পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাখাওয়াত হোসেন : ভয়াবহ নিমতলী ট্র্যাজেডি দিবসের ৮ বছর পাড় হলেও ঝুঁকি মধ্যেই বসবাস করছেন রাজধানীর পুরান ঢাকার বাসীন্দারা। ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় এখনও ঝুঁকিপূর্ণ ৪শ’ রাসায়নিক গুদাম উচ্ছেদের কোন উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট্র কর্তৃপক্ষের। আট বছর আগে ২০১০ সালের ৩ জুন রাজধানীর পুরান ঢাকার নিমতলী এলাকার নবাব কাটারার ৪৩ নম্বর বাড়ির এক তলার কেমিক্যাল ফ্যাক্টরি থেকে সৃষ্ট আগুনের লেলিহান শিখা কেড়ে নেয় ১২৫ জনের প্রাণ। সেদিন নিমতলীর সেই দুর্ভাগা বাসিন্দাদের কাছ থেকে অগ্নিশিখা কেড়ে নেয় তাদের প্রিয়জনকে, করে দেয় সহায়-সম্বলহীন, পুড়িয়ে ছাই করে দেয় ওই স্থানের বাসিন্দাদের সুখ-স্বপ্ন আর আনন্দ। অনেকেই আবার নতুন করে সেখানেই শুরু করেন জীবন সংগ্রাম। এই ভয়াল অগ্নিকান্ডের কথা স্মরণ করে প্রতি বছর ৩ জুন প্রিয়জনের কথা স্মরন করেন নিমতলীবাসী।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নিমতলী ট্রাজেডির আট বছর উপলক্ষে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)-সহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে গতকাল বেলা ১১টার দিকে নিমতলী ছাতা মসজিদের সামনে এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। সবার পক্ষ্য থেকেই পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকা থেকে রাসায়নিক পদার্থের দোকান ও কারখানা সরিয়ে নেয়ার আহŸান জানানো হয়েছে। নিমতলীর ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পরিবার-পরিজন হারানো আসমা আক্তার বলেন, ওই ঘটনায় আমার পরিবারের চারজনকে হারিয়েছি। আর নানা-মামাদের পরিবারের ৪০ জনকে হারিয়েছি। এ হারানোর বেদনা কাউকে বোঝানো যাবে না।
নিমতলী এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান ও রুহুল আমি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, কেমিক্যাল গুদামের ভয়াবহতা এরমধ্যেই পুরান ঢঅকাবাসীসহ সকলের প্রত্যক্ষ করেছেন। এলাকার সাধারন মানুষ কেমিক্যাল গুদাম বন্ধের পক্ষে থাকলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। তাছাড়া বাড়ির মালিকরাও বেশ কয়েকগুন বেশি দামে গুদাম ভাড়া দিয়ে থাকেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন যে, বিস্ফোরক অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট্র দফতরের লোকজন এ বিষয়ে পুরোপুরি নিস্ক্রিয়। তারা অবৈধভাবে গুদামের মালিকের সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স বিভাগের পরিচালক মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বিশাল জনগোষ্টির ঘনবসতি এলাকা পুরান ঢাকা। এখানে কেমিক্যাল গুদাম রাখা নানাভাবে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরেই কেমিক্যালের গুদাম সরানোর জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু নানা জটিলতায় কোন ক্জা হচ্ছে না। রাজনৈতিক কারণ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ্যের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। ফায়ার সার্ভিস কর্র্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সর্তক রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
গত কয়েক দিন সরেজমিন দেখা গেছে, পুরান ঢাকার নিমতলী, চকবাজার, লালবাগসহ আশপাশের এলাকার বহুতলবিশিষ্ট ভবনের গাড়ি পার্কিং স্পেস বা নিচতলায় কেমিক্যালের গুদাম গড়ে উঠেছে। এসব ভবনের অন্যান্য ফ্লোর বাসাবাড়ি এবং ছোট-বড় কোম্পানির অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। একাধিক ভবনে নিচতলায় কেমিক্যালের গুদাম এবং উপরের একাধিক ফ্লোরে প্লাস্টিকের কারখানা লক্ষ্য করা গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কেমিক্যালের গন্ধে বাতাস দূষিত হয়ে গেছে। ফলে তারা নানা ধরনের রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। দ্রæততম সময়ের মধ্যে এসব কারখানা ও গুদাম অপসারণের দাবি জানান তারা। ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিস বিভাগের সদস্যরা পুরান ঢাকার আরমানিটোলা, বাবুবাজার, মিটফোর্ড, চকবাজার, কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ, ইসলামপুরসহ আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করে আবাসিক ভবনে গড়ে ওঠা ঝুঁকিপূর্ণ চারশ’ প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুত করেছে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব কেমিক্যাল গুদাম ও কারখানার অধিকাংশরই বৈধ কাগজপত্র এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদন নেই। এ কারণে ন্যূনতম নিয়ম-কানুনও তারা মানছেন না। এসব গুদামের মধ্যে রয়েছে- গিøসারিন, সোডিয়াম অ্যানহাইড্রোস, সোডিয়াম থায়োসালফেট, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, মিথাইল ইথাইল কাইটন, থিনার, আইসোপ্রোইল, টলুইসহ ভয়ংকর রাসায়নিক দাহ্য পদার্থ। এসব রাসায়নিক সামান্য আগুনের স্পর্শ পেলেই ঘটতে পারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।