পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : এক ব্যতিক্রমধর্মী ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয় গত রোববার মুম্বাইয়ের মুম্বরায় অবস্থিত ফুরকান মসজিদে। ঘড়িতে ৭টা ১৫ মিনিট হবার সঙ্গে সঙ্গে রোযাদারগণ ৮ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী অতিথিকে সাথে নিয়ে ইফতার করেন। আন্তঃধর্মীয় সমাবেশের অংশ হিসেবে এসব বিশেষ অতিথি রমজানে অনুসৃত বিভিন্ন আমল খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ পান। মসজিদের মূল অংশে সবাই দুই সারিতে মেঝেতে অবস্থান গ্রহণ করেন। এক পাশে ছিলেন অতিথিবর্গ এবং অপর পাশে আয়োজকগণ। ইফতার গ্রহণের পূর্ব মুহূর্তে মসজিদ কমিটির সদস্য সাইফ আসরে ঘোষণা করেন, ‘এসব কাটলেট নিরামিষ নয়, সুতরাং যারা গোশত খান না, তারা থালা থেকে তা সরিয়ে রাখতে পারেন’।
আসরে বলেন, ‘আমাদের এ আয়োজনের উদ্দেশ্য হচ্ছে যেন অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষ ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান লাভ করতে পারেন’।
‘আমাদের ধর্মে আমাদের তিনটি জিনিস পালনের নির্দেশ দেয়া হয় - যে কোন সমস্যার সমাধান নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে কর, নিজের মুসলিম ভাইকে সহযোগিতা কর এবং যারা ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানে না তাদের কাছে তা ব্যাখ্যা কর’। রমজান ছাড়া আর কোন মাস এ নির্দেশনা পালনের উপযুক্ত সময়? আমাদের দুই ধর্মের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিকারী ভুল বোঝাবুঝিগুলো শুধরে নেবার এটাই সঠিক পন্থা। হিন্দু ও মুসলিমরা ইফতার উপলক্ষে এক সঙ্গে বসতে পারলে একটি আদর্শ পৃথিবী হবে-বলেন আসরে।
ফল, সামুসা ও কাটলেট গ্রহণের আগে উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ আযানের মাহাত্ব্য, ইসলামে মহিলাদের ভূমিকা, ইবাদাতের আদর্শিক পন্থা, ইবাদাতের অর্থ, রোযার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাসহ আরো অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
অতিথি ৮ জনের অন্যতম মুম্বরার বাসিন্দা শুভাঙ্গী সিন্দে বলেন, তিনি এর আগেও গত বছর রমজানে মসজিদে এ ধরনের সেশনে অংশ নিয়েছেন। ‘যদিও মহিলাদের মসজিদের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয় না, এ ধরনের অনুষ্ঠানের সুবাদে এর আগেও আমি মসজিদে প্রবেশের সুযোগ লাভ করেছি। আমি যখন প্রথম বার মসজিদে এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশ নেই আমি ভাববার অবকাশ পাইনি যে, মসজিদে আমার প্রবেশ সঠিক হচ্ছে কিনা। আমি এক ধরনের প্রশান্তি লাভ করেছি -যে কারণে আবার আজ আমি এখানে উপস্থিত হয়েছি’ -বলেন সিন্দে।
কল্যাণ থেকে আগত নিলেশ উপরিকরের জন্য এটা ছিল শিক্ষার এক অনন্য অভিজ্ঞতা। ‘আমি শিখেছি, যেসব ইবাদাত মানুষ করে থাকে এবং সেগুলোর মাহাত্ব্য সম্পর্কে’-বলেন উপরিকর।
এদিকে অপর এক অভ্যাগত নিরজ পাট্টাথ বলেন, আমি যখন শুনলাম মসজিদে এ ধরনের একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে, সামাজিক মাধ্যমে বিস্তারিত দেখতে পেলাম। সেখানে কোন কণ্টাক্ট নাম্বার না থাকায় মসজিদের সাথে যোগাযোগ করি। ‘আমি কলেজে ইতিহাস পড়েছি, যে কারণে সবসময় কোন একটি বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী ছিলাম। আমি বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে অনেক কিছু শুনেছি। কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন না করতে পারলে কোন কিছু জানতে পারব না। আজ, ইসলাম সম্পর্কে অনেক কিছু শিখলাম, আমি আমার সম্প্রদায়ের কাছে এখন এ সম্পর্কে আলোচনা করতে পারব’ -বলেন আইটি স্পেশালিস্ট পাট্টাথ। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।