পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যশোর থেকে বিশেষ সংবাদদাতা : ভারতের রোন পোলেঙ্ক কোম্পানীর কাশির সিরাপ ফেনসিডিল এপারে ব্যবহৃত হয় নেশাদ্রব্য হিসেবে। জীবনবিনাশী ফেনসিডিলের ভয়াল থাবা রুখে দেয়া যায়নি বছরের পর বছর ধরে নানা অভিযানে। সুন্দরবনের কৈখালী থেকে কুষ্টিয়ার চিলমারীর পদ্মাপাড় পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের অন্তত অর্ধ শতধিক পয়েন্ট দিয়ে ভারত থেকে সর্বনাশা ফেনসিডিল ঢুকতো। ওপারে ফেনসিডিলের নকল কারখানাও তৈরী হত বাংলাদেশে পাচারের জন্য। গত কয়েকবছর ফেনসিডিল উৎপাদন ও পাচার অনেকটাই কমে গেছে। এখন যুক্ত হয়েছে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য।
ভারতীয় ফেনসিডিলসহ মাদকের ভয়াবহতায় যশোর ছিল একসময় শীর্ষে। সীমান্তবর্তী জেলাটি ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার হতো। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, উৎস বন্ধ না করে যতরকম ব্যবস্থাই নেওয়া হোক সাময়িক সফলতা আসলেও স্থায়ীভাবে মাদকের ব্যবহার শূন্যের কৌঠায় আনা খুবই কঠিন। তবে এক্ষেত্রে যশোরের চিত্র বর্তমানে ভিন্ন। যশোরের এসপি আনিসুর রহমান বহুমুখী কৌশল ও কর্মসূচী গ্রহণ করে মাদক নিয়ন্ত্রনে যথেষ্ট সফল হয়েছেন। যার কারনে যশোর হতে পারে মডেল। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, যশোর জেলায় মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের দাপট ছিল অপ্রতিরোধ্য। যশোরে এসপি আনিসুর রহমান যোগদানের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। সেই থেকে লাগাতার অভিযানে একে একে শহর ও শহরতলীর মাদক স¤্রাটদের আস্তানা গুড়িয়ে সেখানে গাছ রোপন করে ইতিহাস সৃষ্টি করেন। চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২১মে পর্যন্ত ১শ’দিনের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম ঘোষণা, সেটি সফল হওয়ায় আরো ১শ’১দিনের বহুমুখী কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়। ক্র্যাশ প্রোগ্রামের পাশাপাশি, ‘এসড্রাইভ’ ও ‘ডোর টু ডোর’ প্রোগ্রাম, মাদক ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দেয়া, ছবিসহ পোস্টার ও লিফলেট বিলি করে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা, আত্মসমর্পণ কর্মসূচী, সমাজের গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তি এবং সাংবাদিকদের সমন্বয়ে গোলটেবিল ও স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ-ছাত্র কাউন্সিলিং,স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনে জেলা পুলিশের ২সহ¯্রাধিক সদস্য একদিনের বেতন দেয়াসহ বহুমুখী পদক্ষেপ নেন এসপি আনিস। বিষয়টি যশোরের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়। এসব কারনে যশোর মাদক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবুও সারাদেশের চলমান মাদকবিরোধী পুলিশ ও র্যাবের প্রতিদিনই মাদক ব্যবসায়ী আটক, মাদকদ্রব্য উদ্ধার হচ্ছে। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, মাদকের উৎসমুখ বন্ধ করা জরুরি। তাহলেই যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমে চলমান অভিযান সফল হবে। একইসঙ্গে মাদক স¤্রাটদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
যশোরে মাদকবিরোধী পুলিশ ও র্যাবসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার চলমান অভিযানের আগেই যশোর মাদক নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই সফল হয়েছে। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত ৬জন মাদক স¤্রাটসহ ১৪জন মাদক ব্যবসায়ী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে ৩৮ কোটি টাকার মাদক। মাদক বিক্রেতা আটক হয়েছে প্রায় ২ হাজার। এসপি আনিসের উদ্যোগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী আত্মসমর্পণ করে প্রায় ৯শ’। মাদক মামলা হয়েছে সহ¯্রাধিক। এ সময়ে ১৪ জন মাদক স¤্রাট বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। অস্ত্র গোলাবারুদের উদ্ধার হয় শতাধিক। যশোরের বহুমুখী কর্মসূচীতে সফলতা আসার কারনে আরো কয়েকটি জেলা একই কৌশল অনুসরণ করেছে বলে পুলিশের একটি সুত্র জানায়। মাদকদ্রব্যের পাশাপাশি অস্ত্র চোরাচালান সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের সীমান্ত পারাপারের সুযোগ করে দিচ্ছে সংঘবদ্ধ চক্র। সীমান্ত সুত্র জানায়, দেশের অভ্যন্তরে চলমান অভিযানের ফলে বর্তমানে সীমান্তপথে মাদকদ্রব্য ঢুকছে কম। মাদক ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও তেমন দেখা যাচ্ছে না। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।