পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ‘বন্দুকযুদ্ধ’ আর জনমনে ভীতি সৃষ্টির কবলে পড়ে জাতির মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সহ-সভাপতি মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ ও মাদকের ভয়াল থাবা সমস্যা সমাধানে সরকারের সামনে মনে হয় এই একটিই উপায় আছে। তা হচ্ছে ‘বন্দুকযুদ্ধ’। বন্দুকযুদ্ধই যেন সব সমস্যার সমাধান দেবে। যখন দেশে সুশাসন ও শাসক শ্রেণীর জনগণের কাছে জবাবদিহির চরম অভাব হয়; তখনই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়। বর্তমান পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করা জাতি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। মানুষ আজ চরম অনিশ্চয়তায় বসবাস করছে। গতকাল ‘পরিবেশ আন্দোলনকর্মী উত্তম হত্যার বিচার, সড়কপথে পরিবহন নৈরাজ্য ও মানুষ হত্যা বন্ধের দাবিতে’ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
২৪টি নাগরিক সংগঠন রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই সভার আয়োজন করে। গত ২১ মে হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে বাসের ধাক্কার পর ট্রাকচাপায় নিহত হন পরিবেশ আন্দোলনকর্মী উত্তম কুমার দেবনাথ। সভায় সড়কে মৃত্যুর মহামারী ঠেকানোর লক্ষ্যে ১৬টি দাবীনামা তুলে ধরা হয়। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা, এনজিওকর্মী রাশেদা কে চৌধুরী, বাপার সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন, যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হাবিব, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৬ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। দেশের মানুষ যেখানেই যাচ্ছে, মরিয়া হয়ে ছুটে যাচ্ছে। অসুস্থ প্রতিযোগিতা। অন্যকে মাড়িয়ে কেন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার এ অসুস্থ প্রতিযোগিতা? এর কারণ আইনের শাসন নিজস্ব গতিতে চলতে না পারায় পুরো সমাজে অনাচার ঢুকে পড়েছে; যার খেসারত দিচ্ছি আমরা সবাই মিলে। তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশের মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই। রক্তমাংসের মানুষের সংবেদনশীলতা যেন ভোঁতা হয়ে গেছে। যাঁরা দেশ পরিচালনা করছেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে তাঁদের ভাবতে হবে। বাস্তবতা হলো তারা ছুটছেন উল্টোপথে। আমরা সচেতনতা সৃষ্টির জন্য দাঁড়িয়েছি।
বাপার সহসভাপতি এনজিওকর্মী রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ভুক্তভোগীদের কান্না নীতিনির্ধারকদের কানে পৌঁছায় না। আমরা তাঁদের দেশ পরিচালনার অর্থ জোগান দিচ্ছি, তাঁরা আমাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এ দেশের মানুষকে সোচ্চার হতে হবে। বক্তারা বলেন, সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। এ কাজে সরকারকে সহায়তা করতে প্রস্তুত তাঁরা। সমাবেশে উত্তমের পরিবারের দায়িত্ব গ্রহণ ও ১৬টি দাবি জানিয়েছে ২৪টি সংগঠন।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ২৪ সংগঠনের ১৬ দাবি: ১. উত্তম দেবনাথ হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে বিচার ও উত্তমের পরিবারের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ২. মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩-এর যুগোপযোগী সংশোধনী আনা ও তা বাস্তবায়ন ৩. পথচারী ও অযান্ত্রিক যানে নিরাপদে চলাচলের উপযোগী পরিবেশ তৈরি ৪. উল্টোপথে গাড়ি চালানো বন্ধ করা ৫. যথাযথভাবে বিদ্যমান সড়কপথ পরিচালনা ও মেরামত করা ৬. ভুয়া লাইসেন্সধারী চালকদের নিষিদ্ধ ও শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা ৭. পরিবহন মালিকদের জবাবদিহির আওতায় আনা এবং অপরাধের ভিত্তিতে শাস্তির বিধান চালু করা ৮. ত্রæটিযুক্ত গাড়ি বাতিল করা ৯. ট্রিপের পরিবর্তে চালকদের মাসিক বেতনে নিয়োগের ব্যবস্থা ১০. সড়ক ব্যবহারকারী সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা ১১. যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা ১২. বিআরটিএকে স্বচ্ছ ও কার্যকর করা ১৩. রেল ও নৌব্যবস্থার আধুনিকীকরণ ও স¤প্রসারণ করা এবং সড়কনির্ভরতা কমানো ১৪. প্রশিক্ষিত দক্ষ চালক তৈরিতে প্রতিটি জেলায় প্রশিক্ষণ একাডেমি চালু ১৫. যাত্রী, যানবাহনের মালিক, চালক ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সবার সহযোগিতায় সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং ১৬. পেশাদার চালকের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে মালিকপক্ষ থেকে নিয়োগপত্র প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণে কার্যকর পদক্ষেপের ব্যবস্থা করা। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।