Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পোকামাকড়ের আক্রমণে খালেদা জিয়ার কক্ষটি যেন নরকবাস রিজভী

| প্রকাশের সময় : ২৪ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

 স্টাফ রিপোর্টার : পোকামাকড়ের আক্রমনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, স্যাঁত-স্যাঁতে, জ্বরাজীর্ণ ভবন দীর্ঘদিন পরিত্যাক্ত থাকলে যা হয় এখন সেইরকমই অবাসযোগ্য ও নানা অসুখ-বিসুখ আক্রমনের কেন্দ্রস্থলে পরিনত হয়েছে কারাগারে খালেদা জিয়ার বাসকরার কক্ষটি। অসংখ্য পোকামাকড়ে আর্কীণ কক্ষটি বাসকরা যেন নরকবাস। তাঁর শরীরে পোকামাকড়ের দংশণে তিনি আরো বেশি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গতকাল (বুধবার) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

রিজভী বলেন, গত মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাতের জন্য নিকট-আত্মীয়রা পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়েছিলেন। দেশনেত্রীর ঘাড়ে প্রচন্ড ব্যথা এবং বামহাতটা অবিরাম ব্যথার কারণে শক্ত হয়ে উঠেছে। দুইপা ক্রমাগত ব্যথা হচ্ছে এবং সেগুলো ভারি ও ফুলে উঠছে। মাত্র কিছুদিন আগে চোখে অস্ত্র-পচার হওয়ার কারণে দুই চোখই সারাক্ষণ জ্বালাপোড়া করতে থাকে। এর সঙ্গে বহুপ্রাচীন দেওয়ালগুলো থেকে ঝরেপড়া সিমেন্ট ও বালি চোখদুটোর অবস্থা আরো গুরুতর অবনতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ব্যথায় চোখদুটো সবসময় লাল হয়ে থাকে। রুমটি ভেজা-ভেজা ও অস্বাস্থ্যকর ধূলাকীর্ন থাকার কারণে তাঁর প্রচÐ কাশি প্রতিদিন বেড়েই চলছে।
সরকার খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে বিপন্ন তুলতে চাইছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বার-বার দাবি করা সত্বেও তাঁকে সু-চিকিৎসার বন্দোবস্ত না করা সম্পর্কে আমরা যে কথাগুলো বলেছি অর্থাৎ দেশনেত্রীকে দূঃসহ জীবন-যাপনে বাধ্যকরে তিলে-তিলে বিপন্ন করে তোলাই সরকারের মূখ্য উদ্দেশ্য-সেটিই বাস্তবায়িত হচ্ছে। সরকারের নির্দেশিত চিকিৎসকদেরও পরামর্শ জেল কর্তৃপক্ষ কানে তোলেননি কারণ কর্তৃপক্ষের পিছনে দাঁড়িয়ে আছে সরকারি হুংকার। এই কারণে এখন পর্যন্ত তাঁকে অর্থপেডিক্স বেড দেয়া হয়নি। বিশেষায়িত হাসপাতালে এম-আর-আই পরিক্ষা ইত্যাদি অগ্রাহ্য করেছে কর্তৃপক্ষ। জালিমশাহীর হিং¯্রতায় ক্রমাগত জর্জর করে তোলা হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। ক্ষমতার নেশায় নিজেরা কন্টক মুক্ত হতেই বেগম জিয়ার উপর চালাচ্ছে নিপীড়ন-নির্যাতন।
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ বিএনপিকে ধ্বংস করাই প্রধানমন্ত্রী এজেন্ডা মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়েই প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়াকে অবৈধ ক্ষমতার জোরে বন্দি করে রেখে ধুকে-ধুকে তাঁকে কষ্ট দিচ্ছে। কিন্তু তার চিকিৎসা নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবেনা। অত্যাচারীর দুঃশাসনের অবসান করতে জনগনের প্রতিজ্ঞা কখনই নিস্ফল হয়নি।
দেশব্যপী মাদকনির্মুলের অভিযানে মানুষ হত্যার ঘটনাকে বিকারগ্রস্থ মন্তব্য করে রিজভী বলেন, গত ৯ দিনে বন্ধুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে ৪৩ জন, নিহত ব্যক্তিদের মাদক ব্যবসায়ী বলছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এতে প্রকৃত বড়-বড় মাদক ডিলাররা অন্তরালে থেকে যাচ্ছে কিভাবে? প্রভাবশালী মন্ত্রীদের বাড়ীতে তারা দেখা-সাক্ষাত করছে। চারদিকে গভীর সংশয় দেখা দিয়েছে, সরকারি এই মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে। সন্দেহভাজনদেরও হত্যা করা হচ্ছে কোন উদ্দেশ্যে? তিনি বলেন, যতবড় অপরাধী হোক তা বিচারবর্হিভ‚ত হত্যার সুযোগ নেই। এই মাদকবিরোধী অভিযানের নামে মানুষ হত্যার উৎসবে এরা বেছে-বেছে সরকারবিরোধী নির্দোষ তরুনদেরও অপরাধী সাজিয়ে হত্যা করবে। তার-দৃষ্টান্ত নেত্রকোনার ছাত্রদল নেতা আমজাদ হোসেনের ঘটনায়। বিএনপি নেতা বলেন, বিচারবর্হিভ‚তভাবে নির্বিচারে বন্দুক-যুদ্ধে মানুষ হত্যায় পৃথিবীর কোথাও সামাজিক অপরাধ দমন করা যায়নি। রাষ্ট্র যদি নানা অপরাধের পৃষ্ঠপোষক হয়, রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিতদের যদি বৈধসত্বা না থাকে, তাহলে তাদের দ্বারা সৃষ্ট বে-আইনী কর্মকান্ড বিভৎস্যরূপে আত্মপ্রকাশ করবেই। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহদফতর সম্পাদক মো. মনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহম্মেদ প্রমুখ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ