পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ক্ষমতায় থাকার আকুতি জানাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সরকারি অর্থ ব্যয় করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভারতের কাছে আকুতি জানাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সফর করেছেন। দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে স্বার্বভৌমত্বকে দূর্বল করে ট্রানজিটসহ ভারতকে সব কিছু উজাড় করে দিয়েছেন শেখ হাসিনার সরকার। কিন্তু বিনিময়ে কিছুই পায়নি বাংলাদেশ। তবে প্রতিদান হিসেবে ক্ষমতা ধরে রাখতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি (শেখ হাসিনা)। গতকাল (রোববার) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ভারতের সাথে বাংলাদেশের প্রেম একতরফা অভিযোগ করে রিজভী বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি এখনও হয়নি। বছরের পর বছর শুনছি আলোচনা, কম্পিউটারের টাইপ, দিস্তার পর দিস্তা কাগজ খরচ হচ্ছে। কিছুই হচ্ছে না। আমি বলেছি এরা (ভারত) দেবে না। প্রেম যদি ওয়ান ওয়ে ট্রাফিক হয়, সেখান থেকে কখনও কিছু পাওয়া যাবে না। রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনার পক্ষে দাঁড়ায়নি ভারতের সরকার, এটাই স্বাভাবিক। তারা কখনও দাঁড়াবে না। শুক্রবার শান্তিনিকেতনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ওই দিন ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধনের পরে সেখানেই মোদীর সঙ্গে বৈঠকে হাসিনা জানিয়েছেন ট্রানজিটসহ সব দিয়েছে তার সরকার, আন্তর্জাতিক মঞ্চে বরাবর দিল্লির পাশে থেকেছে। বাংলাদেশের নির্বাচনের বছরে এবার তাই ভারতের সহযোগিতা চাই। গণমাধ্যমের খবরে এটা পরিস্কার শেখ হাসিনা দেশের স্বার্থে ভারত যাননি, তিস্তার পানির জন্য যাননি, সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যার রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে যাননি, তিনি গেলেন ক্ষমতায় টিকে থাকার দেনদরবারে। শেখ হাসিনা এখন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে নিজ দেশের জনগণকে বাদ দিয়ে মুরুব্বিদের কাছে দেন-দরবার শুরু করেছেন। কারণ তিনি (শেখ হাসিনা) বুঝতে পেরেছেন, তার বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। সেজন্য ক্ষমতাসীনদের চিরাচরিত আশ্রয়স্থল ভারতের শরণাপন্ন হয়েছেন।
বন্দুকের জোরে আর ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না মন্তব্য করে রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার দুঃশাসনের জবাব দিতে মানুষ প্রস্তুত হয়ে আছে। গণতন্ত্র হত্যা করে, দেশের বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করে বন্দুকের জোরে আর ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না। বিচার বহির্ভূত হত্যায় সারাদেশকে লাশের মিছিলে পরিণত করে, দূর্নীতি আর লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি আর দলীয়করণের মাধ্যমে গোটা দেশকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছেন শেখ হাসিনা। এখন তাঁর প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় কারাগারে ঢুকিয়ে একটা অস্বাস্থ্যকর, জরাজীর্ণ, নানা অসুখ-বিসুখের উৎসস্থল অবাসযোগ্য কারাকক্ষের মধ্যে বাস করাতে বাধ্য করার পরও প্রধানমন্ত্রী এবার একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের মনোবাসনা পূরণে নিরাপদ বোধ করছেন না। তাই তাদের চিরাচরিত আশ্রয়স্থল ভারতের শরণাপন্ন হয়েছেন শেখ হাসিনা। আবারও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মতো আরেকটি একতরফা নির্বাচন নিশ্চিত করে অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে চান তিনি। তবে দেশের জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে না। তাঁর নেতৃত্বেই বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
ভারত স্বৈরশাসককে টিকিয়ে রাখতে চাইবেনা আশা প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ভারতের মতো বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ স্বীকৃতপ্রাপ্ত স্বৈরশাসককে টিকিয়ে রাখতে চায়, এটা বাংলাদেশের মানুষ সেটা বিশ^াস করতে চায় না। কারণ দু’দেশের বন্ধুত্ব হলো জনগণের সঙ্গে জনগণের। অতীতের মতো কলঙ্কজনক নির্বাচন সমর্থন করা ভারতের উচিৎ নয়। কিন্তু যদি বাংলাদেশের জনসমর্থনহীন একজন ব্যক্তি ও দলকেই বারবার তারা ক্ষমতায় দেখতে চায় তাহলে বাংলাদেশের জনগণ মনে করবে ভারত শেখ হাসিনার মাধ্যমে বাংলাদেশে আধিপত্য কায়েম করতে চায়। যেটি হবে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের সামিল।
দেনদরবার ও আকুতি-মিনতি করে লাভ হবেনা জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, দেনদরবার ও আকুতি-মিনতি করে কোন লাভ নেই, জনগণই সকল ক্ষমতার ধারক। অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। বাংলাদেশের জনগণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়ে দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা নিশ্চিত করুন। নইলে জনগণের অধিকারের পক্ষে আমাদের উচ্চারণকে কখনোই থামাতে পারবে না অবৈধ সরকার। মিথ্যা কথার হানাদারিতে কাউকে প্রভাবিত করতে পারবেন না।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাকে সুষ্ঠু ভোটের শত্রæ আখ্যায়িত করে এই বিএনপি নেতা বলেন, জাতীয় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, সিইসির অনুগত ভূমিকা ততই স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। এই সিইসির অধীনে বিষাক্ত প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাসীনদের সন্ত্রাসী নির্বাচন ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। মাকবিরোধী অভিযানের নামে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার তিরিপিনি ইউনিয়ন যুবদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন মোল্লাকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলেও জানান রিজভী। তিনি এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন। নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।