পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মো: শামসুল আলম খান : ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন আহমেদ এ অঞ্চলের প্রায় আড়াই কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন, আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। ময়মনসিংহসহ ৬ জেলার বাসিন্দাদের আকাঙ্খার পূর্ণরূপ এসেছে পরিচালকের সাহস ও নেতৃত্বগুণে। গোটা দেশেই বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে উজ্জ্বল করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ভাবমূর্তি।
ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের মতো মর্যাদাপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে এ কৃতিত্বের ভাগীদার জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদও। সেবার মানোন্নয়ন ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে আমুল বদলে দিয়ে সবার প্রশংসা ও বাহব্বা পেলেও ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু থেমে নেই মোটেও। এ ষড়যন্ত্রকারীদের বার বার টার্গেটে পরিণত হচ্ছেন হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন আহমেদ।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যখন এ হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, সেবা নিশ্চিত হয়েছে তখন গুটিকয়েক কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় চিকিৎসক নেতা ইউফার ফি’র দোহাই দিয়ে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ বন্ধের ষড়যন্ত্র করে আসছেন। কেন্দ্রীয় এক চিকিৎসক নেতার বন্ধু ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ও হাসপাতালের উপ-পরিচালক বিভিন্ন সময়ে এ সার্ভিস নিয়ে বিরুদ্ধাচারণ করছেন, এমন অভিযোগও উচ্চারিত হচ্ছে খোদ হাসপাতাল থেকেই।
ময়মনসিংহের নাগরিক নেতারা বলছেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ‘রাইট ট্র্যাকে’ ফিরিয়ে এনে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন পরিচালক। বারবার কুটকৌশল প্রয়োগ করা হলে এবং তিনি চলে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এ অঞ্চলের প্রায় আড়াই কোটি মানুষ। ফলে সরকার বিরোধী অসন্তোষ জনসাধারণের মাঝে ছড়িয়ে পড়বে।
ক্ষমতাসীন দলের পেশাজীবী সংগঠনের নেতা হয়েও যারা তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন তারা মূলত প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের ধারাকেই বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছেন।
সূত্র মতে, এ হাসপাতাল পরিচালককে ভিন্ন কায়দায় ঘায়েল করতে চিহ্নিত চক্রটি নিজেদের অনুসারী-অনুগামী চিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করছে। উদ্দেশ্য একটিই ‘রোগী দরদী’ পরিচালককে বেকায়দায় ফেলা।
হাসপাতাল ও নিজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন বলেন, ‘হাসপাতালের সেবার পরিবেশ বিনষ্ট করতেই একটি চক্র দীর্ঘদিন যাবত ষড়যন্ত্র করে আসছে। ব্যবসা লাটে ওঠা অনেক ক্লিনিক ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের মালিক ও হাসপাতালের কতিপয় চিকিৎসক তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।’
সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আবারো ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের (মমেক) হাসপাতালে ফিরে এসেছেন মেডিসিন বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক হরিমোহন পন্ডিত নিউটন। পর পর দুই বার তিনি কীভাবে একই জায়গায় ফিরে এলেন এ নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন ওঠেছে।
নিয়ম অনুযায়ী এ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের আবাসিক সার্জন (আরএস) পদে ষষ্ঠ গ্রেডের চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু একটি মহলের আশীর্বাদ নিয়ে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত সপ্তম গ্রেডের জাকির ঠিকই এ পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন।
চলতি বছরের ১৫ মে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পাওয়া আবুল হোসাইনের বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) স্বীকৃত পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রী নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপরেও ওই চিকিৎসক নেতার বন্ধু হিসেবে তিনি প্রাইজ পোস্টিং পেয়েছেন।
নিয়ম বহির্ভূতভাবে তিনি কীভাবে সহযোগী অধ্যাপক ও ভাইস প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পেলেন এ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাধারণ চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সূত্র মতে, একই পদে ক’দিন আগে থাকা শিখা রুদ্র মহল বিশেষের হস্তক্ষেপে অতিরিক্ত চাকরি করেছেন। এ বিষয়টি অবহিত হয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে কলেজ প্রিন্সিপালকে চিঠি দিয়ে এর কারণ জানতে চাওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, ডা: শিখা রুদ্র’র এসএসসি সার্টিফিকেট টেম্পারিং করে জন্ম তারিখ এক বছর বাড়ানো হয়েছে। এ কেলেঙ্কারী ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর চলতি বছরের ২২ এপ্রিল তিনি পিআরএল’এ চলে যান।
এসব বিষয়ে কলেজটির সদ্য যোগ দেয়া ভাইস প্রিন্সিপাল ডা: এ.কে.এম.আবুল হোসাইন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমার যোগ্যতা না থাকলে এ পদে পদায়ন করা হতো না। আমি লন্ডনে ডিপ্লোমা ইন গাইনোকোলজিস্ট অ্যান্ড অবস্ট্রেটিকস্ (ডিজিও) করেছি। আমার নিবন্ধন নম্বর ১৫৩২১। আমার সব ঠিকই আছে বলেই আমি ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মো. আনোয়ারুল হক ফরাজী বলেন, ‘ডা. একে এম আবুল হোসাইন এমবিবিএস পাশ করেন ১৯৮৫ সালে। এমবিবিএস ছাড়া ১৫৩২১ নম্বর নিবন্ধনে তার আরও কোনো গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি নেই।’
এদিকে, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের (মমেক) ২০১৬-১৭ বছরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ৯ কোটি টাকার ভারী যন্ত্রপাতি কিনতে সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ২০১৭ সালের মার্চ মাসের দিকে আরডেন্ট সিস্টেম নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে ওই দরপত্রের কার্যাদেশ পাইয়ে দিতে আন্ডার গ্রাউন্ড দৈনিকে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। বাজারদর কমিটি অতি উচ্চমূল্য নির্ধারণ করে কৌশলে এ প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিয়েছে। এর মাধ্যমে গুটিকয়েক লোক নিজেদের মাঝে পার্সেন্টিজ ভাগাভাগি করেছেন এমন আলাপচারিতাও চলছে।
সূত্রের অভিযোগ, আরডেন্ট সিস্টেমের কর্ণধার মিঠু নামের একজন স্বাস্থ্য সেক্টরে বিতর্কিত হিসেবে পরিচিত। সরকারি চাকরিজীবী ডেন্টাল সার্জন ডা: তানভীর এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজ দেখাশুনা করেন। এসব অভিযোগের সত্যাসত্য যাচাই-বাছাই করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদন্তেরও দাবি তুলেছেন অনেকেই।
যদিও এসব অভিযোগের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের (মমেক) প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা: মো: আনোয়ার হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, সরকারি কাজ করার নিয়ম নীতি মেনেই কাজ হয়েছে। এখানে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। স্বার্থান্বেষী মহল ফায়দা হাসিল করতেই অপপ্রচার চালাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।