পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের হার দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, বাজেট বাস্তবায়নের হার কমে যাওয়া সরকারের জন্য একটা ব্যাড সিগনাল। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আগামী অর্থবছর থেকে বাজেট বাস্তবায়ন যাতে সহজ হয় সেজন্য বিশেষ দিক-নির্দেশনা থাকবে। যাতে বাজেট অনুমোদনের পর পরই অর্থ খরচ করা যায়।
গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক প্রাক বাজেট আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টে‘র উদোগে ‘স্বপ্ন পূরণের বাজেট’ প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির রূপরেখা শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সভাপতি ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ডা. মামুন আল মাহতাবের উপস্থাপনায় বৈঠকে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, পিকেএসএফ‘র চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জামান, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সদস্য ড. শামসুল আলম, পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জাহিদ সাত্তার।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ২০১২ সাল থেকে বাজেট বাস্তবায়নের ক্রমান্বয়ে কমছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের হার ৯৩ শতাংশ ছিল। গত কয়েক বছরে বাজেট বাস্তবায়নের হার ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে এখন ৮০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। এটি খুবই অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে দক্ষ জনবলের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। ২০১১ সাল থেকে বাজেটে দক্ষ জনবল সৃষ্টিতে নানা পদক্ষেপে নেয়া হচ্ছে। এবারের বাজেটে দক্ষ জনবল সৃষ্টিতে বিশেষ পদক্ষেপ থাকছে। তিনি বলেন, আগামী বাজেটে অবহেলিত জনগোষ্টি এবং সামাজিক সুরক্ষায় বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হবে। তিনি বলেন, দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে, তবে এটা কেন কমছে সেটা আমি জানি না। অর্থমন্ত্রী বলেন, অনেক রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান লোকশানে রয়েছে। তাদেরকে প্রতিবছর অর্থ বরাদ্দ দিতে হচ্ছে। তবে আশার কথা হচ্ছে লোকসানের পরিমাণ বাড়ছে না।
আগামী বাজেটের আকার প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি প্রথমে ৬ লাখ কোটি টাকার বাজেট দেব বলে ভাবছিলাম। কিন্তু পরে তা কমিয়ে ৫ লাখ টাকার নীচে আনা হয়েছে। তবে ৫ লাখ টাকার বাজেট দিতে পারলে আমি খুশি হতাম। এই জন্য আমি আন হ্যাপি। তিনি বলেন, এই বাজেট উচ্চাভিলাসী নয়। তবে বাজেটের অর্থ খরচ করতে না পারার কারণে এক অর্থে একে উচ্চাভিলাসী বলা যায়। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেটে কালো টাকা সাদা করার কোন সুযোগ থাকছে না। কারণ অতীতে এই ধরনের অনেক সুযোগ দেয়া হয়েছে কিন্তু কারও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।
ড. মশিউর রহমান বলেন, আমাদের বাজেটকে কখনো উচ্চাভিলাসী বলা যাবে না। তবে বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা আমাদের বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, আগামী বাজেট হতে হবে বিনিয়োগ বান্ধব বাজেট। বাজেটে কর বাড়ানো হলে বেসরকারিখাতে বিনিয়োগ কমে যায়। এই বিষয়টি আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাজেট বাস্তবায়নের হার এবং গুনগত মান কমে যাচ্ছে। সে দিক বিবেচনা করলে এই বাজেটকে উচ্চাভিলাসী বাজেট বলা যায়। ২০১২ সাল থেকে বাস্তবায়নের হার ৯৩ শতাংশ থাকলেও চলতি অর্থবছরে তা ৮০ শতাংশের নীচে নেমে এসেছে। তাই বাজেটের আকার বাড়ানোর আগে আমাদের বাজেট বাস্তবায়নের দক্ষতা বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ দেয়া নেয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে অকার্যকর বিচার ব্যবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বর্তমান বিচার ব্যবস্থায় লাখ লাখ মামলা নিস্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে দেশে দারিদ্র্যের হ্রাসের হার কমছে। এটা বাড়ানোর জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে।
ড. কাজী খলীকুজ্জামান বলেন, বাজেটে উন্নয়নের দর্শন থাকতে হবে। টেকসই উন্নয়নের জন্য বাজেটে সবাইকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসতে হবে। কাউকে বাদ দেয়া যাবে না। বিশেষ করে বেদে, দলিত সম্প্রদায় এবং সাওতালসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টির জন্য বিশেষ সুবিধা থাকতে হবে। তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে বাজেটে কৃষি খাতের বরাদ্দ তুলনামূলকভাবে বাড়ছে না। এই খাতে বরাদ্দ আরো বাড়াতে হবে।
মূল প্রবন্ধে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাজেটে আমাদের রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র (এসআইডি) ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে সহজেই জনগণকে ট্যাক্সের আওতায় নিয়ে আসা যাবে। সরকারের রিজার্ভ অর্থ অলসভাবে ফেলে না রেখে সভরিন বন্ড চালু করা যেতে পারে। এছাড়াও বাজেটে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থা চালু করে জেলায় জেলায় সরকার ব্যবস্থা চালু করা দরকার। তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারী সর্বজন বিদিত। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ এবং পুঁজিবাজারে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তি করতে দিক নির্দেশনা থাকতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।