢাকা-উত্তরবঙ্গ রুটের ১২টি ট্রেন দিনে ২৪ বার ক্রসিং করে। এতে সারা দিনে গড়ে প্রায় দেড় ঘণ্টার বেশি সময় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এর ফলেও ঈদের আগে মহাসড়কে যানজট হবে বলে আশঙ্কা করছেন যাত্রী ও চালকরা।
বিআরটি প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী নূর-ই-আলম বলেন, তাঁদের নির্মাণ প্রক্রিয়ায় স্থানীয় সরকার বিভাগ, সেতু বিভাগ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ সম্পৃক্ত। এটি একটি ব্যস্ততম মহাসড়ক। মেরামত কাজের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি করতে হচ্ছে, আবার যানবাহন চলাচলও স্বাভাবিক রাখতে হবে। বিকল্প না থাকায় জনদুর্ভোগ সবচেয়ে কম বিবেচনায় রেখে তারা কাজ করছেন বলে তিনি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।