Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্ত:ক্যাডারে চরম ক্ষোভ-অসন্তোষ বাড়ছে

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা : আন্দোলনের ডাক বিসিএস সমন্বয় কমিটির

| প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

পঞ্চায়েত হাবিব : সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ নিয়োগ হচ্ছে কোটার ভিত্তিতে। এ কোটা পদ্ধতির সংস্কার এবং প্রজ্ঞাপনের দাবিতে আন্দোলন চলছে। কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবি শেষ হতে না হতেই এবার সরকারি কর্মকর্তাদের বৈষম্য নিরসনে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার ডাকা দিয়েছে বিসিএস সমন্বয় কমিটি। প্রশাসনে সমন্বিত পদোন্নতি ব্যবস্থা না থাকায় এবং টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড বিলুপ্তির ফলে বিভিন্ন ক্যাডারের মধ্যে চরম ক্ষোভ, হতাশা, অসন্তোষ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। বিসিএস সমন্বয় কমিটির নেতারা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে অভিযোগ করে, প্রশাসনে এ বৈষম্য দূর না হলে প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান ইনকিলাবকে বলেন, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের অংশ হিসেবে পঞ্চম গ্রেড ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের সকল ক্যাডার ও সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সুপারনিউমারারি পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।
এদিকে বিসিএস সমন্বয় কমিটির মহাসচিব মো. ফিরোজ খান ইনকিলাবকে বলেন, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করা হচ্ছে। এ বৈষম্য নিরসনের পরিবর্তে দিন দিন তা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপ-সচিব ও তদূর্ধ্ব পদে অব্যাহতভাবে সুপারনিউমারারি পদোন্নতির ব্যবস্থা চালু করে তাদেরকে ব্যক্তিগত গাড়ি কেনায় সুদমুক্ত ঋণ প্রদান ও গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে আর্থিক সহায়তা দিয়ে বৈষম্য আরো বাড়ানো হয়েছে। বিসিএস সমন্বয় কমিটির এক সভায় এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সমন্বয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার কবীর আহমেদ ভূঁইয়া সভায় সভাপতিত্ব করেন। প্রাণিসম্পদ ক্যাডারের ভারপ্রাপ্ত মহাসচি ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের সার্বিক উন্নয়নে ২৬ ক্যাডার ও ফাংশনাল সার্ভিসের কর্মকর্তারা প্রত্যক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছে। যার সুফল হিসেবে নিম্নআয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হচ্ছে। এসব ক্যাডার ও সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকতাগণ বিশেষ কোনো সুবিধা পান না, অথচ উপ-সচিব পর্যায়ের পঞ্চম গ্রেডের কর্মকর্তাও গাড়ি কেনার জন্য ৩০ লাখ টাকা সুদমুক্ত ঋণ ও গাড়ি ব্যবস্থাপনার জন্য প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা পাচ্ছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজন ও অমর্যাদাকর। এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক জাতীয় সংসদে অনুমোদিত সার্ভিস (রিঅর্গানাইজেশন অ্যান্ড কন্ডিশন) অ্যাক্ট ১৯৭৫-এর সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের অংশ হিসেবে পঞ্চম গ্রেড ও তদূর্র্ধ্ব পর্যায়ের সকল ক্যাডার ও সার্ভিসের কর্মকর্তাদের গাড়ি ক্রয়ের জন্য সুদমুক্ত ঋণসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত উপ-সচিব ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ে মতো সকল ক্যাডারে সুপারনিউমারারি পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টির বিষয়ে ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেন। এ বিষয়ে কার্যকর উপায় বের করতে সে সময়ের প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামকে প্রধান করে একটি কমিটিও গঠন করে দেওয়া হয়। কমিটির জন্য তিনটি ক্ষেত্রে কাজ করার দায়িত্ব প্রদান করা হলেও সুপার নিউমারারি পদোন্নতির বিষয়ে কোনো কাজ হয়নি। অধিকন্তু ২০১৫ সালে বেতনস্কেল নিয়ে সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সে সময়ের মুখ্যসচিব, জনপ্রশাসন সচিব, অর্থসচিব ও শিক্ষাসচিব প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটির সাথে বৈঠক করে ১৪ সপ্তাহের মধ্যে সকল ক্যাডারের পদসোপান সুষমকরণের মাধ্যমে পদোন্নতির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া সৃষ্টির প্রতিশ্রæতি দেয়া হয়। কিন্তু সে বিষয়টিও আমলাতান্ত্রিক নিয়মের বেড়াজালে আটকে দেয়া হয়। গত ২ জুলাই ২০১৭ সচিবসভায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনে প্রধানমন্ত্রী পুনরায় নির্দেশনা দেয়া হলেও সে বিষয়ে কোন কোনই উদ্যোগ নেয়া হয়নি। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের মহাসচিব মো. খায়রুল আলম প্রিন্স বলেন, সকল ক্যাডার ও সার্ভিসের পদোন্নতির সোপান সুষমকরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত উপ-সচিব ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের পদোন্নতির মতো সকল ক্যাডার ও সার্ভিসে সুপারনিউমারারি পদোন্নতির প্রক্রিয়া চালুর জোর দিতে হবে।


বিএনপির ইফতারে দাওয়াত দেয়নি আওয়ামী লীগকে
স্টাফ রিপোর্টার : রাজনীতিবিদদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে এবার ক্ষমতাসীন দলকে আমন্ত্রণ জানায়নি বিএনপি। এখন পর্যন্ত এ দলটি তিনটি ইফতার অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে রাজনীতিবিদদের সম্মানে তাদের ইফতার অনুষ্ঠান হবে আজ (শনিবার)। এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে বিএনপি দাওয়াত দেয়নি।
রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ইফতারে বরাবরই সব দলের প্রধান, সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র রাজনীতিবিদদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এবার আওয়ামী লীগ ও ১৪-দলের শরিকদের ছাড়া অন্য প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, অন্যান্য বছর আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদককে ইফতার মাহফিলে আমন্ত্রণ জানাতেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। যদিও সা¤প্রতিক বছরগুলোতে কখনোই আওয়ামী লীগের কোনো নেতা দলের পক্ষ থেকে ইফতারে যোগ দেননি। প্রতিবারের মতো এতিম শিশুদের নিয়ে শুরু হয় বিএনপির ইফতার মাহফিলের আয়োজন। গতকাল প্রথম রোজায় রাজধানীর লেডিস ক্লাবে এই ইফতার অনুষ্ঠিত হয়। সব সময় এই ইফতারের আয়োজক হিসেবে উপস্থিত থেকে এতিমদের সাথে ইফতার করেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। কারাবন্দি থাকায় এবার তিনি থাকতে পারেননি।
এবার বিএনপির আয়োজনে ইফতার অনুষ্ঠানের জন্য পাঠানো আমন্ত্রপত্রগুলোতে আয়োজক হয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান। তিনিও লন্ডনে থাকায় ইফতার অনুষ্ঠানগুলোতে থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। মূলত তাঁরাই হবেন আয়োজক।
এবার বিএনপির পক্ষ থেকে তিনটি ইফতার অনুষ্ঠান চূড়ান্ত হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার এতিম শিশুদের সঙ্গে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। আজ শনিবার লেডিস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হবে রাজনীতিবিদদের সঙ্গে এবং আগামীকাল রোববার একটি পাঁচতারকা হোটেলে কূটনীতিকদের সঙ্গে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠান হবে। এর বাইরে আরও কয়েকটি ইফতার মাহফিল আয়োজনের কথা রয়েছে। সেগুলো এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
রাজনীতিবিদদের সম্মানে এবারের ইফতারে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের শরিকদের বাইরে আমন্ত্রণ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-রব) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহŸায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। এ ছাড়া সিপিবিসহ বাম রাজনৈতিক দল ও ধর্মভিত্তিক দলগুলোকেও ইফতারে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ###

 

 



 

Show all comments
  • রোমান ১৯ মে, ২০১৮, ৩:১৭ এএম says : 0
    চারদিকে খালি আন্দোলন আর আন্দোলন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ