Inqilab Logo

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি কারণ করমুক্ত আয়সীমা ২০ হাজার টাকা বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি বিবেচনায় ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। একই সঙ্গে মহিলা করদাতা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের করমুক্ত আয়সীমাও বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। আগামী বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর এ ঘোষণা দেবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, মাথাপিছু আয় বিবেচনায় বাংলাদেশে করমুক্ত আয়সীমা এখনো সহনীয় থাকলেও নির্বাচনের বছরের বাজেটের কারণে এক্ষেত্রে পরিবর্তন আনছে সরকার। করদাতার সংখ্যা বাড়াতে করমুক্ত আয়সীমা আগের মতো রাখার পক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাতে পরিবর্তন এনেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে কর প্রদানের হার ও করের পরিমাণ অপরিবর্তিতই রাখা হচ্ছে আগামী বাজেটে। করহারের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ছয়টি স্তর ও সর্বনি¤œ কর প্রদানে সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য এলাকার পরিমাণ আগের মতোই থাকছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যমান করমুক্ত আয়সীমার পাঁচটি ¯ø্যাবের মধ্যে অন্তত তিনটিতে পরিবর্তন আনা হতে পারে। এর মধ্যে ব্যক্তিশ্রেণীর আয়ে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত করহার শূন্য করা হচ্ছে। এরপর চার লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে ১০ শতাংশ, পরবর্তী পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ, পরবর্তী ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে ২৫ শতাংশ ও পরবর্তী মোট আয়ের ওপর ৩০ শতাংশ হারে করারোপের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর বাইরে মহিলা ও ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখ থেকে তিন লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের করমুক্ত আয়সীমা চার লাখ ২৫ হাজার টাকা থেকে চার লাখ ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হচ্ছে।
বাকি দুটি ¯ø্যাবের মধ্যে প্রতিবন্ধী করদাতার করমুক্ত আয়সীমা আগের মতোই চার লাখ টাকা বহাল থাকতে পারে। চলতি অর্থবছর এ শ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে চার লাখ টাকা করা হয়েছিল। এর বাইরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতা-মাতা ও আইনানুগ অভিভাবকের করমুক্ত আয়সীমা তার ক্ষেত্রে নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত ২৫ হাজার টাকা রাখার বিধানও অপরিবর্তিত থাকছে। যদিও শুরু থেকেই কোনো শ্রেণীর করদাতার জন্যই করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর পক্ষে ছিল না এনবিআর।
জানা গেছে, করমুক্ত আয়সীমা কিছুটা বাড়লেও স্থানভেদে কর প্রদানের হার আগের মতো একই রাখছে সরকার। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের করদাতাদের সর্বনি¤œ করের পরিমাণ পাঁচ হাজার টাকা, অন্য সিটি করপোরেশন এলাকায় চার হাজার টাকা ও সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরের করদাতাদের ন্যূনতম তিন হাজার টাকা কর পরিশোধ করতে হয়।
এর আগে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা কমপক্ষে ৭৫ হাজার টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল দেশের সব ব্যবসায়ী সংগঠন। বাজেট প্রস্তাবনায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই করমুক্ত আয়সীমা সাধারণ করদাতার জন্য তিন লাখ ২৫ টাকা, নারী ও ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে করদাতার জন্য তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকা, প্রতিবন্ধীর জন্য চার লাখ ৫০ হাজার টাকা, প্রতিবন্ধীর পিতা-মাতার জন্য চার লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার জন্য পাঁচ লাখ টাকা নির্ধারণের দাবি জানায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ