Inqilab Logo

শনিবার, ০১ জুন ২০২৪, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

শিল্পঋণে খেলাপি বেড়েছে ২৭ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের একটি বড় অংশই চলে যায় শিল্প খাতে। অন্যান্য খাতের মতো শিল্প খাতের ঋণও খেলাপি হয়ে পড়ছে। গত এক বছরে শিল্পঋণ বিতরণ যেমন বেড়েছে, তেমনিভাবে বেড়েছে খেলাপি ঋণও। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাবে দেখা যায়, দেশে বিতরণ হওয়া মোট শিল্পঋণ এক লাখ ৬৯ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিই ৩১ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা। এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ছয় হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা বা ২৬ দশমিক ৮১ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথমার্ধের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে শিল্প খাতে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ১৭ দশমিক ১০ শতাংশ। পাশাপাশি বেড়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ, বকেয়া স্থিতি ও শ্রেণীকৃত ঋণ। চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বর শেষে শিল্প খাতে বিতরণ করা এক লাখ ৬৯ হাজার ৩৪০ কোটি টাকার মধ্যে চলতি মূলধন ঋণ এক লাখ ৩৫ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণের ৮০ দশমিক ১৩ শতাংশ। মেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৩৩ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণের ১৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
আর্থিক খাতের বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় ঋণ বিতরণে অনিয়ম হয়। ওই সময় বিতরণ করা ঋণ এখন খেলাপি হয়ে পড়েছে। এগুলো যতদিন থাকবে, খেলাপি ঋণ ততদিন বাড়তেই থাকবে। এ বিষয়ে সম্প্রতি অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও মেঘনা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, সব খাতে খেলাপি হচ্ছে। তবে শিল্প খাতে একটু বেশি। তার মতে, পুনঃতফসিল করা ঋণ আবার খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। সে কারণে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে বিতরণ করা মোট শিল্পঋণের মধ্যে শ্রেণীকৃত স্থিতির পরিমাণ ৩২ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে মাঝারি শিল্প ও ক্ষুদ্র শিল্পে এ বৃদ্ধির হার যথাক্রমে ১৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং ২৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময় শেষে ব্যাংকের ধরনভেদে শ্রেণীকৃত ঋণের হার রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকে ২৮ দশমিক ৮১ শতাংশ, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় চার দশমিক ৩৩ শতাংশ, বিদেশি ব্যাংকে দুই দশমিক ৯২ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংকে ৩০ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আট দশমিক ২৩ শতাংশ।
প্রথম প্রজšে§র একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমরা এখন বৃহৎ শিল্পের তুলনায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ঋণে বিতরণে বেশি জোর দিচ্ছি, কেননা বড় শিল্পের চেয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বিতরণকৃত ঋণ কম খেলাপি হয়।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শিল্পঋণ বিতরণ করা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫১টি প্রতিষ্ঠানের শ্রেণীকৃত ঋণের হার পাঁচ শতাংশের নিচে, ১৬টি প্রতিষ্ঠানের শ্রেণীকৃত ঋণের হার পাঁচ শতাংশের বেশি কিন্তু ১০ শতাংশের নিচে, ছয়টি প্রতিষ্ঠানের শ্রেণীকৃত ঋণের হার ১০ শতাংশের বেশি কিন্তু ১৫ শতাংশের নিচে এবং ১৫টি প্রতিষ্ঠানের শ্রেণীকৃত ঋণের হার ১৫ শতাংশের বেশি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ