Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বাজার সামলাতে ব্যস্ত সরকারের ১২ সংস্থা

| প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম


অর্থনৈতিক রিপোর্টার : রমজান উপলক্ষে নিত্যপণ্যের বাজার সামলাতে কাজ করছে সরকারের ১২ সংস্থা। এই ১২ সংস্থার প্রায় ৩০-৩৫টি টিম প্রতিদিন বাজার মনিটর করছে। অনিয়ম দেখলে ব্যবস্থাও নিচ্ছে। সরকারকে বাজার পরিস্থিতির ওপর প্রতিবেদনও দিচ্ছে এবং প্রতিবেদন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু তাতেও স্বস্তি নেই ক্রেতাদের। ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে ঠিকই মুনাফা লুটে নিচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। তারা বলছেন, এসব সংস্থার নির্দেশ অনেকেই মানছে না। কখন কোন সংস্থা কোন নির্দেশ দিচ্ছে, তা কে মানছে আর কে মানছে না, তা তদারকির কেউ নাই। এদিকে ব্যবসায়ীরা সরকারি পর্যবেক্ষকদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগও তুলেছেন।
বাজার সামলানোর কাজে ব্যস্ত সরকারের সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই), নিরাপদ খাদ্য অধিদফতর ও সিটি করপোরেশন। এর বাইরে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও দেশব্যাপী জেলা প্রশাসন প্রতিনিয়ত বাজার মনিটর করছে। একইসঙ্গে বাজারে আগে থেকেই কাজ করছে সরকারের চারটি গোয়েন্দা সংস্থা। এসব সংস্থার গঠিত পৃথক টিম প্রতিদিনই খোঁজ-খবর নিচ্ছে নিত্যপণ্যের মূল্য, সরবরাহ ও মজুত পরিস্থিতির। একই সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বাজারে মূল্য পরিস্থিতি ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি নিত্যপণ্য (মসুর ডাল, সয়াবিন তেল, চিনি, খেজুর ও ছোলা) বিক্রি করছে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রকৃতভাবে এসব সংস্থার কোনোটিরও বাজারের মূল্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কাজ নেই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং টিম প্রতিদিনই বাজারে যায়। একজন উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত এই মনিটরিং টিম নিত্যপণ্যের বাজার পরিস্থিতি দেখে প্রতিদিনই বাণিজ্যমন্ত্রী ও সচিবের কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনও দেয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর রমজানকেন্দ্রিক পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও জাল-জালিয়াতি হয় কিনা সেদিকে নজর রাখে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) বিভিন্ন প্যাকেটজাত পণ্যের গায়ে দাম লেখা আছে কিনা, বা এর বেশি দাম নিচ্ছে কিনা বা উৎপাদন ও ব্যবহারের মেয়াদ ঠিক মতো আছে কিনা বা কেউ কোনও পণ্যে ভেজাল দিচ্ছে কিনা তা দেখভাল করে। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন র‌্যাব, পুলিশ ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন নিরাপদ খাদ্য অধিদফতর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। এছাড়া সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর টিম বাজারের বিভিন্ন প্রকার নিত্যপণ্য আমদানি, সরবরাহ ও মজুত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে, যাতে কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারের এসব সংস্থা গঠিত সব টিম ঠিকমতো বাজার পর্যবেক্ষণ করে না। করলেও এর কোনও সুবিধা পান না ক্রেতারা। কারণ ব্যাখ্যা করে ক্রেতারা জানান, এসব সংস্থার নির্দেশ অনেকেই মানে না। কখন কোন সংস্থা কোন নির্দেশ দিচ্ছে, তা কে মানছে আর কে মানছে না, তা তদারকির কেউ নেই।
উদাহরণ দিয়ে শাহজাহানপুরের বাসিন্দা মোবারক হোসেন বলেন, গরুর মাংস রমজানে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হবে-এমন নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা সিটি করপোরেশন। কিন্তু শাজাহানপুরের খলিলের মাংসের দোকানে কখনোই সিটি করপোরেশন নির্ধারিত দামে গরুর মাংস বিক্রি হয় না। বাজারে যখন গরুর মাংসের দাম ৫০০ টাকা, তখন খলিলের দোকানে সাড়ে ৫০০ টাকা। আবার বাজারে যখন সাড়ে ৫০০ টাকা, খলিলের দোকানে তখন ৬শ টাকা। নানা অজুহাতে এখানকার মাংস বিক্রি হয় বাজারের তুলনায় ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেশি দরে। প্রকাশ্যে রাস্তার পাশেই এখানকার গরুর মাংস বিক্রির ক্ষেত্রে এতো অনিয়ম হলেও কিন্তু দেখার কেউ নাই।
সিটি করপোরেশন সিদ্ধান্ত দিয়েছিল, বাজারের প্রবেশমুখে নিত্যপণ্যের প্রতিদিনকার পণ্যমূল্যের তালিকা বোর্ডে টানাতে হবে। একইভাবে প্রতিটি দোকানের সামনেও এর একটি মূল্য তালিকা দৃশ্যমান স্থানে টানিয়ে রাখতে হবে। কয়েকদিন কিছু ব্যবসায়ী এ নির্দেশনা মানলেও এখন আর কোনও দোকানদার তা মানেন না।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ