পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ভোট ডাকাতি, ভোট সন্ত্রাস, জাল ভোট, কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে ব্যর্থ হওয়ার কারনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার পদত্যাগও চেয়েছে দলটি। গতকাল (বুধবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে এই অবস্থানের কথা জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, গতকাল খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এক নজীরবিহীন ভোট ডাকাতির দক্ষ যজ্ঞ জনগণ প্রত্যক্ষ করলো। মঙ্গলবার খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়ে ধানের শীষের ভোটার ও সমর্থকরা যেভাবে নিগৃহীত হয়েছেন তা কোন সুস্থ নির্বাচন পদ্ধতি হতে পারে না। ভোটের দিন নৌকার প্রার্থীর লোকজনদের ছিল সীমাহীন আধিপত্য ও বেপরোয়া চলাফেরা। গ্রæপে গ্রæপে বিভক্ত হয়ে তারা লাইন ধরে বিভিন্ন কেন্দ্রে জালভোট প্রদান করে। অনেক কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার’রা আওয়ামী ঝটিকা বাহিনীকে একচেটিয়া ‘ভোট কাষ্টিং’ এ সহায়তা করে। তারা কয়েক মিনিটের মধ্যে ব্যালট পেপারের বান্ডিলে সীল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে। কোথাও কোথাও অবশ্য আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের বল প্রয়োগ করে বের করে দেয় এবং কোথাও কোথাও মারধরও করে। পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটরা এসব দেখেও না দেখার ভান করে।
নির্বাচন কমিশনারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ভোট শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার লজ্জায় গণমাধ্যমের সামনে না আসলেও ইসি সচিব গণমাধ্যমকে বলেছেন-খুলনা চমৎকার ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। উনি ঠিকই বলেছেন উল্লিখিত ভোটের পরিবেশই হচ্ছে ‘শেখ হাসিনা মার্কা’ নির্বাচন-যে নির্বাচনে দ্বিতীয় শ্রেণীর পড়–য়া ছেলে একই সঙ্গে বাবার সাথে ভোট দিতে পারে, কেন্দ্রে যাবার আগেই ভোটারদের ভোট দেয়া হয়ে যায়, পুলিশের সহায়তায় ভোট কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতির উৎসব চলে, ভোটার’রা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও ব্যালট পেপার আগেই শেষ হয়ে যায়, কেন্দ্র দখল করে আধা ঘন্টায় ১২শ’ ভোট দেয়া হয়, তারা বলেছে টার্গেট ১২শ’ আধাঘন্টা তো লাগবেই, ভোট কেন্দ্রের বাইরে মুখোশধারীরা বাছাই করে করে কেন্দ্রে ঢুকিয়ে ভোট নেয়া হয়, কেন্দ্র দখল করে লাইন ধরে জালভোটের উৎসব চলে সেরকম নির্বাচনকে তো চমৎকার বলবেনই নির্বাচন কমিশন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশন বলেছে যে, ভোটারদের উপস্থিতি ছিল ৬৫ শতাংশের ওপরে। কিন্তু মূলত: সেখানে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৩০ শতাংশেরও কম। সন্ত্রাসীদের বাধা ও সন্ত্রাসী হামলার মুখে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটারদের অধিকাংশকেই কেন্দ্র থেকে ভোট দিতে না পেরে ফিরে যেতে হয়েছে। ভোট অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনের সদিচ্ছা নেই, সামর্থ নেই আর যোগ্যতাও নেই। ভোট ডাকাতি, ভোট সন্ত্রাস, জাল ভোট, ভোট কেন্দ্র দখল, অবৈধ অস্ত্রের আস্ফালন ছাড়া আওয়ামী লীগের বিজয়নিশানে হাওয়া লাগে না।
অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাঁর আত্মীয়স্বজন গত পরশু দিন দেখা করেছেন। তারা দেশনেত্রীর অসুস্থতা দেখে বেদনাহত হয়েছেন। দেশনেত্রীর শারীরিক অসুস্থতা ক্রমাগত অবনতিশীল। ইতোপূর্বে তাঁর হাঁটুতে অস্ত্রপচার থাকার কারনে কারাগারে বিনা চিকিৎসায় হাঁটুর ব্যথা এখন আরও তীব্র হয়েছে। বাম হাতের ব্যথায় তিনি ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন। সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিসের কারনে হাত-পা নড়াতে তাঁর ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। ইতোপূর্বে তাঁর চোখে অস্ত্রপচার হওয়ায় এখন চিকিৎসার অভাবে চোখ সবসময় লাল থাকছে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা করা হচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকারের নিয়োগকৃত চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তাঁকে দেয়া হয়নি অর্থপেডিক বেড, করা হয়নি নিয়মিত ফিজিওথেরাপীর ব্যবস্থা এবং উন্নত মানের এমআরআই দিয়ে পরীক্ষা করা। প্রায় দিনই তিনি প্রতিরাতে জ¦রে ভুগছেন। বারবার দাবি জানানোর পরেও ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে দেশনেত্রীর চিকিৎসা অগ্রাহ্য করা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে বন্দী করে তাঁর জীবনযাপন ও রাজনীতি থেকে দুরে সরানোর দীর্ঘদিনের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করছেন শেখ হাসিনা। সরকারের উদ্দেশ্য অশুভ, অমানবিক ও ব্যক্তির মানবাধিকারের প্রতি চরম অবজ্ঞা। মূলত: চিকিৎসা দিতে অগ্রাহ্যের মধ্য দিয়ে প্রমানিত হয় বেগম জিয়া সরকার প্রধানের হিংসার সম্মুখীন। চিকিৎসা নিয়ে সরকারের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উদাসীনতা ও উপেক্ষায় খালেদা জিয়ার কোনরূপ ক্ষতি হলে সরকার কোনভাবেই রেহাই পাবে না।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।#####
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।