Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকার ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করছে -মঞ্জু

| প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম


খুলনা ব্যুরো : খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করেছেন, সরকার কেসিসিতে ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ করছে। পুলিশের নেতৃত্বে রাতেই ব্যালট পেপারে সীল মেরে বাক্স ভরার ষড়যন্ত্র চলছে। একই সঙ্গে পুলিশ বিএনপির ভোট ব্যাংক এলাকায় বøক রেইড’র নামে হিং¯্র রূপে হানা দেওয়ারও পরিকল্পনা করেছে। সরকারের মন্ত্রী পরিষদ এবং এমপি-মন্ত্রীসহ সিনিয়র নেতারাও এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তার মতো (মঞ্জু) একজন রাজপথের কর্মীকে খোদ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেই লড়াই করতে হচ্ছে। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে নজরুল ইসলাম মঞ্জু এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, সরকার এবং নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারে কি-না- এটি দেখতেই বিএনপি কেসিসি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। একই সঙ্গে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তি এবং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনের অংশ হিসেবেই বিএনপি মাঠে রয়েছে। কিন্তু বিগত সাড়ে ৯ বছরে প্রমাণিত হয়েছে বর্তমান সরকারের অধীনে কোন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। যার সর্বশেষ আঘাত সরকার এবং পুলিশের দানবীয় ও ড্রাকুলার হিং¯্র চেহারায় প্রতিফলিত হয়েছে।
তিনি পুলিশের হিং¯্র ভূমিকায় ধিক্কার জানিয়ে বলেন, পুলিশ এ পর্যন্ত বিএনপির ১৩৭জন এবং শরীকদলের ১০জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তবে, দলের সদস্য বাদে সমর্থকসহ এ সংখ্যা আড়াই শতাধিক। পুলিশ গ্রেফতার বাণিজ্য করেছে। দলের একজন অসুস্থ্য নেতাকে হাতকড়া পরিয়ে আবার ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে। এমনকি তার (মঞ্জুর) পরিবারও পুলিশের হিং¯্রতা থেকে রেহাই পায়নি। এসআই অচিন্ত ও বিপ্লবের নেতৃত্বে তিন গাড়ী পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী, ভাই-বোন ও স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও ভয়ভীতি দেখিয়েছে। তার ভাই কারণ জানতে চাইলে হুংকার দিয়ে পুলিশ বলেছে, ‘কথা বললেই কল্লা ছিড়ে ফেলবো’। তিনি এ ধরণের আচরণের তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করে প্রশ্ন রাখেন- আওয়ামী লীগ একটি সিটি নির্বাচন করায়ত্ব করতে কোথায় যাচ্ছে? যে কোন মূল্যে সরকারকে বিজয়ী হতেই হবে? আওয়ামী লীগের হিং¯্র চেহারা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতেই বিএনপি নির্বাচনের মাঠে থাকবে বলেও দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ শহরে বিপুল অংকের কালো টাকা ছড়িয়েছে। বিশেষ করে বস্তি ও চর এলাকায় তারা ভোট কেনার চেষ্টা করছে। এভাবে একটি নির্বাচনকে পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করছে তারা। রোববার তাকে খালিশপুরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারীরা মিছিল করেছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা সমন্বয় কমিটির আহবায়ক ও প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট অ্যাডভাকেট এস এম শফিকুল আলম মনা, পরিচালনা কমিটির আহবায়ক সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, সদস্য সচিব আমীর এজাজ খান, বিএনপির নির্বাহি কমিটির সদস্য শেখ মুজিবর রহমান, সাবেক এমপি কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, সাবেক এমপি সৈয়দা নার্গিস আলী এহতেশামুল হক শাওন সহ ২০ দলীয় জোট, বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


আপিল বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করে
বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার নয় হাইকোর্ট
স্টাফ রিপোর্টার : আপিল বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি নেতা-কর্মী, সমর্থক ও প্রচারণাকারীদের গণেেগ্রফতার ও হয়রানি না করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশের মহাপরিদর্শক, খুলনার পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারকে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার একটি রিটের প্রঅথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। গ্রেফতার সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায় অমান্য করে বিএনপির নেতা-কর্মী, সমর্থক, ভোটের প্রচারণাকারীদের খুলনা মহানগর পুলিশ কর্তৃক গণগ্রেফতার, হয়রানি করা কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববর্হিভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
নির্বাচন কমিশন, স্বরাষ্ট্র সচিব, নির্বাচন কমিশন, পুলিশের মহাপরিদর্শক, খুলনার পুলিশ কমিশনার ও পুলিশের সুপারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী নওশাদ জমির, কায়সার কামাল ও মীর হেলাল। অরপদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
পরে মোতাহার হোসেন সাজু সাংবাদিকদের বলেন, জনস্বার্থে বিএনপির এক ভাইস চেয়ারম্যানের করা এই রিটটি মূলত দলীয় স্বার্থে। কারণ তারা সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে এমন একটি তথ্যও দেখাতে পারেননি। উভয়পক্ষে শুনানি শেষে আদালত গ্রেফতার সংক্রান্ত আপিল বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করে খুলনায় গ্রেফতার বা হয়রানি না করতে পুলিশের মহাপরিদর্শক, খুলনার পুলিশ কমিশনার ও পুলিশের সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে রুলও জারি করেছে।
মওদুদ আহমদ বলেন, খুলনায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের যেভাবে গ্রেফতর করা হয়েছে, সেটা আইনসম্মত নয় এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় পরিপন্থী। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে অমান্য করে এটা করা হচ্ছে। তারা আইন মানছেন না। আইন অমান্য এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা রিট ফাইল করি। শুনানি নিয়ে আদালত বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী, সমর্থককে গ্রেফতর বা হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন। মওদুদ আরো বলেন, সাদা পোশাকধারীরা যেভাবে গ্রেফতর করছে এটা আমাদের দেশের আইনের পরিপন্থী।
এর আগে রোববার খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের নেতা-কর্মীদের নির্বিচারে গ্রেফতারের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে রিট করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান। উল্লেখ্য, আজ ১৫ মে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ