Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

“হামলাকারীদের বিচার না হলে আবারও রাজপথে নামবে ছাত্রসমাজ”

| প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

 ঢাবি সংবাদদাতা : জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক ও আন্দোলনের যুগ্ম আহŸায়ক সুহেল হোসাইনের উপর হামলাকারীদের অতিদ্রæত গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। অন্যথায় ছাত্রসমাজ আবারও রাজপথে নামবে । 

গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুন। তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরুতেই আন্দোলনকারীদের উপর শুরু থেকেই হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে। গত কয়েকদিন আগে আমাদের অন্যতম সহকর্মী সুহেলকে ছাত্রলীগ হামলা করে। আমরা তাদের বিচার দাবি করি। একই সাথে সুহেলের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে সরকারকে আহবান জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে আহত সুহেল তার উপর হামলাকারীদের পরিচয় দিয়ে বলেন, পরীক্ষার হল বের হওয়ার সময় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক শোভন, জামালপুর জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির জবি শাখার সাধারণ সম্পাদক এস কে মিরাজ, পরিসংখ্যান বিভাগের মাহফুজ ও বাবু আমার উপর হামলা করে। এরা সবাই জবি শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও শাখা সভাপতি তারিকুল ইসলামের অনুসারী।
এসময় তিনি আরো বলেন, কোটা আন্দোলন নিয়ে আমাদের ক্যাম্পাসের (জবি) ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমার উপর ক্ষিপ্ত ছিল। আন্দোলনে যাতে না যাই এর জন্য তারা এর আগেও নানাভাবে আমার উপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছিল। তিনি বলেন, বুধবার আমার পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা দিয়ে বিকাল তিনটার দিকে আমি বের হই। তখন থেকেই ছাত্রলীগের বাবুসহ কয়েকজন নেতাকর্মী আমাকে অনুসরণ করছিল। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেট দিয়ে বের হয়ে রাস্তা পার হয়ে বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে যেতেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমার গতিরোধ করে। এ সময় আমার সাথে কয়েকজন বন্ধু ছিল। ওরা (হামলাকারীরা) আমাকে এসে বলে ‘তোমার সাথে একটু কথা আছে, সাইডে চলো।’ তখন আমার বন্ধুরা জিজ্ঞেস করে- ওকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? প্রশ্নের জবাবে তারা বলে, ‘কোথাও না, ওর সাথে একটু কথা বলবো, তোমরা চলে যাও।’ এরপর ওরা আমাকে নিয়ে ক্যাম্পাসের টিএসসির পাশের গলিতে ঢুকে। সেখানে একটা জায়গায় আমাকে দাঁড় করিয়ে আশপাশে তাকিয়ে তারা সিসিটিভি ক্যামেরা দেখতে পায়।
ক্যামেরা দেখে ১০-১২ জন ছাত্রলীগ কর্মীদের একজন বলে উঠ, এখানে দাঁড়াবো না ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা আছে। অন্য জায়গায় যাই। তখন তারা আমাকে বাংলাবাজার গার্লস স্কুল লাগোয়া সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের গলির ভেতর ঢোকায়।
সেখানে দেয়ালের সাথে দাঁড় করিয়ে তারা আমাকে বলে, কিরে আন্দোলন তো ভালই করলি, কত টাকা পেয়েছিস কোটা আন্দোলন করে? আয় তোকে আন্দোলন শেখাই। তুই না সেলফি তুলতে পছন্দ করিস? তোর দাঁতগুলো তো অনেক সুন্দর। আয় এগুলো ভেঙে দিয়ে সেলফি তুলি। এটা বলেই তারা আমার নাকেমুখে কিল ঘুষি মারতে শুরু করে। এ সময় আমার নাকের নিচে ঠোটের উপরের অংশ ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। আর কয়েকজন রড ও লাঠি দিয়ে আমার পায়ে ও পিঠে আঘাত করতে থাকে। পরে আমাকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে তারা চলে যায়।
হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে জানিয়ে সোহেল বলেন, বুধবার রাতে আমি নিজে বাদি হয়ে হামলার ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় মামলা করেছি। জড়িতদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। হামলাকারীদের বিচার না করলে ছাত্রসমাজ আবারও রাজপথে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীদের যুগ্ম-আহবায়ক ফারুক হোসেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ