পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পঞ্চায়েত হাবিব : পাহাড়ি ভাতার মতো দুর্গম হাওর অঞ্চলে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য শিগগিরই হাওর ভাতা চালু হচ্ছে। এভাতায় সুনাগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট, মৌলভিবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ এবং নেত্রকনা জেলার সরকারি কর্মকতারা পাবেন। প্রণোদনামূলন এই ভাতা প্রদানের বিষয়টি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য এবিষয়ে গঠিত কমিটি এ সভার আয়োজন করেছে।
আজ সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) এর সভাপতিত্বে তার অফিস কক্ষে সকাল ১১টায় এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। জানা গেছে, জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০১৭-এর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে হাওর এলাকায় কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই ভাতা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছেন সরকার। তবে সর্বশেষ জেলা প্রশাসক সম্মেলনে কিশোরগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ আজিমুদ্দিন বিশ্বাস হাওর ভাতা চালু করার জন্য একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এর আগে হাওর অঞ্চলে কর্মরত অন্যান্য জেলা প্রশাসকরাও হাওর ভাতা চালু করার জন্য একাধিকবার দাবি জানিয়েছেন। দীর্ঘদিনের এই দাবির প্রেক্ষিতে এবার তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। হাওর ভাতা যাচাই-বাছাই কমিটির সভায় উপস্থিত থাকবেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিধি অনুবিভাগ) এর একজন প্রতিনিধি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব সচিব (প্রশাসন), অর্থ বিভাগরে যুগ্মসচিব মো. মমতাজ উদ্দিন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মুহাম্মদ লুৎফর রহমান।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. মুয়াজ্জেম হোসাইন ইনকিলাবকে কে বলেন, পাহাড়ি ভাতার মতো প্রণোদনামূলন হাওর ভাতা প্রচলনের জন্য কাজ চলছে। এবিষয়ে আজ যাচাই-বাছাই কমিটির সভায় প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হবে। এরপর জনপ্রশান মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এই প্রস্তাব প্রেরণ করা হবে। জনপ্রশাসন কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন এই ভাতা চালু করার প্রয়োজন আছে তাহলে তারা অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ও যদি সম্মতি দেয় তাহলে এই ভাতা চালু হবে। তার আগে না। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরীকে ইনকিলাবকে বলেন, হাওর অঞ্চলে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ সুবিধা অনেক কম। সেখানে নাগরিক সুবিধা নেই বললেই চলে। কিছু কিছু এলাকা পাহাড়ী এলাকা থেকেও দুর্গম, বন্ধুর, অনুন্নত ও পশ্চাৎপদ। জেলা প্রশাসক বলেন, পাহাড়ি ভাতার মতো হাওর অঞ্চলে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাওর ভাতা দেওয়া হলে তারা প্রণোদনা পাবে, খুশি হবে। এতে কাজের গতি আরও বাড়বে। তিনি বলেন, এসব এলাকার পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য প্রণোদনা হিসেবে হাওর ভাতা চালু করা প্রয়োজন।
জানা গেছে, বাংলাদেশের হাওর ও পাহাড়ি এলাকা অন্যান্য এলাকার চেয়ে অনেক বেশি অনুন্নত। দুর্গম এসব এলাকায় নাগরিক সুবিধা বলতে কিছুই নেই। তবে বিদেশী সংস্থাগুলোর কড়া নজরদারির ফলে পাহাড়ি এলাকায় এখন শিক্ষার আলোসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কিছুটা বেড়েছে। শিক্ষা, চাকুরি ও ভূমিসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পাহাড়িরা আদায় করে নিয়েছে। কিন্তু হাওর অঞ্চলের মানুষ এখনও এসব সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ফলে এ সুযোগ হাওরেও সম্প্রসারণে দাবি দীর্ঘদিনের।
হাওর অঞ্চলের কর্মকর্তারা বলেন, পাহাড়ে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাগণ পাহাড়ি ভাতা পান। আমরা অনেক দিন যাবত হাওর ভাতা’ চালুর দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু হাওর যে তিমিরে ছিল, সেখানেই রয়ে গেছে। আমাদের দাবি, হাওর অঞ্চলে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ‘হাওর ভাতা’ চালু করা হোক। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরীকে ইনকিলাবকে বলেন, হাওর অঞ্চলে কতজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে, এজন্য কি পরিমান অর্থের প্রয়োজন হতে পারে এসব বিষয় পর্যালোচনা করতে হবে। এখনেই হবে কি না তা বলা যবে না। বাংলাদেশ হাওর ও জলাভ‚মি উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহা পরিচালক মো. মজিবুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, হাওর ভাতা চালু হলে দেশের সাতটি জেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই ভাতা পাবেন। কারণ, হাওর অঞ্চল হিসেবে ধরা হয় সুনাগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট, মৌলভিবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকনা জেলাকে।
হাওর মূলত বিস্তৃত প্রান্তর, অনেকটা গামলা আকৃতির জলাভূমি যা প্রতিবছর মৌসুমী বৃষ্টির সময় পানিপূর্ণ হয়ে ওঠে। সমগ্র বর্ষাকাল জুড়ে হাওরের পানিকে সাগর বলে মনে হয় এবং এর মধ্যে অবস্থিত গ্রামগুলোকে দ্বীপ বলে প্রতীয়মান হয়। বছরের সাত মাস হাওরগুলো পানির নিচে অবস্থান করে। শুষ্ক মৌসুমে অধিকাংশ পানি শুকিয়ে গিয়ে সেই স্থানে সরু খাল রেখে যায় এবং শুষ্ক মৌসুমের শেষের দিকে সম্পূর্ণ শুকিয়ে যেতে পারে। শুষ্ক মৌসুমে হাওরের পুরো প্রান্তর জুড়ে ঘাস গজায়, গবাদি পশুর বিচরণক্ষেত্র হয়ে উঠে। হাওরে আগত পানি প্রচুর পলিমাটি ফেলে যায় যা ধান উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বাংলাদেশে প্রায় ৪০০টি হাওর রয়েছে। হাওরগুলোকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়। পাহাড়ের পাদদেশে বা পাহাড়ের কাছাকাছি অবস্থিত হাওর, প্লাবিত এলাকার হাওর, গভীর পানিতে প্লাবিত এলাকার হাওর। সবচেয়ে বেশি হাওর রয়েছে সিলেট বিভাগে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।