Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

৪টি লোকসভা ও ১০টি বিধান সভার মাত্র ২টি আসন পেয়েছে বিজেপি

ভারতে উপনির্বাচনে বড় রকমের ধাক্কা

| প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের ১০ রাজ্যের ্র উপ নির্বাচনে বিজেপি বড় রকমের ধাক্কা খেয়েছে। ৪টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১টি এবং ১০টি বিধানসভা কেন্দ্রের ১টি আসন লাভ করেছে ক্ষমতাসীন দল। এ দু’টির একটি হল মহারাষ্ট্রে একটি লোকসভা আসন এবং উত্তরাখÐের একটি বিধানসভা আসন। এ ছাড়া বিজেপি আর কোথাও জিততে পারেনি। উত্তর প্রদেশে একজন মুসলিম নারী জয়ী হয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদী ব্রিগেডকে ঘোর দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে উপনির্বাচনের ফল।
গত সোমবার ভারতের ১০ রাজ্যে ৪টি লোকসভা কেন্দ্রে এবং ১০টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া কর্নাটকে একটি আসনে, বাকি থাকা বিধানসভা ভোটও হয় এ দিন। বৃহস্পতিবার ভোট গণনা করা হয়।
উত্তরপ্রদেশ কৈরানা লোকসভা আসন এবং নুরপুর বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন ছিল। দুটি আসনই ছিল বিজেপির জেতা। দ’ুটিতেই তারা হেরেছে বা হারছে। পশ্চিমবঙ্গে একটিই উপনির্বাচন ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা বিধানসভা কেন্দ্রে। তৃণম‚ল কংগ্রেস সেখানে জয়লাভ করেছে।
বিভিন্ন আসনের ফলাফলে দেখা যায়, পশ্চিমবঙ্গের মহেশতলায় জয়ী হয়েছে তৃণম‚ল। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি। সিপিএম আছে তৃতীয় স্থানে। উত্তরপ্রদেশের কৈরানা লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি-কে হারিয়ে দিয়েছে আরএলডি। আসনটি বিজেপির ছিল। কংগ্রেস, এসপি, বিএসপি সমর্থিত আরএলডি প্রার্থী তবস্সুম হাসান ৫৫ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন।।
মহারাষ্ট্রের পালঘর লোকসভা আসনে জিতেছে বিজেপি। এ আসনটি বিজেপিরই ছিল। কেরলের চেঙানুরে সিপিএম প্রার্থীজয়ী হয়েছে। বিহারের জোকিহাটে ৪১, ২২৪ ভোটে জয়ী আরজেডি প্রার্থী শাহানওয়াজ। আসনটি ছিল বিজেপির জোটসঙ্গী জেডিইউ-এর। উত্তরপ্রদেশে নুরপুরে জিতল সমাজবাদী পার্টি। জয় এল ৬,২১১ ভোটে। এই আসন বিজেপির ছিল।
পাঞ্জাবের শাহকোটে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। এটি ছিল বিজেপির জোটসঙ্গী শিরোমণি অকালি দলের। কর্নাটকের রাজ রাজেশ্বরী নগরে বাকি থাকা বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস জয়ী হয়েছে। উত্তরাখÐের থারালি বিধানসভা কেন্দ্রে ১৯০০ ভোটে জিতল বিজেপি। আসন বিজেপিরই ছিল।
মেঘালয়ের আমপাতি বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী মিয়ানি ডি’ শিরা জয়ী হয়েছেন। ঝাড়খÐের গোমিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছে জেএমএম।
মহারাষ্ট্রের পালুস-কাড়গাঁও বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী বিশ্বজিৎ পতঙ্গরাও। মহারাষ্ট্রের ভান্ডারা গোন্ডিয়া লোকসভা আসনে জিতেছে এনসিপি। এ আসনটি বিজেপির ছিল। নাগাল্যান্ডের একমাত্র লোকসভা আসনটির উপনির্বাচনে এগিয়ে বিজেপির জোটসঙ্গী এনডিপিপি।
উত্তর প্রদেশে জয়ী মুসলিম নারী তাবাসসুম হাসান
৪ বছর পর এবার এক জন মুসলিম সাংসদ পেল উত্তর প্রদেশ (ইউপি)। কৈরানা লোকসভা আসনে জয়ী হলেন রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরএলডি) ও সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-র প্রার্থী তাবাসসুম হাসান। তার বিজয়ের পর প্রশ্ন উঠেছেঃ যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য উত্তরপ্রদেশে ‘গেরুয়া ঝড়’ কি স্তিমিত হয়ে আসছে?
যে রাজ্যে মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মুসলিম, সেই রাজ্য ৪ বছর আগে লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া ঝড়ের দাপটে এক জন মুসলিমকেও সংসদে পাঠাতে পারেনি। সেবার বিরোধীরা হাতে হাত মেলাতে পারেননি বলে মুসলিম ভোট ভেঙে কয়েক টুকরো হয়ে গিয়েছিল। এবার পারল, কারণ যোগীর রাজ্যে যে দলের মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক বেশ জোরালো, সেই সমাজবাদী পার্টি সমর্থন করেছিল কৈরানা আসনে দাঁড়ানো আরএলডি প্রার্থী তাবাসসুম হাসানকে। উত্তর প্রদেশে বিরোধীরা একজোট হলে যে জাতপাতের সমীকরণও আম‚ল বদলে যায়, কৈরানা লোকসভা আসনের নির্বাচনী ফলাফল সেটাও প্রমাণ করে দিল। ৫ বছর আগে এই জেলাই রক্তাক্ত হয়ে উঠেছিল জাঠ ও মুসলিমদের মধ্যে সা¤প্রদায়িক দাঙ্গায়।
৫ বছর পর এ বার বিজেপি-র গেরুয়া ঝড়কে রুখতে সেই জেলাতেই এক জন মুসলিমকে (তাবাসসুম হাসান) ভোটে প্রার্থী করেছিল ম‚লত জাঠেদের দল আরএলডি। যাঁর দিকে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিতে দ্বিধা করেনি মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক সমৃদ্ধ এসপি-ও। সম্ভবত হাওয়া ঠাওর করতে পেরেই, লোকদল প্রার্থী কানওয়ার হাসানও মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন আরএলডি-তে।
উত্তরপ্রদেশে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য তাবাসসুম প্রথম বার সাংসদ হয়েছিলেন বিএসপি-র টিকিটে, ২০০৯ সালে। হরিয়ানায় এক গাড়ি দুর্ঘটনায় তাঁর স্বামীর মৃত্যু হওয়ার পর। ২০১৪ সালে সমস্ত নজির ভেঙে দিয়ে উত্তরপ্রদেশের ৮০টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৭৩টি দখল করে নিয়েছিল বিজেপি। সমাজবাদী পার্টি জিতেছিল ৩টি আসনে।
কৈরানা লোকসভা কেন্দ্রটিও ২০১৪ সালে বিজেপির হাতেই ছিল। সাংসদ হুকুম সিংহের মৃত্যুতে সেখানে উপনির্বাচন হয়েছে। যদিও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের ওই এলাকা আরএলডি-র দুর্গ বলেই পরিচিত। তবসুমের প্রতিদ্ব›দ্বী ছিলেন বিজেপির মৃগাঙ্কা সিংহ। বৃহস্পতিবার সকালে গণনা শুরুর পরে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলছিল। কিন্তু বেলা যত গড়িয়েছে, বিজেপি প্রার্থীকে পিছনে ফেলে ততই এগিয়ে গিয়েছেন আরএলডি-র তাবাসসুম। এ দিন তাবাসসুম বলছেন, ‘‘বিজেপি-র ধারণা হয়েছিল, তাদের কেউ হারাতে পারবে না এখানে। সেটা ভেঙে গেছে হিন্দু ও মুসলিমরা একই সঙ্গে বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায়।’ সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ