পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : রোজায় নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত তাই নতুন কৌশলে ক্রেতাদের পকেট কাটছে ব্যবসায়ীরা। পণ্যের হাত ও বাজার বদলের সঙ্গে সঙ্গে দামেও বড় ব্যবধান দেখা গেছে। যে যার মতন পণ্যের দাম হাঁকিয়ে ক্রেতাদের পকেট কাঁটছেন বিক্রেতারা। পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের নিত্য নতুন পণ্যের দাম বাড়ার চক্রে দিশেহারা ক্রেতারা। এমননি বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ১২টি সংস্থা মাঠে থাকার পরও ঠেকানো যাচ্ছে না পণ্যের উর্ধ্বগতি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারভেদে বেগুনের কেজি ৬০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও রাজধানীর কারওয়ান বাজারে থেকে এক কেজি বেগুন ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সে বেগুন গতকাল একই বাজারে বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা। শান্তিনগর বাজারের সামনের দোকানের সবজি বিক্রেতা নাজিম বলেন, বেগুন দামাদামি করবেন না, একদাম ১০০ টাকা। নিলে নেন, না নিলে চইলা যান। আমাগো দোকানে একদাম। অন্যদিকে একই বেগুন ফকিরাপুল বাজারে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেল, এখানে খুচরা বাজারে বেগুন ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যেসব বেগুন একটু লম্বা, সেগুলোর কেজি ৯০ টাকা। আর কিছুটা ছোট আকৃতির বেগুন ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ বছর বেগুনের দাম তেমন বাড়েনি দাবি করে বিক্রেতা মকবুল হোসেন বলেন, এবার বেগুনের দাম কমই আছে। গত বছর এই সময় বেগুন ১০০ টাকা ছিল বলে দাবি করে তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে সরবরাহ ভালো বলে দাম কিছুটা কম।
এক সপ্তাহ আগে তো বেগুনের দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা কম ছিল, এখন বাড়ল কেন? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগের কথা বাদ দেন। অখন দাম একটু বাড়বোই।
বাজারে ফার্মের কক মুরগি ও মাছের দর আগে থেকেই চড়া। নতুন করে বেড়েছে গরুর মাংস ও ব্রয়লার মুরগির দর। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) রোজা উপলক্ষে গরুর মাংসের দর প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা নির্ধারণ করলেও খুচরা বিক্রেতারা মাংস বিক্রি করছেন ৫০০ টাকা দরে, যা কয়েক দিন আগের তুলনায় ২০ টাকা বেশি। ব্রলার মুরগি কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকায় উঠেছে। সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত দামের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা তাচ্ছিল্যের সুরে বলেন, ওই দামে সিটি করপোরেশনের মাংস কেনেন।
এর আগে গত কয়েক দিনে সবজির দর প্রতি কেজি ৩০-৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০-৭০ টাকায় উঠেছে। মাছের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ। চিনির দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা, যদিও পণ্যটির দাম বিশ্ববাজারে কমেছে। ভোজ্যতেলের দাম বিশ্ববাজারে কমার সুফল হিসেবে খুচরা ব্যবসায়ীদের কমিশন বেড়েছে, ভোক্তারা সুফল পায়নি। ছোলার দামও যতটা কমার কথা, ততটা কমেনি। লবণে খুচরা বিক্রেতাদের কেজিতে ১০ টাকা মুনাফার সুযোগ দিচ্ছে কোম্পানিগুলো, কিন্তু ভোক্তাদের জন্য দাম কমাচ্ছে না।
এসবের মধ্যে ভোক্তার জন্য সুখবর চালের দামে। নতুন চাল উঠতে শুরু করায় সরু মিনিকেট ও মাঝারি চালের দাম কেজিতে তিন-চার টাকা কমেছে। অবশ্য নতুন চালের ভাত নরম হয়ে যায় বলে ক্রেতাদের কাছে তা বিশেষ পছন্দ নয়। ফলে তাদের পুরোনো চাল বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে।
আড়তে অবিক্রীত, খুচরায় দর দ্বিগুণ: বিভিন্ন জেলার পাইকারি হাট থেকে কিনে আনতে যে ব্যয় হয়েছে, কারওয়ান বাজারের আড়তে দাম তার চেয়ে কম। এ কারণে রমজান মাসের বিপুল চাহিদার বাজারেও বেগুন, শসা, কাঁচা মরিচ ও লেবু বিক্রি না করে রেখে দিয়েছেন ফড়িয়ারা।
সরকারের দর মানে না কেউ: হাতিরপুল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পাইকারি দর ও যৌক্তিক খুচরা দরের একটি তালিকা টাঙিয়ে রেখেছে। এতে মুনাফাসহ প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের যৌক্তিক দর লেখা আছে ৩৬-৪২ টাকা। ওই বাজারে গতকাল কাঁচা মরিচ বিক্রি হয় ৬০-৮০ টাকা দরে। একই বাজারে ৮০ টাকা কেজিতে বেগুন বিক্রি করতে দেখা যায়। আর শসা চাওয়া হয় ৬০-৭০ টাকা। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তালিকা অনুযায়ী কোনো পণ্যই যৌক্তিক দরে বিক্রি করতে দেখা যায়নি হাতিরপুল বাজারে।
মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য, ওজনে কম, বেশি দাম নেওয়ায় জরিমানা: সুপারশপ স্বপ্নের বনানী আউটলেটকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ভ্রাম্যমাণ আদালত। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি, ওজনে কম দেওয়া, পণ্যের গায়ে লেখা দামের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে এই জরিমানা করা হয়।
গতকাল রবিবার দুপুরের দিকে বনানীতে ‘স্বপ্ন’র আউটলেটে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা বিভিন্ন পণ্যের মান খতিয়ে দেখে দলটি। এরপর বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়ায় ওই আউটলেটকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন র্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। তিনি বলেন, স্বপ্নের বনানী সুপারশপে দেখা গেছে তারা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কোমল পানীয়র মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তারা তারিখ পরিবর্তন করে সেগুলো বিক্রি করছে। এ ছাড়া যেসব দুধ বা জুসের মেয়াদ আগেই শেষ হয়েছে, তা বিক্রি করছে। একই সুপারশপে দেখা যায়, স্টোররুমে তারা মেয়াদোত্তীর্ণ ও মেয়াদ আছে, এমন পণ্য একসঙ্গে রেখেছে। এ ছাড়া গরুর মাংস ৪৫০ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও তারা বিক্রি করছিল ৫৫০ টাকায়।
সারওয়ার জানান, এই সুপারশপে একটি পণ্যের গায়ে লেখা আছে ৯৮ টাকা আর তারা নিচ্ছিল ১৬৭ টাকা। এ ছাড়া পাঁচ কেজির পেঁয়াজ ২০০ গ্রাম কম দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগে স্বপ্নের বনানী সুপারশপকে জরিমানা করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।