পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আল জাজিরা : ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ মসৃণ করার জন্য ফিলিস্তিনিদের তাদের পূর্ব পুরুষের ভিটেমাটি থেকে উৎখাত করার পর ৭০ বছর পার হয়ে গেছে। সম্প্রতি গাজা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া বরাবর ফিলিস্তিনিদের সাত সপ্তাহের গ্রেট রিটার্ন মার্চ (মহা প্রত্যাবর্তন মিছিল) ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িঘরে ফিরে যাওয়ার অপূর্ণ অধিকার এবং গাজাকে খোলা আকাশের নিচে এক কারাগারে পরিণত করা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আরোপিত ইসরাইলি অবরোধের দিকে বিশে^র দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ সাথে তা অপরাধ থেকে মুক্তির ভয়াবহ পরিণতিকেও তুলে ধরেছে। ফিলিস্তিনিদের হত্যার জন্য ইসরাইলি সৈন্যদের কোনো বিচার হয় না। তাই সাত সপ্তাহের বিক্ষোভ প্রদর্শন কালে তারা ১১১ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে যাদের অধিকাংশই নিহত হয়েছে তাজা গুলিতে। ২০১৭ সালে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশন ২০১৭ সালে বলে, ইসরাইলি সৈন্যরা গাজা ও পশ্চিমতীর উভয়স্থানেই দায়মুক্তি ভোগ করে।
ক্রমবর্ধমান সহিংসতার প্রেক্ষাপটে ২২ মে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কৌসুলি ফাতু বেনসুদার কাছে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র আবেদন দাখিল করেছে। আবেদনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কালিক বিচার ব্যবস্থা অনুযায়ী আদালতের এখতিয়ার মতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সকল অংশে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত অপরাধ তদন্তের জন্য কৌসুলির কাছে সুনির্দিষ্টভাবে অনুরোধ জানান।
কৌসুলি ইতিমধ্যে ২০১৫ সালে শুরু করা প্রাথমিক তদন্তের কাঠামোর মধ্যে ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি পরীক্ষা করেছেন। এর লক্ষ্য এই যে ২০১৪ সালের জুন থেকে ফিলিস্তিন ভুখন্ডে ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের দ্বারা যুদ্ধাপরাধ বা মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কিনা।
কৌসুলি এর আগে দি হেগ- এর প্রাথমিক পরীক্ষার রিপোর্ট পরীক্ষা করেছেন।
কৌসুলি টিম জনগণের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও নাগরিক সমাজের পেশ করা ফাইলের উপর নির্ভর করেছে। যেমন আল হক সংগঠনের ফাইলগুলো ও তাদের সহযোগীদের দাখিল করা ২০১৪ সালে গাজায় ইসরাইলি হামলার তথ্য যাতে ১৬৩০ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়।
আল হক ও তাদের সহযোগীরা জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীরে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিষয়েও ফাইল পেশ করেছেন।
এ বর্ধিত প্রাথমিক তদন্ত যাদের জন্য আইসিসির এ তদন্ত, সেই ভুক্তভোগীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে। ফিলিস্তিনিদের আবেদন তাদের বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক তদন্তের পর্যায়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে যার পূর্ব পদক্ষেপ হচ্ছে হুলিয়া জারি ও অভিযুক্ত করণ এবং তাদের অপরাধ মুক্তি বন্ধ করার দিকে এক ধাপ এগোনো।
গত ৭০ বছরের বাস্তুচ্যুতি এবং ৫০ বছরের দখলদারিত্বে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য একজন ইসরাইলি উচ্চ পদস্থ বেসামরিক বা সামরিক কর্মকর্তাকেও বিচার করা হয়নি।
২০১৪ সালের হামলার পর ইসরাইলি সামরিক এডভোকেট জেনারেলের অফিসে দাখিল করা ৩৬৯টি অপরাধ অভিযোগের অবস্থা সম্পর্কে
আইসিসি কৌসুলিকে অবহিত করার জন্য আল হক তিনটি মানবাধিকার সংগঠনের সাথে যোগ দেয়।
এ সব অভিযোগের অধিকাংশেরই কোনো তদন্ত হয়নি। কেউই অভিযুক্ত হয়নি। ইসরাইলি সংগঠনগুলোও অনুরূপ কথাই বলেছে।
অতি স্বল্প দু’একটি ঘটনার মধ্যে একজন নি¤œ পর্যায়ের ইসরাইলি সৈনিকের অপরাধের তদন্ত ও বিচার করা হয়। তাকে যে দন্ড দেয়া হয় তা তার অপরাধের সাথে সাযুজ্যপূর্ণ নয়। ২০১৮ সালের মে মাসে আবদুল ফাতাহ আল শরিফ নামে এক ফিলিস্তিনিকে হত্যার জন্য ৯ মাস জেল খাটার পর এক ইসরাইলি সৈন্য মুক্তি লাভ করে। সে আহত হয়ে মাটিতে পড়ে থাকা ও প্রতিরক্ষাহীন আবদুল ফাতাহকে পয়েন্ট বø্যাংক রেঞ্জ থেকে গুলি করে হত্যা করে। সে দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করা হয়।
আইসিসি-তে ফিলিস্তিন মানবাধিকার সংগঠন আল হক ও সহযোগীদের একজন প্রতিনিধি হিসেবে আমাকে এ সিদ্ধান্তের মোকাবেলা করতে হয়েছে যে অতীত অপরাধমুক্তি ভবিষ্যতে ন্যায়বিচারের সম্ভাবনাকে পূবনির্ধারণ করতে পারে। ফিলিস্তিনিরা সামনে এগোনোর ব্যাপারে কতটা আশা করতে পারে?
আইসিসি সমালোচনাবিদ্ধ যে তারা আফ্রিকা মহাদেশের উপর গুরুত্ব আরোপ করে, তাদের প্রক্রিয়া অযৌক্তিক ভাবে দীর্ঘ। তদন্ত ও বিচারের সুযোগ একেবারে সংকীর্ণ। এই সমালোচনা এ সত্যকে মিথ্যা করতে পারে না যে আইসিসি হচ্ছে শেষ ভরসাস্থল। যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অপরাধ মুক্তির ফাঁক বন্ধ ও রাজনীতির বাইরে স্বাধীন বিচারিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করার জন্য।
আইসিসি সকল ফিলিস্তিনি নির্যাতিতদের বিচার নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে না। আইসিসিসি কোনো পরিণতির ভয় না করে যা দেখতে পারে তা হল ইসরাইল যেন আর ফিলিস্তিনিদের বেআইনিভাবে হত্যা, নির্যাতন বা গৃহহীন করতে এবং তাদের ভূমি চুরি করতে না পারে।
আইসিসি কৌসুািলরা যখন অতীত পরিবর্তন করতে পারবেন না তিনি হয়ত ভবিষ্যতকে ইতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করতে পারেন। ঊর্ধ্বতন ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে তদন্তশুরু ও তারপর তাদের বিচারের সম্মুখীন করে আইসিসি একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠাতে পারে যে অন্য সব মানুষের মত ফিলিস্তিনিরাও ন্যায়বিচার পাবার যোগ্য এবং তাদের উপর অত্যাচারের বিচার করা মানে তা তাদের জন্য কোনো উপহার নয়, বরং সেটা তাদের অধিকার যা নিশর্তভাবে পূরণ করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।