পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : মৃত্যুদন্ড দিয়ে অপরাধ রোধ করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেস্টা ও মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব অ্যাডেভোকেট সুলতানা কামাল। তিনি বলেছেন, নিন্ম আদালতে প্রায়ই অপরাধীদের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমরা মনে করি, মানুষের জীবন কেড়ে নেয়ার অধিকার কারও নেই। এ বিষয়ে বিকল্প চিন্তাভাবনা করতে হবে। গতকাল সোমবার জাতিসংঘের সর্বজনীন পুনর্বীক্ষণ প্রক্রিয়ার আওতায় বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, গুম, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকারকর্মীদের সুরক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
সুলতানা কামাল বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রকে আরও কঠোর হতে হবে। তবে অপরাধ যতই দুর্ধষ হোক না কেন, এর বিচার আইনের আওতায় হতে হবে। সরকারের বাহিনীকে বন্দুক দেয়া হয়েছে ব্যবহারের জন্য। কিন্তু সেই সঙ্গে বন্দুক ব্যবহারের বিধিও দেয়া হয়েছে। সুতরাং বিধিবিধান মেনে বন্দুক ব্যবহার করতে হবে। মাদক নির্মূলে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করতে হবে। প্রতিদিনই গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে শাস্তি দিতে হবে।
এতে এএলআরডির প্রতিনিধি শামুসল হুদা বলেন, জেনেভাতে বাংলাদেশ বলেছে, তারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডে বিশ্বাস করে না। কিন্তু কথিত বন্দুকযুদ্ধে আজও মানুষ মারা গেছে। এভাবে প্রতিনিয়ত ঘটতে থাকলে একসময় দেশে আইনের শাসন বলে কিছু থাকবে না। অপরাধের বিচার আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে না হলে বিচারব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ১৪ মে সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বাংলাদেশের দেয়া প্রতিবেদন, বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনের প্রতিবেদন এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের পরিস্থিত তুলে ধরা হয়। মানবাধিকার কাউন্সিলের এসব আলোচনার বিষয় তুলে ধরতে সেন্টার ফর সোশ্যাল অ্যাকটিভিজম , নেটওয়ার্ক অব নন- মেইনস্ট্রিম মারজিনালাইজড কমিউনিটি , অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এবং কাপেং ফাউন্ডেশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
লিখিত প্রস্তাবে বলা হয়, আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের ২৮ সদস্যের প্রতিনিধিদল জেনেভার কাউন্সিলে অংশ নেয়। এর আগে ২০০৯ ও ২০১৩ সালে একই রকম আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। তবে আগের দুবারের তুলনায় এবার অনেক বেশি দেশ বাংলাদেশ বিষয়ে তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে এবং ২৫১টি সুপারিশ করে। বাংলাদেশ ১৬৭টি প্রস্তাব গ্রহণে সম্মতি এবং ২৩টির বিষয়ে মতামত জানাতে সময় নিয়েছে। গ্রহণ করা অন্যতম প্রস্তাব হলো পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়নে রোডম্যাপ তৈরি করা। বাংলাদেশ গুমবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদ, উদ্বাস্তবিষয়ক সনদ, অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকারবিষয়ক আইএলও সনদ, শিশুশ্রম নির্মূলবিষয়ক সনদের কয়েকটি অনুচ্ছেদ, নারীর প্রতি বৈষম্য বিলোপে আন্তর্জাতিক সনদের কয়েকটি অনুচ্ছেদ এবং মৃত্যুদন্ড বিলোপসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদে সই করেনি। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ৬১টি প্রস্তাব গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
কাউন্সিলে প্রায় ২০টি দেশ বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সুরক্ষা এবং প্রস্তাবিত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের সংশোধনীর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে। ১০টির বেশি দেশ সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের সুরক্ষার ওপর জোর দেয়। তারা অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ও মানবাধিকারকর্মীদের হত্যার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানায়। কাপেং ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা পল্লব চাকমা বলেন, ২০০৯ ও ২০১৩ সালেও বাংলাদেশ অনেক প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেশির ভাগই বাস্তবায়ন করেনি। এর মধ্যে অন্যতম হলো পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়নও আছে। এবার বাংলাদেশ পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের রোডম্যাপ প্রণয়নসহ ১৬৭টি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। সরকার এগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করবে, সে বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে জানাতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।