Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

ঢাকা শহরের ইতিবাচক পরিবর্তন শুরু হয়েছে

প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৫২ পিএম, ১৬ মে, ২০১৮


স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানী ঢাকা শহর মোটেই বাসের অনুপযোগী শহর নয়। এই শহর হ্যাপিনেস ইনডেক্সের সূচকে বহু বহু উপরে রয়েছে। এই শহর যদি বসবাসের অযোগ্য হতো তাহলে প্রতি বছর ৬ শতাংশ মানুষ এই শহরে বৃদ্ধি পেতো না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। দায়িত্ব গ্রহণের তিন বছর পূর্ত উপলক্ষে গতকাল বুধবার দুপুরে নগর ভবনের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সাঈদ খোকন।
মেয়র হিসেবে নিজের তিন বছরের উন্নয়নমূলক কাজ ও আগামী বছরের বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে সাঈদ খোকন বলেন, অনেক সময় বিভিন্ন সংস্থা প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলে ঢাকা বসবাসের অযোগ্য, আমি তাদের বলি ঢাকা মোটেই বসবাসের অযোগ্য শহর না। বরং হ্যাপিনেস ইনডেক্সের তালিকায় অনেক শহরের চাইতে বহু উপরে এই ঢাকা শহর। তিনি বলেন, আমরা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড নয়, ঢাকাকে ঢাকা শহরের মতো করেই সাজাতে চাই। এই শহরকে নতুন প্রজন্মের নিকট বাসযোগ্য ও আধুনিক শহর উপহার দিতে চাই। সেটা এই মেয়াদেই করতে চাই। দায়িত্ব গ্রহণের সময় যে অবস্থা ছিলো তা থেকে অনেক উত্তরণ হয়েছে।
সাঈদ খোকন বলেন, এরইমধ্যে ঢাকা শহরের ইতিবাচক পরিবর্তন শুরু হয়েছে। যেখানে আগে ৮৫ ভাগ সড়ক বাতি জ্বলতো না সেখানে এখন ৯০ ভাগ রাস্তায় এলইডি বাতির আলোতে আলোকিত। দায়িত্ব গ্রহণের পর দেখেছি ৮০ ভাগ রাস্তাই চলাচলের অনুপযোগী ছিলো সেখানে এই তিন বছরে ৯০ ভাগ রাস্তা চলাচলের উপযোগী করে তুলেছি। আমাদের টার্গেট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শতভাগ না হলেও ৯৫ ভাগ সড়ক চলাচলের উপযোগী করে তোলা।
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাজধানীর পানিবদ্ধতা নিরসনের সমন্বয়হীনতার স্বীকার করে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, পানিবদ্ধতা ও খোঁড়াখুড়িসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ৫৬ সংস্থার প্রতিনিধি সভা আহবান করা হলে দুই তিন জন প্রতিনিধি আসেন। এছাড়া সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে এমন কাউকে পাঠানো হয়, যারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এরমধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানের কেউ সভাতে আসেন না। যদি এমন হয়, তাহলে সমস্যাগুলোর সমাধান হবে কিভাবে?
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা পেয়ে আমরা তিন বছরে নগরীর ভাঙাচোরা বেহাল রাস্তা, ফুটপাথ, নর্দমা সংস্কার ও মেরামত, এলইডি বাতি সংযোজন, পাবলিক টয়লেট, পার্ক, খেলার মাঠ, কবরস্থান, এসটিএস নির্মাণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, রাজস্ব উন্নয়ন, পানিবদ্ধতা ও যানজট নিরসনে পদক্ষেপ গ্রহণ, সর্বস্তরের নাগরিকদের সচেতন, সম্পৃক্ত ও অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ডিএসসিসি’র সার্বিক কর্মকান্ডে গতিশীলতা এনেছি। নগরবাসীর আস্থা অর্জন করেছি।
আমাদের নিরলস প্রচেষ্টা, আন্তরিকতা ও কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে কর্পোরেশন উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। সময়ের ব্যবধানে নানা ধরনের পরিবর্তন দৃশ্যমান হয়েছে।
রাস্তা, ফুটপাথ, নর্দমার উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে মেয়র বলেন, পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর নগরী গড়ে তুলতে তিন বছরে ৪৭৩ দশমিক ২৪ কিলোমিটার রাস্তা উন্নয়ন এবং ১১২ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ ও উন্নয়ন, ৪৬৯ দশকি ৯৬ কিলোমিটার নর্দমা নির্মাণ ও ১৯টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। অবৈধ বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন অপসারণ করা হয়েছে। ১০টি এসটিএস নির্মাণ ও ১৩টির কাজ চলমান রয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ১০০টি করে ৫ হাজার ৭০০টি ওয়েস্ট বিন স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে এসব বিনের অধিকাংশেই চুরি হয়ে গেছে।
যানজট নিরসনে মেগা প্রকল্পের আওতায় নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৩০টি বাস স্টপেজ কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। ৪টি ইন্টারসেকশন উন্নয়নসহ ৭১টি স্বচ্ছ পুলিশ বক্স নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
পানিবদ্ধতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এক সময় শান্তিনগরে হাঁটু সমান পানিবদ্ধতা হতো। বর্তমানে সেখানে কোনও পানিবদ্ধতা হচ্ছে না। শহরের অন্যান্য এলাকাতেও যেন পানি জমে না থাকে সেজন্য ডিএসসিসি’র পক্ষ থেকে এ বছর প্রায় ৪০০ কিলোমিটার নর্দমা পরিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া নাজিমউদ্দিন রোডে পানিবদ্ধতা নিরসনে কাজ শেষের পথে রয়েছে। পাশাপাশি ৮টি ইউনিয়নের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। নগরীর ৩১টি পার্ক ও খেলার মাঠ উন্নয়ন করা শুরু করা হয়েছে। নিরাপদে সড়ক পারাপারের জন্য ৯টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। নতুন করে আরও ৭টি নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। মান্ডা খাল অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে।
মেয়র বলেন, উন্নয়ন কাজে গতি আনার জন্য অত্যাধুনিক কোল্ড মিলিং মেশিন এবং জেট অ্যান্ড সাকার মেশিন সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া ৬টি কমিউনিটি সেন্টার ২১টি ব্যায়ামাগার ও ১২টি সঙ্গীত শিক্ষা কেন্দ্রের আধুনিকায়নের কাজ গ্রহণ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ১৫০০ বর্গফুট আয়তন পর্যন্ত ফ্ল্যাটের হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ করা হয়েছে। সড়কের সৌন্দর্য বর্ধনে ৯টি ডিজিটালাইজড এলইডি বিলবোর্ড ও ৯৫০টি বক্স এলইডি বোর্ড বসানো হয়েছে।
তিনি জানান, ৪৫নং ওয়ার্ডে অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত ৬তলা বিশিষ্ট মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন সেন্টার নির্মাণসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ৬টি কমিউনিটি সেন্টারের আধুনিকায়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। আজিমপুর কবরস্থানে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ জামে মসজিদ নামে আধুনিক মসজিদ ও অফিস নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া কর্পোরেশনের আওতাধীন ২১টি ব্যায়ামাগার ও ১২টি সঙ্গীত শিক্ষা কেন্দ্রের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও আধুনিক সরঞ্জামাদি ক্রয়ের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
মেয়র বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর কর্পোরেশন এলাকায় ১৩টি সরকারি ও ১৯টি বেসরকারি কাঁচাবাজারকে ফরমালিনমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ২৮টি বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে ২৫টি জনতার মুখোমুখি জনপ্রতিনিধি শীর্ষক সভা করে এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি। ###



 

Show all comments
  • সফিক আহমেদ ১৭ মে, ২০১৮, ৫:৪৮ এএম says : 0
    আরও পরিবর্তন দরকার
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ