Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিটি কর্পোরেশনের বেঁধে দেওয়া দাম মানছেন না গোশত ব্যবসায়ীরা

| প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম


স্টাফ রিপোর্টার : রমজান উপলক্ষে গোশত ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করে গোশতের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু গত দুই দিনে সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত দামে কোথাও গোশত পাওয়া যায়নি। বিক্রেতারা যে যেমন খেয়াল খুশি মতো দামেই গোশত বিক্রি করছেন। এ নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করছে। উত্তর সিটি কর্পোরেশন এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনও বৈঠকই করেনি। তবে সংস্থাটি বলছে ডিএসসিসি নির্ধারিত দাম তাদের এলাকাতেও বলবৎ থাকবে।
গত ১৪ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে গোশত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রথম রোজা থেকে ২৬ রোজা পর্যন্ত দেশি গরুর গোশত ৪৫০, বিদেশি গরু এবং মহিষের গোশত ৪২০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। একই বৈঠকে রোজায় খাসির গোশত ৭২০ টাকা এবং ভেড়া ও ছাগির গোশত ৬০০ টাকা করে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়।
অভিযোগ আছে, রাজধানীতে বিক্রির জন্য জবাই করা পশুর মধ্যে গরুর চেয়ে মহিষের সংখ্যা সব সময় বেশি। আবার গরুর মধ্যে দেশি গরুর পাশাপাশি ভারতীয় গরুর সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। একইভাবে খাসির চেয়ে ভেড়া ও ছাগির পরিমাণ থাকে বেশি। কিন্তু গোশত কাটার পর কোনটা দেশি গরু আর কোনটা ভারতীয় গরুর গোশত সেটি বোঝার সুযোগ থাকে না। আর অভিজ্ঞ না হলে মহিষের গোশতও বোঝা যায় না। একইভাবে খাসি আর ছাগি বা ভেড়ার গোশত আলাদা করে বোঝার সুযোগ নেই।
রোজার দ্বিতীয় দিন গোপিবাগ ও কাপ্তান বাজার ঘুরে দেখা যায়, সিটি কর্পোরেশনের বেঁধে দেয়া দাম কোন গোশতই মিলছে না। এছাড়া সব গোশতই দেশি গরুর বলে দাবি করেছেন বিক্রেতারা। আর মহিষের গোশত আছে, এটা কোনো বিক্রেতা স্বীকারই করতে চাননি। এবার দাম গত বছরের তুলনায় কম নির্ধারণ হওয়ায় সন্তোষ জানিয়েছেন ক্রেতারা। ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগের বছরের চেয়ে দাম বেশি হবে, এটাই দেখে আসছি এতদিন। এবার সিটি কর্পোরেশন
গতকাল শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারে ঘুরে দেখা যায়, গরুর গোশত প্রতি কেজি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, খাসির গোশত ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি বেশি দামে পশু কেনায় দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। সেগুনবাগিচা বাজারের খাসির গোশত বিক্রেতা শাহীন বলেন, আমরা এখনও চার্ট পাইনি। খাসির দাম বেশি হওয়ায় গোশতের দামও বেশি নেওয়া হচ্ছে।
একই বাজারের গরুর গোশত বিক্রেতা খোকন এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ খোকন বলেন, আমরা বেশি দামে বিক্রি করছি না। আগের দামেই বিক্রি করছি। সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারণ করে দেওয়া দামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই দামে দিমু তবে অর্ধেক হাড্ডি-চর্বি লইতে হইবু। না হলে পারুম না।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারেও একই চিত্র দেখা গেছে। এ বাজারে খাসির গোশত বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। নেই সিটি কর্পোরেশনের দামের কোনো তালিকা। গোপশত বিক্রেতা আরমান বলেন, এখন মালের দাম বেশি। তাছাড়া সিটি কর্পোরেশন থেকে এখনও কোনো কাগজ পাইনি। এজন্য আগের দামেই গোশত বিক্রি করছি।
তবে ব্যতিক্রম দেখা গেছে হাতিরপুল বাজারে। এখানে সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারণ করে দেওয়ামূল্যেই বিক্রি হচ্ছে খাসি এবং গরুর গোশত। এ বাজারের ব্যবসায়ী কালু বলেন, আমরা ক্রেতার স্বার্থেই আগামী ২৫-২৬ দিন কোনো লাভ করবো না। সিটি কর্পোরেশনের বেঁধে দেওয়া দামেই গোশত বিক্রি করবো।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ গোশত ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন গোশত ব্যবসায়ীদের সাথে বসে তাদের ব্যবসার সুখ-দুঃখ শোনেননি এবং গোশতের দাম নির্ধারণও করেনি। গাবতলী গরুটের ইজারা দারেরা গোশত ব্যবসায়ীদের উপর যে অবৈধ চাঁদাবাজি চলাচ্ছে তাও বন্ধের কোন উদ্যোগ নেয়নি ডিএনসিসি। তিনি বলেন, ১০০ টাকার ইজারা আমাদের থেকে ৪/৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে তারা। তাহলে আমরা কিভাবে কম দামে গোশত বিক্রি করতে পারি। যে কারণে গোশতের বাজারে কিছুটা অস্থিতিশিলতা বিরাজ করছে। সেটা সিটি কর্পোরেশন উদ্যোগ নিলে আগামী দু’এক দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ